Advertisement
E-Paper

প্রভাত দোলার পাশেই, বিশু না থাকায় জল্পনা

প্রকাশ্যেই একাধিকবার সংগঠনেরই একাংশের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বিশ্বনাথবাবু। প্রভাতবাবু অবশ্য কোনও দ্বন্দ্বের কথা মানেন না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২১ ০৬:১৬
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

গত ৪ জুন দুর্গাপুরে বেসরকারি কারখানার কর্মীদের প্রতিষেধক প্রদানের কর্মসূচি। হাজির আইএনটিটিইউসি-র সর্বভারতীয় সভানেত্রী তথা রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেন। পাশেই ছিলেন আইএনটিটিইউসি-র প্রাক্তন জেলা সভাপতি প্রভাত চট্টোপাধ্যায়। দেখা যায়নি বর্তমান জেলা সভাপতি বিশ্বনাথ (বিশু) পাড়িয়ালকে। রবিবার ডিএসপি-র আইএনটিটিইউসি ঠিকা শ্রমিক সংগঠন আয়োজিত আমড়াইয়ে রক্তদান শিবিরেও একই ছবি দেখা গেল। এই দু’টি ছবিকে পাশাপাশি রেখে, আইএনটিটিইউসি-র নেতা-কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, অন্তর্দ্বন্দ্ব মেটেনি!

শিল্পাঞ্চলের কারখানাগুলিতে স্থানীয়দের নিয়োগের দাবি ও ‘কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠাকে’ কেন্দ্র করে বিশ্বনাথবাবু এবং প্রভাতবাবুর অনুগামীদের মধ্যে বিবাদ দুর্গাপুরে ‘চর্চিত’। সংঘর্ষে জখম হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। প্রকাশ্যেই একাধিকবার সংগঠনেরই একাংশের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন বিশ্বনাথবাবু। প্রভাতবাবু অবশ্য কোনও দ্বন্দ্বের কথা মানেন না। বিধানসভা নির্বাচনের প্রচারেও দু’পক্ষের দ্বন্দ্ব সামনে এসেছিল বলে দাবি দলেরই একাংশের। ওই অংশের দাবি, দুর্গাপুরের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের গোপালমাঠে দুর্গাপুর পশ্চিমের তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বনাথবাবু একাধিকবার প্রচারে যান। কিন্তু ওই এলাকার বাসিন্দা প্রভাতবাবুকে একবারও সেখানে দেখা যায়নি। প্রভাতবাবু যদিও দাবি করেছিলেন, তাঁকে প্রচারের কথা জানানো হয়নি। এ দিকে, গোপালমাঠে দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে দেওয়াল লিখনে অসহযোগিতার অভিযোগও এনেছিলেন বিশ্বনাথবাবু। দলীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। আবার গোপালমাঠে প্রভাতবাবু তৃণমূল প্রার্থীর সমর্থনে বিশাল মিছিল বার করলেও সেখানে যোগ দেননি প্রার্থী বিশ্বনাথবাবু। নির্বাচনে হেরে গিয়েছেন বিশ্বনাথবাবু। কিন্তু তৃণমূলের একাংশের মতে, তার পরেও দু’পক্ষের মধ্যে বিবাদ মেটেনি বলেই মনে হচ্ছে।

কেন এমন ‘মনে হওয়া’? নেতা-কর্মীদের একাংশের মতে, প্রভাতবাবু বরাবরই দোলা সেনের অনুগামী হিসেবেই সংগঠনের অন্দরে পরিচিত। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশাসনিক সভায় প্রকাশ্যে প্রভাতবাবুকে শ্রমিক সংগঠনে ‘নাক না গলানোর’ নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে তার পরেও দুর্গাপুরে দোলা সেনের সব কর্মসূচিতেই প্রভাতবাবুকে দেখা গিয়েছে। একই ভাবে বিধানসভা নির্বাচনের পরে দোলা সেনের দু’টি কর্মসূচিতেও প্রভাতবাবু ছিলেন তাঁর পাশেই। এর জেরে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বই প্রকাশ্যে আসছে বলে অভিমত দলের একাংশের। প্রভাতবাবু অবশ্য তা মানতে চাননি। তাঁর কথায়, ‘‘আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি তৃণমূলের একনিষ্ঠ সৈনিক। বরাবর দলীয় শৃঙ্খলা মেনে মানুষের জন্য কাজ করি।’’ বিশ্বনাথবাবুর মোবাইল বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা যায়নি। রাত পর্যন্ত উত্তর মেলেনি
হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজেরও।

বর্তমান জেলা সভাপতি থাকলেন না কি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে? দোলা সেন অবশ্য বলেন, ‘‘আমার রাজনৈতিক শিক্ষা হল, সংগঠনে কোনও সমস্যা থাকলে তা সংগঠনের ভিতরে মেটানো। আমাদের বিশেষ সমস্যা নেই। টুকটাক যা আছে দলনেত্রীর নির্দেশে তা ভিতরেই মিটে যায়। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে আমি কিছু বলি না।’’ কিন্তু, দল ও শ্রমিক সংগঠনের তরফে ‘এক শিল্প এক ইউনিয়ন’-এর কথা বলা হয়েছে বারবার। অথচ, দুর্গাপুরের বহু কারখানাতেই এখনও একাধিক ‘ইউনিয়ন’ রয়েছে বলে অভিযোগ। তার জেরেই মতানৈক্য বাড়ছে বলেও অভিযোগ। অভিযোগ উড়িয়ে দোলা সেন বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে একমত নই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ‘এক শিল্পে এক ট্রেডে এক ইউনিয়ন’-এর বিষয়টি ইতিমধ্যেই ৯৯ শতাংশ কার্যকরী করা হয়ে গিয়েছে।’’

TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy