ভারী যানবাহনের চাপ বাড়ছে। বেশ কিছু জায়গায় রাস্তার হাল এতটাই খারাপ, যে দুর্ঘটনার আশঙ্কাও থাকছে প্রতিনিয়ত। সুরাহা খুঁজতে সপ্তগ্রাম-ত্রিবেণী-কালনা-কাটোয়া (এসটিকেকে) রোডের দু’পাশ সম্প্রসারণে উদ্যোগী হয়েছে পূর্ত দফতর। কিন্তু কাঁটা বেআইনি দখল। মহকুমা প্রশাসনের দাবি, জবরদখলের সমস্যা কাটিয়ে কী ভাবে দ্রুত সম্প্রসারণের কাজ শুরু করা যায়, তা নিয়ে ৩১ জুলাই একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠক রয়েছে।
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনার পূর্ব সাতগাছিয়া থেকে পূর্বস্থলী ২ ব্লকের ছাতনি পর্যন্ত প্রায় ৫০ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রসারণ হবে দুটি পর্যায়ে। এর জন্য খরচ হবে প্রায় ১৭৭ কোটি টাকা। পরে ছাতনি থেকে কাটোয়া পর্যন্ত সম্প্রসারণের কাজ হবে তৃতীয় পর্যায়ে। পূর্ত দফতরের আধিকারিকদের দাবি, রাস্তা পরিদর্শন হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে রাস্তাটি সাত মিটার চওড়া। পরিকল্পনা অনুযায়ী দু’দিকে দেড় মিটার করে সম্প্রসারণ করা হবে। সে ক্ষেত্রে রাস্তার চওড়া হবে ১০ মিটার। বর্ষার শেষ হলে জোরকদমে রাস্তা সম্প্রসারণের কাজ শুরু হয়ে যাবে, তাঁদের দাবি। তবে তার আগে রাস্তার দু’পাশ দখল করে থাকা দোকানপাট সরানো জরুরি।
প্রশাসনেরও দাবি, বছরের পর বছর ধরে এসটিকেকে রোডের দু’পাশে অস্থায়ী দোকান থেকে বহু বেআইনি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। গা ঘেঁষে রয়েছে ইট, বালি, পাথর, চায়ের দোকান। কেউ কেউ তৈরি করে ফেলেছেন বসত বাড়িও। রয়েছে বিদ্যুৎ, টেলিফোন দফতরের অজস্র খুঁটি। কোথাও আবার সমস্যা নালা এবং কালভার্ট। পূর্ত দফতরের দাবি, রাস্তা চওড়া করতে গেলে দু’পাশে দেড় মিটার করে জমিই শুধু নয়, তার পাশে ফুটপাত গড়া হবে। তাতে আরও কিছু জমি লাগবে। ফলে প্রশাসন উদ্যওগী হয়ে দখল না তুললে কাজ হওয়া মুশকিল।
এলাকার বাসিন্দাদেরও দাবি, দিনরাত এই রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলে। দুর্ঘটনাও লেগেই থাকে। রাস্তার দু’পাশ দখল হয়ে ঘিঞ্জি হয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা বাড়ে বলেও দাবি তাঁদের। অনেক সময় রাস্তার উপর গাড়ি দাঁড় করানো থাকে। তাতেও রাস্তা সংকীর্ণ হয়ে যায়। কালনার বৈদ্যপুর এলাকার এক বাসিন্দা রবিন রায়ের দাবি, ‘‘দুর্ঘটনা এড়াতে প্রশাসনের যেমন রাস্তা চওড়া করার প্রয়োজন রয়েছে। তেমনি যারা বহু বছর ধরে রাস্তার পাশে ব্যবসা করছেন তাঁদের জন্য বিকল্প কিছু ভাবারও প্রয়োজন রয়েছে প্রশাসনের।’’
মহকুমাশাসক নীতিশ ঢালি বলেন, ‘‘এসটিকেকে রোড সম্প্রসারণের কাজ করবে পূর্ত দফতরের হাইওয়ে বিভাগ। কী ভাবে রাস্তার দু’পাশ দখলমুক্ত করা যাবে তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে বৈঠকে। চেষ্টা থাকবে বর্ষা মেটার পরেই জোরকদমে কাজ শুরু করার।’’