একেই বোধহয় বলে মাছের তেলে মাছ ভাজা।
শহরের রাস্তার মোড়ের বেহাল আইল্যান্ডগুলি সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ)। বিনিময়ে ওই বেসরকারি সংস্থাগুলির হাতে তুলে দেওয়া হবে ‘ইউনিপোল’-এর মাধ্যমে বিজ্ঞাপনের সুযোগ। বিজ্ঞাপন থেকে আয় করে আইল্যান্ডগুলির রক্ষণাবেক্ষণ করবে সংস্থাটি। শুধু তাই নয়, আয়ের একটি অংশ তুলে দিতে হবে পর্ষদের হাতে। ইতিমধ্যে এ ব্যাপারে পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানান এডিডিএ-র এক আধিকারিক। পরিকল্পনা সফল হলে ধাপে-ধাপে বাকি আইল্যান্ডগুলিও একই ভাবে রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানান তিনি।
এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিএসপি টাউনশিপের আইল্যান্ডগুলির রক্ষণাবেক্ষণ কারখানা কর্তৃপক্ষই করে থাকেন। মাঝে এক সময় টাউনশিপের বহু আইল্যান্ড ভগ্নপ্রায় হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কিছু দিন আগে প্রায় সব আইল্যান্ড নতুন করে সংস্কার করেছেন ডিএসপি কর্তৃপক্ষ। এর ফলে টাউনশিপের শোভা বেড়েছে। তুলনায় শহরের বাকি অংশগুলির আইল্যান্ডের হাল বেশ খারাপ। অধিকাংশ আইল্যান্ডের লোহার রেলিং চুরি হয়ে গিয়েছে। ইট খুলে গিয়েছে। ভিতরে আগাছার জঙ্গল। প্রাথমিক ভাবে এমন ন’টি আইল্যান্ড বেছে নিয়ে সেগুলির সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে পলাশডিহায় আরবান হাটের কাছে, সিটি সেন্টারের দমকলের অফিসের সামনে, সৃজনী প্রেক্ষাগৃহ লাগোয়া এলাকায়, জাতীয় সড়কের এমএএমসি আন্ডারপাসের দু’দিকে দু’টি, মুচিপাড়ায়, মহকুমা হাসপাতালের সামনে, দুর্গাপুর সরকারি মহাবিদ্যালয়ের পাশে এবং জাকির হোসেন অ্যাভিনিউয়ে একটি আইল্যান্ড নির্দিষ্ট করা হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত বেসরকারি সংস্থা আইল্যান্ড সংস্কার করে রং করবে। চার দিক ঠিক ভাবে রেলিং দিয়ে ঘেরার ব্যবস্থা করতে হবে। আইল্যান্ডের ভিতরের আগাছা পরিষ্কার করে বিশেষ ঘাস ও গুল্ম রোপণ করবে। আলোর ব্যবস্থা করবে। আইল্যান্ডে থাকা মূর্তির উপযুক্ত সংস্কারও করতে হবে সেই সংস্থাকে।
এই সব আইল্যান্ডের অনতিদূরে শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোট ন’টি ‘ইউনিপোল’ গড়ে তোলা হবে। বিজ্ঞাপনের অন্যতম এই মাধ্যমে একটি স্থায়ী ধাতব খুঁটির মাথায় একাধিক দিকে বিজ্ঞাপন দেওয়ার সুযোগ থাকে। আইল্যান্ড পিছু একটি করে এমন ইউনিপোল তুলে দেওয়া হবে সংস্থার হাতে। তারা বিজ্ঞাপন দিয়ে আয় করবে। আইল্যান্ড রক্ষণাবেক্ষণ করা ছাড়াও আয়ের একাংশ তুলে দিতে হবে এডিডিএ-র হাতে। প্রাথমিক ভাবে এক বছরের জন্য সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা হবে। যদি সংস্থাটি ঠিকঠাক কাজ করে সেক্ষেত্রে ফের চুক্তির নবীকরণ করা হবে বলে এডিডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে।
এডিডিএ-র এক আধিকারিক জানান, মূলত নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে আইল্যান্ডগুলি বেহাল হয়ে পড়ে। ঝাঁ চকচকে শহরের মাঝে বেমানান হয়ে থাকে সেগুলি। শহরের সৌন্দর্যায়ন করতে গেলে আইল্যান্ডগুলির ঠিক মতো রক্ষণাবেক্ষণও জরুরি। সে কথা মাথায় রেখেই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এমন পরিকল্পনা অভিনব। আইল্যান্ডগুলির রক্ষণাবেক্ষণ হল। আবার পর্ষদের ভাঁড়ারেও কিছু এল। পরিকল্পনা সফল হলে পর্ষদের বিভিন্ন কাজে তা ব্যবহার করার সম্ভাবনা তৈরি হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy