Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জমা প্রস্তাবিত প্রকল্প, খনি চালু রাখার দাবি

১৪ নভেম্বর ইসিএল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, ১৫ জানুয়ারি থেকে সোদপুর এরিয়ার মাউথডিহি কোলিয়ারিতে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। কর্তব্যরত শ্রমিক-কর্মীদের অন্যত্র বদলি করা হবে।

আর কত দিন কাজ চলবে, সংশয়ে খনির কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

আর কত দিন কাজ চলবে, সংশয়ে খনির কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কুলটি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৯ ০০:৩৭
Share: Save:

কোলিয়ারি বাঁচাতে এ বার মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে আবেদন জানালেন শ্রমিক নেতৃত্ব। ইসিএলের মাউথডিহি কোলিয়ারি যাতে বন্ধ না হয় সে জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে কয়লা মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনার আর্জি জানিয়েছে পাঁচটি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’ (জ্যাক)। সেই সঙ্গে খনিটির পুনরুজ্জীবনে একটি প্রস্তাবিত প্রকল্প রিপোর্টও কোলিয়ারি কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। এই প্রস্তাব ভেবে দেখার আশ্বাস দিলেও তা কতটা কার্যকর হবে, তা নিয়ে অবশ্য সন্দিহান খনি বিশেষজ্ঞেরা।

১৪ নভেম্বর ইসিএল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানায়, ১৫ জানুয়ারি থেকে সোদপুর এরিয়ার মাউথডিহি কোলিয়ারিতে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে। কর্তব্যরত শ্রমিক-কর্মীদের অন্যত্র বদলি করা হবে। এর পরেই শ্রমিক নেতারা আন্দোলনে নামেন। ‘জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি’র তরফে খনি পুনরুজ্জীবনের দাবি করা হয়। কমিটির আহ্বায়ক তথা রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ রামচন্দ্র সিংহের দাবি, মাত্র ২৩ লক্ষ টাকা খরচ করলেই খনিগর্ভের জমা জল বার করা সম্ভব। সেই সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে ভূগর্ভে সঞ্চিত কয়লাও তোলা যাবে। খনিগর্ভের ১৫ থেকে ২৬ লেভেল পর্যন্ত প্রায় ৭২ হাজার টন কয়লা মজুত রয়েছে, যা সহজেই তোলা যাবে। এ ছাড়া, আরও প্রায় ৪০ হাজার টন কয়লা খনিগর্ভের বিভিন্ন অংশে বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়িয়ে রয়েছে, তা-ও সহজে তুলে নেওয়া সম্ভব বলে তাঁদের দাবি। রামচন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘সম্প্রতি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বিষয়টি জানিয়েছি। একটি প্রস্তাবিত প্রকল্প রিপোর্টও জমা দিয়েছি।’’

তবে এই প্রস্তাবিত প্রকল্প রিপোর্ট কতটা গৃহীত হবে, তা নিয়ে সন্দিহান শ্রমিক নেতারা। সিটুর জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী বলেন, ‘‘আমরা চাই, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খনি বাঁচানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় কয়লা মন্ত্রীর কাছে তদ্বির করুন। তাঁকেও প্রস্তাবিত পুনরুজ্জীবন প্রকল্পের রিপোর্ট-সহ আবেদন করা হয়েছে।’’ আইএনটিইউসি নেতা চণ্ডী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খনি বন্ধ মানে কর্মী সংকোচন হবে। মুখ্যমন্ত্রী এ নিয়ে সরব হলে ইসিএল কর্তৃপক্ষ নড়ে বসতে পারেন।’’ এ বিষয়ে ইতিমধ্যে আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি হরেছে বলে জানান তৃণমূলের জেলা সভাপতি জিতেন্দ্র তিওয়ারি। তিনি বলেন, ‘‘খনি বন্ধের চক্রান্ত রুখবই।’’ বিষয়টি নিয়ে বিধানসভার শীতকালিন অধিবেশনে সরব হবেন বলে জানান কুলটির তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এই এলাকায় চারটি খনি বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এলাকার স্বার্থে তা রোখা হবে।’’

ইসিএল বিজ্ঞপ্তি জারি করার পরেই শ্রমিক-কর্মীরা কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভে নামেন। সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে আশ্বাস মেলার পরে, তাঁরা কাজে নামেন। ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে খনির অবস্থা বিবেচনা করা হবে। খনিটি চালানো আদৌ লাভজনক হবে কি না তা বোঝার পরে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের বিষয়ে ভাবা হবে। খনি কর্তৃপক্ষের দাবি, এখন প্রতি মাসে কয়েক লক্ষ টাকা ক্ষতি হচ্ছে। সোদপুর এরিয়ার জিএম সৌমেন্দু কুণ্ডু বলেন, ‘‘খনির ভিতরে জল জমে আছে। তা শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE