E-Paper

ধনতেরসে রুপোয় লগ্নি বাড়ল জেলা জুড়েই

সোনার দাম প্রতি বছর বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে সোনা কেনার ঝোঁকও কমছে। বর্ধমান শহরে ছোট, মাঝারি, বড়, খুব বড় মিলিয়ে ১৪০০টির মতো সোনা-রুপোর দোকান রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ১০:২৩
রূপোর গয়না।

রূপোর গয়না। ফাইল চিত্র।

দামের জন্য ‘হলুদ ধাতুর’ অলঙ্কারের থেকে মুখ কি ফেরাচ্ছেন লগ্নিকারীরা, ধনতেরাসের বাজারের পরে ব্যবসায়ীরা এই প্রশ্ন তুলছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, এ বছর ধনতেরাসে জেলার লগ্নিকারীরা সোনার চেয়ে হলমার্ক রুপোয় (চাঁদি) বেশি বিনিয়োগ করেছেন। অর্থাৎ চাঁদিকেও লগ্নি হিসেবে দেখা শুরু হয়েছে।

সোনার দাম প্রতি বছর বাড়ছে। পাল্লা দিয়ে সোনা কেনার ঝোঁকও কমছে। বর্ধমান শহরে ছোট, মাঝারি, বড়, খুব বড় মিলিয়ে ১৪০০টির মতো সোনা-রুপোর দোকান রয়েছে। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, ২০২২-য় বর্ধমান শহরে ১৯ কেজির মতো সোনা বিক্রি হয়েছিল। ২০২৩-এ ধনতেরাসের সময়ে ১৫ কেজির মতো সোনা বিক্রি হয়েছিল। ২০২৪-এ ধনতেরাসের দিন গহনা সোনার দাম ছিল (১০ গ্রাম) ৮১ হাজার টাকা। যার ফলে, সোনা বিক্রি হয়েছিল সাড়ে ১২ কেজির মতো। এ বছর প্রায় ৪০ হাজার টাকা দাম বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, অন্তত ৩০ শতাংশ সোনা বিক্রি এ বার কম হয়েছে। লগ্নিকারীরা ভারী গয়না কেনার দিকে ঝুঁকে থাকেন। তাঁরা সোনার কয়েন, বিস্কুটও কেনেন। এ বার সোনায় লগ্নির ঝোঁক কম ছিল। বরংরুপোর কয়েন কেনার ঝোঁক অনেক বেশি ছিল।

বর্ধমান শহরের একাধিক নামী গয়না প্রস্তুতকারক বড় সংস্থার ম্যানেজার থেকে কর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের চেয়ে সোনার দাম প্রায় ৪৮% বেড়েছে। আর রুপোর দাম দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বার সোনার থেকে রুপো অন্তত ৫০% বেশি বিক্রি হয়েছে। একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, “টাকার অঙ্কে সোনার গয়না বিক্রি অনেকটাই বেশি। তবে ওজনে কম বিক্রি হয়েছে। বাজারে ভিড়ও ছিল। কিন্তু রুপো কেনার ঝোঁক গত কয়েক বছরের চেয়ে অনেকটাই বেশি ছিল এ বার।” বর্ধমান শহরের জিটি রোডের ধারে বেশ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানের গয়নার বিপণি রয়েছে। এমনই এক প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজারের কথায়, “সোনার কয়েন বা বিস্কুটের খোঁজে ক্রেতারা আসেন। তাঁরা কেনেনও। কিন্তু এ বার রুপোর কয়েনের অতিরিক্ত চাহিদা ছিল। ধনতেরাসের দিন, সন্ধ্যা ৭টার মধ্যেই রুপোর কয়েন শেষ হয়ে গিয়েছিল।”

ব্যবসায়ীদের কথায়, ভারী গয়নার বদলে হালকা ওজনের গয়নার দিকে বেশি ঝুঁকেছিলেন ক্রেতারা। গত বছরের মতো বা বেশি দাম দিয়ে সোনার গয়না কিনেছেন অনেকেই। কিন্তু তার ওজন গতবারের চেয়ে বেশি ছিল না। ইছলাবাদের সোমা কর্মকার কিংবা নীলপুরের নীলাঞ্জনা বন্দ্যোপাধ্যায়রা বলেন, “গত বছর সব মিলিয়ে চার-পাঁচ ভরি গয়না কিনেছিলাম। এ বার সেখানে হালকা ওজনের সোনার গয়না কিনেছি। সব মিলিয়ে দু’আড়াই ভরি হবে। দামটা ফ্যাক্টর হয়ে যাচ্ছে।” আলমগঞ্জের বাসিন্দা সোমনাথ রায় থেকে শুরু করে বাদামতলার স্বর্ণেন্দু ভট্টাচার্যরা বলেন, “নানা কারণে এই সময়ে সোনাতে লগ্নি করি। যে ভাবে দাম বাড়ছে, তাতে ঝুঁকি নেওয়া যায়নি। সে কারণে রুপোয় বেশি লগ্নি করেছি।”

বর্ধমান শহরের সোনাপট্টির ব্যবসায়ী, স্বর্ণশিল্পী সংগঠনের অন্যতম কর্তা স্বরূপ কোনার বলেন, “সোনার দাম নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে বিনোয়োগকারীদের অনেকেই ভেবে নিয়েছেন। সে কারণে লগ্নির দিকে এ বার ঝোঁকেননি। তার বদলে রুপোতে অনেক বেশি লগ্নি হয়েছে, যা আগে ব্যাপক হারে দেখা যায়নি।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy