সাজাপ্রাপ্ত তিন জন। নিজস্ব চিত্র
মত্ত অবস্থায় জল চাওয়া নিয়ে শুরু হয়েছিল গোলমাল। পরে বাড়ির তিন জনকে বেধড়ক মারধর করা হয়। অতিরিক্ত মারে মৃত্যু হয় এক প্রৌঢ়ের। সেই ঘটনাতেই তিন জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল কালনা আদালত। মঙ্গলবার কালনা শহরের সরিষাপট্টি এলাকার হরি মালিক, লেলো লোহার এবং নিমো বাগকে ওই সাজা দেন অতিরিক্ত জেলা এবং দায়রা বিচারক তপনকুমার মণ্ডল।
পুলিশ জানিয়েছে, ২০১৫ সালে ১০ অক্টোবর রাতে খুন হন কালনার মহিষমর্দিনীতলার কাঠিগঙ্গা এলাকার ব্যবসায়ী রামবিলাস সাউ। তাঁর ছেলে রাকেশ সাউয়ের অভিযোগ ছিল, ওই দিন রাত সওয়া ১০টা নাগাদ মত্ত অবস্থায় বাড়িতে জল চাইতে আসে হরি, লেলো ও নিমো। রামবিলাসবাবু তাদের পাশের নলকূপ থেকে জল নিতে বলেন। তাতে রাজি না হয়ে ওই তিন জন প্রথমে গালিগালাজ, পরে বাঁশ দিয়ে মারধর শুরু করে। রামবিলাসবাবু, তাঁর স্ত্রী গীতাদেবী ছাড়াও দোকানের এক কর্মী আহত হন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁদের ভর্তি করানো হয় কালনা হাসপাতালে। পরে কলকাতার একটি হাসপাতালে পাঠানো হয় রামবিলাসবাবুকে। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
ঘটনার তদন্তে নেমে খুনের মামলা দায়ের করে পুলিশ। গিরি মল এবং বিশ্বজিৎ দাস নামে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতারও করা হয়। তবে সোমবার আদালত বেকসুর খালাস দেয় তাঁদের। আইনজীবীরা জানান, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন রামবিলাসবাবুর স্ত্রী গীতা সাউ। চিৎকার চেঁচামেচির সময় বাড়ির দোতলা থেকে নেমে এসেছিলেন তাঁদের দুই ছেলে মেয়ে রাকেশ এবং অর্চনা। সাউ পরিবারের ওই তিন জনই আদালতে জানিয়ে দেন, কী ভাবে মত্ত অবস্থায় ওই তিন জন মারধর করে রামবিলাসবাবুকে। গীতাদেবী টিআই প্যারেডে তিন জনকে সানাক্তও করেন। মামলায় মোট দশ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করে আদালত।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মামলায় রায় দানের জন্য প্রথমে ৯ জুলাই দিন ধার্য হয়। তবে এক জন করে অভিযুক্ত হাজির না থাকায় তিন বার দিন ধার্য করে রায় দান স্থগিত রাখতে হয় আদালতকে। বাবার মৃত্যুর কারণে ২৯ জুলাই বিশ্বজিৎবাবু হাজির না থাকায় ফের অভিযুক্তদের আইনজীবী রায় দান স্থগিত করার আবেদন জানান। যদিও বিচারক জানিয়ে দেন, ফৌজিদারি কার্যবিধির ৩৫৩ (৬) ধারা অনুযায়ী তাঁর রায় দানে কোনও বাধা নেই। মামলার সরকারি আইনজীবী বিকাশ রায় বলেন, ‘‘অত্যন্ত দ্রুত এই মামলার বিচার পর্ব শেষ হয়েছে।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy