প্রতীকী ছবি।
গাঁজা, পোস্তর খোলের পরে, এ বার কি ব্রাউন সুগারের কারবারেও ব্যবহৃত হচ্ছে এলাকা— ধন্দ পশ্চিম বর্ধমানের কাঁকসা, পানাগড়ের ব্যবসায়ীদের একাংশের। সম্প্রতি পর পর ব্রাউন সুগার উদ্ধার এবং তা পাচারে জড়িত সন্দেহে চার জন গ্রেফতারের ঘটনা সামনে আসার পরে এমনটাই মনে করছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, বিষয়টি নিয়ে এখনই কড়া পদক্ষেপ করা দরকার। তা না হলে, অদূর ভবিষ্যতে এলাকার নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে পারে।
ঘটনাচক্রে, ২০১৮ পর্যন্ত কাঁকসা ও পানাগড়ে গাঁজা ও পোস্তর খোল পাচারের ঘটনা বার বার সামনে এসেছিল। কখনও ৭৪ কেজি গাঁজা, কখনও আবার সাত কুইন্টাল পোস্তর খোল উদ্ধার হয়েছে। এক বার পানাগড়ের একটি হোটেলে অভিযান চালিয়ে সিআইডি, পুলিশ ও নারকোটিক্স বিভাগ পঞ্জাবের এক যুবক ও দুই তরুণীকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে নাইন এমএম পিস্তল উদ্ধার হয়। তবে মাদকের ব্যাগ সঙ্গে নিয়ে দোতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায় তাদের সঙ্গী। পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে এই মাদকের কারবারে খানিকটা হলেও লাগাম পড়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের একাংশের।
কিন্তু সম্প্রতি কাঁকসা থানা এগারো মাইলের কাছে ২৬০ গ্রাম ব্রাউন সুগার-সহ স্থানীয় এক জনকে গ্রেফতার করে। ধৃতকে জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, ওই মাদক উত্তরবঙ্গ থেকে আনা হয়েছিল। বীরভূমের ইলামবাজারে হাতবদল হয়েছিল। ওই ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পানাগড় বাইপাসের কাঁকসা আন্ডারপাসের কাছ থেকে তিন জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হয় ১৭০ গ্রাম ব্রাউন সুগার। ওই দলটিও মাদক ইলামবাজার থেকে এনেছিল বলে পুলিশের দাবি।
এই দু’টি ঘটনা সামনে আসার পরেই, পুলিশকর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগকারী অন্যতম প্রধান সড়ক পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়ক এবং কলকাতা-দিল্লি ২ নম্বর জাতীয় সড়কের সংযোগকারী জায়গা হল পানাগড়ের দার্জিলিং মোড়। এখান থেকে রাজ্যের নানা প্রান্তে তথা ভিন্-রাজ্যে ছড়িয়ে পড়তে সুবিধা হয় পাচারকারীদের। সে জন্য উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে মাদক পাচারে রাজ্য সড়কের বীরভূমের ইলামবাজার থেকে পশ্চিম বর্ধমানের পানাগড় পর্যন্ত এলাকাকে ‘করিডর’ হিসাবে ব্যবহার করে থাকতে পারে পাচারকারীরা।
এই পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের একাংশ এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, পানাগড় ও লাগোয়া এলাকায় সেনাছাউনি, বায়ুসেনা ছাউনি, বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার তেল এবং গ্যাসের ডিপো, বিভিন্ন কারখানা রয়েছে। পানাগড়ে রয়েছে গাড়ি কেনা-বেচার বাজার। ফলে, রাজ্যের নানা প্রান্তের মানুষ এই এলাকায় নিয়মিত যোগাযোগ করেন। ‘পানাগড় ব্যবসায়ী সমিতি’র তরফে বিট্টু আগরওয়াল বলেন, “পরপর মাদকের কারবারের ঘটনা সামনে আসার ফলে, আমরা চিন্তিত। এ ভাবে চলতে থাকলে, এলাকার সুনাম নষ্ট হবে। নিরাপত্তা নিয়েও সংশয় তৈরি হবে। বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা দরকার পুলিশ-প্রশাসনের।” যদিও, আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্ত বলেন, “আমরা সতর্ক আছি। নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। মাদকের কারবারে কোনও ভাবেই এলাকাকে ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy