Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

বোনাসের টাকায় কিশোরীর পাশে

তাপসবাবু বলেন, ‘‘ন’মাস আগে বাঁ হাটুতে চোট পায় মেয়ে। সমস্যা বাড়তে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল-সহ নানা জায়গায় দেখানো হয়। লাভ না হওয়ায় বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পরে ধরা পড়ে মেয়ে বোন ক্যানসারে আক্রান্ত।’’

পাশে কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

পাশে কর্মীরা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:১০
Share: Save:

পুজোর আগে ক্যানসার আক্রান্ত এক কিশোরীর পাশে দাঁড়াল একটি সংস্থা। শনিবার সংস্থার কর্মীরা পুজো বোনাসের অর্থ থেকে তহবিল তৈরি করে কালনার নিভুজিমোড় এলাকার শতরূপা দেবনাথ নামে ওই কিশোরীর পরিবারকে পঞ্চাশ হাজার টাকা তুলে দিয়েছেন। সঙ্গে আশ্বাস, ছাত্রীটি সম্পূর্ণ সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা পাশে থাকবেন।

ওই এলাকাতেই ছোট্ট বাড়ি ব্যাগ তৈরির কারিগর তাপস দেবনাথের। বড় মেয়ে শতরূপা, ছেলে আর স্ত্রীকে নিয়ে তাঁর সংসার। শতরূপা কৃষ্ণদেবপুর বালিকা বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। তাপসবাবু বলেন, ‘‘ন’মাস আগে বাঁ হাটুতে চোট পায় মেয়ে। সমস্যা বাড়তে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল-সহ নানা জায়গায় দেখানো হয়। লাভ না হওয়ায় বেঙ্গালুরুর একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের পরে ধরা পড়ে মেয়ে বোন ক্যানসারে আক্রান্ত।’’ দেবনাথ পরিবারের দাবি, এর পরে মেয়ের চিকিৎসায় বাড়ির গয়না, কিছু জমানো টাকা সবই চলে যায়। ইতিমধ্যে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, শতরূপাকে দু’বার কেমোথেরাপি দিতে হবে। সেই মতো তাকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাকে ভর্তিও করানো হয়। সেখানেই সে এই মুহূর্তে চিকিৎসাধীন।

কিন্তু যাবতীয় চিকিৎসার জন্য দরকার টাকার। তাপসবাবু ও তাঁর স্ত্রী রিঙ্কুদেবীর বক্তব্য, ‘‘পরিবারের অবস্থা একেবারেই ভাল নয়। মেয়ের চিকিৎসা করাতে আমরা কার্যত সর্বস্ব দিয়েছি।’’ পরিবারটির এই অবস্থার কথা জানতে পারে ‘এমএসজি ফিন্যান্স অ্যান্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটি’ নামে ওই সংস্থাটি। সংস্থার চেয়ারম্যান কৌশিক পাল বলেন, ‘‘এক সহকর্মীর থেকে পরিবার ও কিশোরীর অবস্থার কথা আমরা জানতে পারি। কর্মীরা ঠিক করেন, কেমোর জন্য এখন যত টাকা দরকার, তা দেওয়া হবে। সেই মতো বোনাসের টাকা থেকে তৈরি হয় তহবিল।’’

তার পরে এ দিন সংস্থার ১৫ জন প্রতিনিধি অসুস্থ কিশোরীর বাড়ি যান। সেখানেই দেওয়া হয় আর্থিক সাহায্য। সংস্থার কর্মী কোয়েল রায়, আদ্রিতা দাস, ত্রৈলোক্য বিশ্বাস, আনন্দ সরকারেরা বলেন, ‘‘আমাদের বেতন খুব বেশি নয়। বোনাসের টাকায় পুজোর কেনাকাট করি। এ বার না হয় কেনাকাটা একটু কমই হবে। মেয়েটা সুস্থ হোক। এ বারের পুজোর এটাই আমাদের সব থেকে বড় চাওয়া।’’

পাশে দাঁড়ানো প্রত্যেককেই ধন্যবাদ জানিয়েছে ছাত্রীটির পরিবার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna Poor NGO
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE