—প্রতীকী চিত্র।
অন্দরের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে বৈঠকে বসল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ সদস্যের তদন্ত কমিটি। বুধবার ওই বিশেষ অডিট কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে নথি সংগ্রহের কাজ করে। বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথাও বলে। অন্য দিকে, তৃণমূল প্রভাবিত ‘বর্ধমান ইউনিভার্সিটি কর্মচারী সমিতি’ (বিউকেএস) একাধিক প্রশ্ন তুলে এ দিন উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেয়। সুবর্ণজয়ন্তী ভবনের সামনে ধর্নাও
দেন তাঁরা।
ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ও অধরা কর্মচারীর যোগসাজসেই স্থায়ী আমানত ভেঙে ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছে বলে দাবি করেছে ওই সংগঠন। তাঁদের দাবি, ওই ঘটনার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দফতরের অন্দরে আতঙ্ক বা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ন্যূনতম নথিতে সই করতে গিয়েও কর্মচারী, আধিকারিকদের হাত কাঁপছে। কাজের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তথা বর্ধমান পুরসভার কাউন্সিলর শ্যামাপ্রসাদ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “দোষী কর্মীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। পুলিশেরও উচিত ওই কর্মীকে গ্রেফতার করে কী ভাবে ওই টাকা গায়েব হল তা খুঁজে বার করা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী অডিট কেন হয়নি, তারও উত্তর সবার জানা দরকার।” উপাচার্যকে দেওয়া স্মারকলিপিতে তাঁরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য বিভাগের কর্মচারীরা নানা রকম মন্তব্য করায় অর্থ বিভাগের উপরে ‘চাপ’ বাড়ছে। অর্থ দফতরের কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সবাইকে নিয়ে একটি বৈঠক করে উপাচার্যের সাহস দেওয়া উচিত বলেও তাঁদের দাবি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, “সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে দু’টি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সমান্তরাল ভাবেই তদন্ত শুরু করেছেন। অডিটি কমিটির পরে অন্দরের অনিয়ম খুঁজতে বুধবার সাড়ে ১২টা থেকে উপাচার্যের ঘরে তদন্ত কমিটি বৈঠক করে। প্রায় দু’ঘন্টা ধরে বৈঠক হয়েছে।”
গত রবিবার শেষ পাঁচ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন কোন বিভাগে, কোথায় কোথায় আর্থিক তছরুপ হয়েছে তার উত্তর খুঁজতে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করে দেন অন্তর্বর্তী উপাচার্য গৌতম চন্দ্র। ওই কমিটি এক মাসের মধ্যে উপাচার্যকে রিপোর্ট দেবে। কলা বিভাগের ডিন, বিজ্ঞান বিভাগের ডিন, সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের শিক্ষক, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কমার্সের, অর্থনীতি, বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (মানব সম্পদ), রাষ্ট্রবিজ্ঞান, জনসংযোগ বিভাগ ও উন্নয়ন আধিকারিকেরা ওই কমিটিতে রয়েছেন।
এ দিনের প্রথম বৈঠকে ঠিক হয়েছে, আপাতত স্থায়ী আমানতের খতিয়ান তাঁরা দেখবেন। শুধু পাঁচ বছর নয়, ৫১৫টির মতো স্থায়ী আমানত কী অবস্থায় রয়েছে, সেই হিসাব বিশ্ববিদ্যালয়ের নথিতে রয়েছে কি না দেখা হবে। জানার চেষ্টা করা হবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘর থেকে স্থায়ী আমানতের শংসাপত্র কী ভাবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের জেলখানা মোড়ের শাখার কাছে গেল।
কমিটির এক সদস্যের কথায়, “স্থায়ী আমানতেও গলদ রয়েছে। আর কয়েকবার বৈঠক করলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।” আর এক সদস্যের দাবি, “১০০ কোটি টাকার একটি মিউচু্য়াল ফান্ড করা হয়েছিল, সেই ফান্ডও ভাঙানো হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে চর্চা চলছে, নানা প্রশ্ন উঠছে। তারও কী নথি অর্থ দফতরে রয়েছে, সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy