Advertisement
E-Paper

‘বউকে মেরে পুঁতেছি’, ফোনে স্বীকার স্বামীর

বীরভূমের নানুরের পোশলার বাসিন্দা, পেশায় রাজমিস্ত্রি হায়দার স্ত্রী ও ছোট্ট দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে কয়েক বছর ধরে ভাড়া থাকে বেনাচিতির উত্তরপল্লিতে তরুণবাবুর বাড়িতে। তিনি দুর্গাপুরেই অন্য বাড়িতে থাকেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ০৩:২৭
রেজিনা বেগম। নিজস্ব চিত্র

রেজিনা বেগম। নিজস্ব চিত্র

ফোনে ভাড়াটে যুবকের মুখে ‘কিচ্ছু ভাল লাগছে না’ শুনে কারণ জানতে চেয়েছিলেন বাড়িওয়ালা। উত্তর পান, ‘বউকে মেরে আপনার বাড়ির উঠোনে পুঁতে রেখেছি তো। তাই...’

ভাড়াটে হায়দর শেখের কথা শুনে আঁতকে উঠেছিলেন বাড়িওয়ালা তরুণ রায়। খুনের কথা বলেই থামেনি বছর ছত্রিশের হায়দর। বলেছিল, ‘এ বার যা করা দরকার, করুন’। হায়দরের ফোন রেখেই পুলিশকে ফোন করেন তরুণবাবু। শুক্রবার পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের বেনাচিতিতে তাঁর ভাড়া বাড়ির উঠোনে মার্বেলে ঢাকা একটি অংশ খুঁড়ে হায়দরের স্ত্রী রেজিনা বেগম ওরফে রিনার (৩০) দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অনুমান, অশান্তির জেরে বধূটিকে খুন করা হয়েছে। হায়দরকে গ্রেফতার করে জেরা করছে পুলিশ।

বীরভূমের নানুরের পোশলার বাসিন্দা, পেশায় রাজমিস্ত্রি হায়দার স্ত্রী ও ছোট্ট দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে কয়েক বছর ধরে ভাড়া থাকে বেনাচিতির উত্তরপল্লিতে তরুণবাবুর বাড়িতে। তিনি দুর্গাপুরেই অন্য বাড়িতে থাকেন। তরুণবাবুর দাবি, বৃহস্পতিবার হায়দর জানায়, সে কলকাতায় রয়েছে। কথায় কথায় ‘কবুল’ করে রিনাকে সে খুন করেছে। পরে বিভিন্ন নম্বর থেকে ফোন করে ভাড়াবাড়িতে পুলিশ এসেছে কি না, তা-ও জানতে চায়। পুলিশের কথামতো হায়দরকে দুর্গাপুরে ফিরতে বলেন তরুণবাবু। শুক্রবার সিটি সেন্টার বাসস্ট্যান্ডে নামতেই গ্রেফতার হয় হায়দর। বেনাচিতির বাড়ির উঠোনে মার্বেল সরিয়ে ফুট দুয়েক খুঁড়তেই রেজিনার দেহ, রক্তমাখা বোরখা, লুঙ্গি ও একটি শাবল মেলে। দেহের মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।

আরও পড়ুন:হায়দরই খুনি! ঘোর কাটছে না উত্তরপল্লির

সম্প্রতি ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি নানুরের নিমড়া গ্রামে যান রেজিনা। গত রবিবার তিনি একাই ফেরেন দুর্গাপুরে। পুলিশের দাবি, গত মঙ্গলবার কীর্ণাহার ফাঁড়িতে স্ত্রীর নিখোঁজ ডায়েরি করাতে গেলে ফাঁড়ি থেকে হায়দরকে দুর্গাপুরে ভাল করে খোঁজ নিয়ে ডায়েরি করার পরামর্শ দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে বুধবার রেজিনার খোঁজে তাঁর বাপের বাড়ির লোকজন বেনাচিতিতে এলে তাঁদের হায়দর বলে, ‘মঙ্গলবার ওকে দুর্গাপুর থেকে কীর্ণাহারের বাসে তুলে দিই। আর খোঁজ পাচ্ছি না’। সে দিনই রেজিনার বাড়ির লোকেরা দুর্গাপুরের প্রান্তিকা ফাঁড়িতে নিখোঁজ-ডায়েরি করেন। সে দিনই দুর্গাপুর ছাড়ে হায়দর।

পুলিশের দাবি, হায়দর বলেছে, স্ত্রী-র বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরে এই ঘটনা। নিজে রাজমিস্ত্রি বলে খুনের পরে স্ত্রী-র দেহ মার্বেলের চাঁইয়ের নিচে লুকোতেও অসুবিধা হয়নি তাঁর। পরে মানসিক চাপ সহ্য করতে না পেরে তরুণবাবুকে সব বলে। তবে রেজিনার ভাই নুর মহম্মদ শেখের অভিযোগ, ‘‘হায়দরের একাধিক অবৈধ সম্পর্কের কথা জেনে ফেলাতেই হয়তো বোনকে খুন করা হয়েছে।’’

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘আমরা সব সম্ভাবনাই খতিয়ে দেখছি।’’

Murder Husband Wife Buried
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy