Advertisement
E-Paper

সাতসকালে উচ্ছেদ, অশান্ত বার্নপুর

সাতসকালে ইস্কোর জমিতে অবৈধ নির্মাণ উচ্ছেদ অভিযান করা নিয়ে ধুন্ধুমার বাধল বার্নপুরে। উচ্ছেদের প্রতিবাদে টায়ার পুড়িয়ে রাস্তা অবরোধ করেন অবৈধ নির্মাণকারী ও অস্থায়ী দোকানের মালিকেরা। শুক্রবার এই গোলমালের জেরে বার্নপুরের বিভিন্ন রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ব্যহত হয় যান চলাচল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৬ ০১:৫১
রাস্তায় আগুন জ্বেলে চলছে অবরোধ। শুক্রবার ত্রিবেণী মোড়ে তোলা নিজস্ব চিত্র।

রাস্তায় আগুন জ্বেলে চলছে অবরোধ। শুক্রবার ত্রিবেণী মোড়ে তোলা নিজস্ব চিত্র।

সাতসকালে ইস্কোর জমিতে অবৈধ নির্মাণ উচ্ছেদ অভিযান করা নিয়ে ধুন্ধুমার বাধল বার্নপুরে। উচ্ছেদের প্রতিবাদে টায়ার পুড়িয়ে রাস্তা অবরোধ করেন অবৈধ নির্মাণকারী ও অস্থায়ী দোকানের মালিকেরা। শুক্রবার এই গোলমালের জেরে বার্নপুরের বিভিন্ন রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ব্যহত হয় যান চলাচল। ইস্কোর তরফে আগে থেকে অভিযানের কথা জানানো হয়নি বলে অভিযোগ করেছে পুলিশ ও পুর-প্রশাসন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ছ’টা নাগাদ ড্রোজার মেশিন ও শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ময়দান, হিরাপুর থানা, বার্নপুর বাজার-সহ শহরের বিভিন্ন এলাকায় উচ্ছেদ অভিযানে নামেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ। ঘণ্টা খানেকের অভিযানে শতাধিক অবৈধ নির্মাণ ও দোকান ভেঙে ফেলা হয়। সে সময় বেশির ভাগ দোকানের তালা বন্ধ ছিল। অভিযানের খবর চাউর হতেই জড়ো হতে শুরু করেন দোকানি ও অবৈধ নির্মাণকারীরা। যদিও তাতে উচ্ছেদ অভিযানে বাধা পড়েনি বলে দাবি কারখানা কর্তৃপক্ষের।

কিন্তু অভিযান শেষে কারখানা কর্তৃপক্ষ এলাকা ছাড়তেই শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে স্টেশন রোড, বাড়ি ময়দান রোড, আপার রোড-সহ শহরের বিভিন্ন রাস্তায়। তৃণমূলের পতাকা নিয়ে বার্নপুরের মূলকেন্দ্র ত্রিবেণী মোড়ের চৌমাথায় গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে রাস্তা অবরোধ করতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীদের একাংশকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বজিৎ মাহাতার নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। কিন্তু তারপরেও অবরোধ ওঠেনি বলে বাসিন্দারা জানান।

অবরোধের জেরে বিভিন্ন রাস্তায় দীর্ঘক্ষণ বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। দাঁড়িয়ে পড়ে যাত্রীবাহী বাস, অটো-সহ বিভিন্ন গাড়ি। ব্যাপক ভোগান্তির মুখে পড়েন নিত্যযাত্রীরা। অবরোধের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন আসানসোলের মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি কারখানা কর্তৃপক্ষ, মহকুমা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যার সমাধানসূত্র বের করার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। বেলা ১০টা নাগাদ ফের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, অভিযানের ফলে দোকানের বহু জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছে। বাড়ি ময়দান এলাকায় দোকান ছিল কান্তা প্রসাদের। তিনি বলেন, ‘‘সব গিয়েছে। দোকানেই ঘুমোচ্ছিলাম। হাঁকডাক শুনে বাইরে বেরিয়ে দেখি ড্রোজার চলছে। কিছু বলার আগেই সব গুঁড়িয়ে দিল।’’ বিক্ষোভকারীদের দাবি, আগেভাগে কিছু না জানিয়েই এই উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়েছে। মেয়র জিতেন্দ্রবাবুরও দাবি, ‘‘ইস্কোর তরফে আমাদের আগাম কিছু জানানো হয়নি। ইস্কো কর্তৃপক্ষ ও দোকানদারদের নিয়ে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক করে সমাধানের রাস্তা খোঁজার জন্য মহকুমাশাসককে অনুরোধ করেছি। ততদিন পর্যন্ত অভিযান বন্ধ রাখার জন্য ইস্কো কর্তৃপক্ষকে বলেছি।’’ এডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বজিৎবাবুর বক্তব্য, ‘‘অভিযানের বিষয়ে আগাম কিছু জানাননি ইস্কো কর্তৃপক্ষ। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।’’

যদিও বিক্ষোভকারী ও প্রশাসনের দাবি মানতে নারাজ ইস্কো কর্তৃপক্ষ। ইস্কোর টাউন ও এস্টেট বিভাগের জিএম কৌশল কুমার ঝা বলেন, ‘‘ঠিক নিয়মেই অভিযান হয়েছে। অভিযান জারি থাকবে।’’ কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি ইস্কোর জমিতে গজিয়ে ওঠা অবৈধ নির্মাণগুলি উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরই গত এক সপ্তাহ ধরে দখলদারদের এলাকা থেকে উঠে যাওয়ার জন্য প্রচার চালানো হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, অনুরোধে কাজ না হলে শুক্রবার থেকে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে, এ কথাও প্রচার করা হয়েছিল। পূর্ব ঘোষণামতোই এ দিনের অভিযান চালানো হয়েছে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি।

মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ শনিবার ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে সমাধানসূত্র বের করার চেষ্টা করা হবে। আসানসোলের প্রাক্তন সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীরও দাবি, ‘‘আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যাতে কোনও পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত না হন।’’

Burnpur eviction
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy