টোটো চালকের কথায় ভুলে বয়স্ক ভাতার ফর্ম পূরণ করেছিলেন বৃদ্ধা। একটি স্বেচ্ছেসেবী সংস্থার দফতরে গিয়ে মেডিক্যাল পরীক্ষাও করিয়েছিলেন। বিশ্বাস এতটাই ছিল যে গা থেকে গয়নাগাঁটিও খুলে দিয়েছিলেন ওই টোটো চালককে। ফল মিলল হাতেনাতে।
মুহূর্তে গয়নার ব্যাগ হাতিয়ে চম্পট দেয় ওই টোটো চালক। তবে কীর্তি লুকনো থাকেনি। বর্ধমান শহরের মোড়ে মোড়ে থাকা ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ওই প্রতারককে চিহ্ণিত করে পুলিশ। শুক্রবার বীরভূমের ইলামবাজার থানার ভগতবাজারের ওই আসরফ হোসেনকে র্ধমান আদালতে তোলা হলে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজত হয়।
পুলিশ জানায়, গত ৭ জানুয়ারি বেলা ১১টা নাগাদ বোরহাটের বাসিন্দা বাহাত্তর বছরের ঊর্মিলা খান্ডেলবাল মিঠাপুকুর রোড ধরে হাঁটছিলেন। সেই সময় আসরফ একটি টোটো নিয়ে তাঁর সামনে দাঁড়ায়। তিনি টোটোয় উঠে পড়েন। কথার ভাঁজে আসরাফ বৃদ্ধাকে জানান, কেন্দ্রীয় সরকার বৃদ্ধদের জন্য ২৬ হাজার টাকা ভাতা ঘোষণা করেছে। ওই টাকা পেতে হলে দু’এক দিনের মধ্যেই ফর্ম পূরণ করে জমা দিতে হবে। টোটো চালকের কথা প্রথমে বিশ্বাস হয়নি ঊর্মলাদেবীর। পরে কথার ফাঁদে পা-দিয়ে ফেলেন তিনি। বিশ্বাস করে তিনি টোটো চালকের সঙ্গে প্রথমে জেলখানার কাছে যান। সেখানে টোটো চালক একটি দোকান থেকে ফর্ম নিয়ে এসে ঊর্মিলাদেবীর হাতে দেন। ফর্মটি পূরণও করেন তিনি।
উর্মিলাদেবী জানান, মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য গুডস শেড রোডে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় রিকশা নিয়ে যেতে বলে আসরফ। সেখানে একটি বাজারের মধ্যে অফিস আছে বলে জানায়। বাজারের মধ্যে ওই দফতরে ঢোকার আগে গায়ের গয়না খুলে রাখার কথাও বলে। সেইমতো বৃদ্ধা একটি ব্যাগে গয়না খুলে রাখেন। ব্যাগটি আসরফের হাতেই দেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, ঊর্মিলাদেবী বিশ্বাস করে ওই গয়না আসরফের হাতে দেন। গয়না পেয়েই সে ‘ভাল জায়গায় রেখে আসছি’ বলে চম্পট দেয়। কয়েক ঘন্টা ঠায় অপেক্ষা করার পরেও ওই যুবক আসছে না দেখে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করেন উর্মিলাদেবী।
পুলিশ জানিয়েছে, এরপরেই শহরের বিভিন্ন মোড়ে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকে সন্দেহভাজনদের ছবি বের করে ওই বৃদ্ধাকে দেখানো হয়। তিনিই আসরফকে চিহ্নিত করে দেন। ওই ছবি বিভিন্ন থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেই সূত্র ধরেই ইলামবাজার থানা ধৃতের খোঁজ দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy