E-Paper

খুনের পিছনে লুকিয়ে কি বালি-কয়লার দ্বন্দ্বই

ডিও-র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বই নয়, বালিঘাট নিয়ে চাপান-উতোরের বিষয়ও উঠে আসছে চর্চায়। বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন সূত্রের দাবি, বেনামে বিভিন্ন বালিঘাটের বরাত পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন রাজু।

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:৩০
মৃত রাজু ঝা।

মৃত রাজু ঝা। — ফাইল চিত্র।

কয়লা ক্ষেত্রে কার্যত একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করার চেষ্টা করছিল তাঁর দলবল। পশ্চিম বর্ধমান খনি অঞ্চলের কারবারিদের নানা সূত্রের এমনই দাবি রাজু ঝায়ের বিষয়ে। সে নিয়ে শত্রুতাতেই কি খুন হলেন তিনি, প্রশ্ন ঘোরাফেরা করছে কয়লাঞ্চলে।

রাজুর মৃত্যুর পরে খনি এলাকায় সব থেকে বেশি চর্চা চলছে ইসিএলের কয়লা পরিবহণের বরাত বা ডেলিভারি অর্ডার নিয়ে দ্বন্দ্বের কথা। কোল ইন্ডিয়ার অধীনস্থ সংস্থা নিলামের মাধ্যমে খোলা বাজারে কয়লা বিক্রি করার জন্য যে অনুমতি দেয়, তাকেই ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) বলে। ডিও-র বরাত পাওয়া ব্যবসায়ীদের কাছে তোলাবাজি হচ্ছে, এই অভিযোগ উঠছিল কয়েক মাস ধরে। বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারি আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এবং কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে চিঠি পাঠিয়ে অভিযোগ করেছিলেন, কয়লা খনিতে ডিও প্রাপকদের কাছ থেকে প্রতি টন কয়লা পিছু তিনশো থেকে ছ’শো টাকা তোলা আদায় করা হচ্ছে। বিষ্ণপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-ও একই রকম অভিযোগে চিঠি পাঠান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে।

স্থানীয় নানা সূত্র ও কারবারিদের একাংশের দাবি, ২০২২ সালের নভেম্বরে রানিগঞ্জের বক্তারনগরের এক ব্যক্তির নেতৃত্বে ডিও-র উপরে তোলা আদায় শুরু হয়। শোনপুর-বাজারিতে কয়েক জন টাকা দিতে না চাওয়ায় চাপান-উতোর বাধে। অভিযোগ, এর পরে বিষয়টিতে রাজুর নিয়ন্ত্রণ শুরু হয়। ডিও-র বরাত পাওয়ার ক্ষেত্রে রাজুর লোকজনের আধিপত্য তৈরি হয় বলেও অভিযোগ। সে নিয়ে নানা পক্ষের ক্ষোভও বাড়ছিল।গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে রাজুর সহযোগী বলে পরিচিত এক জনের কার্যালয়ের দিকে গুলি চালানোর পিছনেও এই দ্বন্দ্বের রেশই ছিল বলে দাবি।

তবে শুধু ডিও-র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দ্বন্দ্বই নয়, বালিঘাট নিয়ে চাপান-উতোরের বিষয়ও উঠে আসছে চর্চায়। বীরভূম ও পশ্চিম বর্ধমানের বিভিন্ন সূত্রের দাবি, বেনামে বিভিন্ন বালিঘাটের বরাত পাওয়ার চেষ্টা করছিলেন রাজু। ওই সূত্রগুলির অভিযোগ, বীরভূমে নানা বালিঘাট তদারক করতেন আব্দুল লতিফ।গরু পাচার মামলায় তিনি অভিযুক্ত হওয়ার পরে রাজু সেগুলির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এ নিয়ে যোগাযোগ তৈরি হয় সিবিআইয়ের খাতায় পলাতক লতিফের সঙ্গেও। কয়েকটি সূত্রের আবার দাবি, বালিঘাটের বরাত পাইয়ে দেওয়ার জন্য কয়েক জনের কাছ থেকে রাজু বেশ কয়েক কোটি টাকাও নিয়েছিলেন। সেই টাকা ফেরতের বিষয়েও চাপ তৈরি হচ্ছিল।

দিনের শেষে কোন রোষের শিকার হলেন রাজু, সে নিয়ে সংশয়ে অনেকেই। বালি বা কয়লা কারবারের দ্বন্দ্ব ছাড়া, অন্য কোনও কারণ থাকতে পারে কি না, খনি-শিল্পাঞ্চলে চর্চা চলছে সে নিয়েও।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Raju Jha Raniganj

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy