Advertisement
E-Paper

‘বাপি কারও ক্ষতি করেনি’

গ্রামে ঢোকার দু’টি রাস্তা। মোড়ে বটগাছ। অন্য দিন সেই গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করেন গ্রামবাসী। মঙ্গলবার সব খাঁ-খাঁ। মাঝেসাঝে, শুধু দেখা মিলছে, দু’-একটা পুলিশের গাড়়ির। — কাঁকসার বিজেপি কর্মী সন্দীপ ঘোষের (২২) গ্রাম রূপগঞ্জে ঢোকার মুখে দিনভর ছবিটা এমনই ছিল।

বিপ্লব ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০১৮ ০১:১৩
সন্দীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

সন্দীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

গ্রামে ঢোকার দু’টি রাস্তা। মোড়ে বটগাছ। অন্য দিন সেই গাছের ছায়ায় দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করেন গ্রামবাসী। মঙ্গলবার সব খাঁ-খাঁ। মাঝেসাঝে, শুধু দেখা মিলছে, দু’-একটা পুলিশের গাড়়ির। — কাঁকসার বিজেপি কর্মী সন্দীপ ঘোষের (২২) গ্রাম রূপগঞ্জে ঢোকার মুখে দিনভর ছবিটা এমনই ছিল।

দু’টি রাস্তার একটি গ্রামের ভিতর দিয়ে গিয়েছে। তা দিয়ে খানিক দূর গেলেই সন্দীপের একতলা সবুজ রঙের নতুন বাড়ি। বা়ড়িটা নতুন, কিন্তু এই গ্রামেরই দীর্ঘকালের বাসিন্দা সন্দীপ ও তাঁর পরিবার। পাশের বাড়ির ছেলেটা নেই, এমনটা এখনও ভাবতে পারছেন না শুভজিৎ মণ্ডল, গীতা বাগদিরা। তাঁদের কথায়, ‘‘বড় ভাল ছেলে ছিল সন্দীপ। গ্রামবাসীর যে কোনও সুখ, দুঃখে পাশে থাকত।’’

সন্দীপ, এই নামটাই বারবার ঘুরে-ফিরে এল গ্রামের মনসা মন্দিরের চাতালের জটলায়, পড়শিদের আলোচনায়। ঘটনার পরে ছেলেকে হারিয়ে রাজনীতিকে দায়ী করেছিলেন বাবা বিজয় ঘোষ। মঙ্গলবার, পাঁচ রাজ্যের ভোটগণনার দিনে সেই রাজনীতির আলোচনা কার্যত ব্রাত্য এই গ্রামে। সে প্রসঙ্গ তুলতেই ঝাঁঝিয়ে উঠলেন প্রাণেশ্বর মণ্ডল, স্বাধীন ঘোষেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘ভাবতেই পারছি না, তরতাজা ছেলেটাকে একটু আগে শ্মশানে গেলাম। ও যে দলই করুক না কেন, ও তো আমাদের গ্রামের ছেলে। আমাদের কছে সেটাই সন্দীপের পরিচয়।’’

সন্দীপের বাবার মতোই রাজনীতি নিয়ে বীতশ্রদ্ধ গ্রামের যুবকেরাও। তাঁদের কথায়, ‘‘বাপি (সন্দীপের ডাক নাম) তো কারও ক্ষতি করেনি। তা হলে এমনটা হল কেন? রাজনীতিই সব কে়ড়ে নিল।’’

নিহত সন্দীপ ঘোষের বাড়ির সামনে জটলা গ্রামবাসীর। নিজস্ব চিত্র

ঘটনার খবর আসার পরে থেকেই বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন সন্দীপের মা প্রতিমাদেবী ও দুই দিদি। তাঁদের পাশেই ছিলেন গ্রামের বাসিন্দা কল্পনা মণ্ডল, সুধা বাগদিরা। তাঁদের কথায়, ‘‘ছেলেহারা মায়ের পাশে কী ভাবে দাঁড়়াব বুঝতে পারছি না।’’ তখনই বাড়ির দরজায় আরও কয়েক জন পড়শি। প্রতিমাদেবী বলে উঠলেন, ‘বাপি এসেছিস?’

বাপি আসেনি, তবে ছেলের খুনের তদন্তে বাড়িতে, গ্রামে আনাগোনা করছে পুলিশ। গ্রামের বাইরের ওই মোড়েও রয়েছে পুলিশি পাহারা। পুলিশ দেখে বাড়ির জানলা খুলে অনেককেই উুঁকিঝুঁকি মারতে দেখা গিয়েছে। আর আঁচলের খুঁটে চোখ মুছতে মুছতে মহিলারা একটাই দাবি জানাচ্ছেন, ‘দোষীরা শাস্তি পাক’।

গ্রামের মাঠে অন্য দিন ক্রিকেট খেলতে দেখা যায় সুধাকর মণ্ডল, বিপিন ঘোষদের। এ দিন বিকেলে অবশ্য ব্যাট-বল হাতে ওঠেনি। তাঁরাও স্তব্ধ হয়ে গিয়েছেন এই ঘটনায়। একটাই দাবি উঠছে, দোষীদের শাস্তির।

Murder BJP Kanksa
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy