Advertisement
E-Paper

আত্মরক্ষার কসরতের সঙ্গে প্রাপ্তি পদকও

শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানো, সেই সঙ্গে যে কোনও পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করা— গোড়ায় এই দুইয়ের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিলেন অনেকে। কিন্তু এখন আর শুধু তাতে আটকে নেই। ক্যারাটের প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে পদকও জিতে আনছে দুর্গাপুরের মেয়েরা।

নিজস্ব সংবাদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৭ ০০:৩৮
প্রশিক্ষণ: দুর্গাপুরের এক শিবিরে চলছে ক্যারাটে শেখা। নিজস্ব চিত্র

প্রশিক্ষণ: দুর্গাপুরের এক শিবিরে চলছে ক্যারাটে শেখা। নিজস্ব চিত্র

শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানো, সেই সঙ্গে যে কোনও পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করা— গোড়ায় এই দুইয়ের লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ নিতে এসেছিলেন অনেকে। কিন্তু এখন আর শুধু তাতে আটকে নেই। ক্যারাটের প্রশিক্ষণ নিয়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে পদকও জিতে আনছে দুর্গাপুরের মেয়েরা।

দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে বেশ কয়েকটি ক্যারাটে প্রশিক্ষণ শিবির রয়েছে। সব ক’টিতেই শিক্ষার্থী পঞ্চাশ বা তার বেশি। বিভিন্ন বয়সের মেয়েরা সেখানে প্রশিক্ষণ নেয়। মেয়ের সঙ্গে মা-ও প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন, এমন দৃশ্যও দেখা যায়।

একটি শিবিরের প্রশিক্ষক গোপাল সরকার জানান, তাঁর কাছে একশোরও বেশি মেয়ে প্রশিক্ষণ নেন। তাঁদেরই এক জন অঙ্কিতা সরকার গত বার বর্ধমান জেলা টুর্নামেন্টে ১০-১৪ বছরের বিভাগে সোনা জিতেছে। এ ছাড়া মেয়েদের সিনিয়র গ্রুপে জেলা টুর্নামেন্টে সিঞ্জিনী বসু সোনা ও সুপ্রীতি পাণ্ডে রুপো পেয়েছে। অন্য প্রতিযোগিতায় অনন্যা বসু, আরণি সরকারেরা রুপো জিতে এসেছে। ব্রোঞ্জও পেয়েছে অনেকে।

আর এক ক্যারাটে প্রশিক্ষক দেবনাথ স্বর্ণকারও ক্যারাটে শেখান। তাঁর ছাত্রীর সংখ্যা জনা সত্তর। ডিসেম্বরে ‘আশিহারা অল ইন্ডিয়া চ্যাম্পিয়ানশিপ’-এ সঞ্জনা সিংহ ৫০ কেজি বিভাগে সোনা পেয়েছে। অন্য নানা বিভাগে চিত্রা সিংহ, অলকা বার্নোয়ালেরা রুপো জিতেছে। ব্রোঞ্জও জিতেছে অনেকে। ২০১৭-র আন্তঃস্কুল চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা পেয়েছে মোহনা রায়। জেলা স্তরেও সোনা জিতেছে সে। দেবনাথবাবু বলেন, ‘‘যত দিন যাচ্ছে, আত্মরক্ষার পদ্ধতি হিসেবে মেয়েদের কাছে ক্যারাটে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।’’

শহরের আর এক ক্যারাটে প্রশিক্ষক সমীর মণ্ডলের ছাত্রী রূপসা সামন্ত, মোনালি বন্দ্যোপাধ্যায়দের ঝুলিতেও সোনা রয়েছে। রুপো জিতেছে পিঙ্কি রায়-সহ অনেকে। ব্রোঞ্জ-জয়ীর তালিকাও লম্বা। সম্প্রতি সমীরবাবুর এক ছাত্রী মমতা হাঁসদা রাজ্য স্তরে ৫৫ কেজি বিভাগে অনূর্ধ্ব ২০ ক্যারাটেতে সোনা জিতেছেন। মমতার বাবা মারা যান ১৪ বছর আগে। মা সুমিত্রাদেবী রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ করে সংসার চালান। রাইরানিদেবী বালিকা বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী মমতা ২০১৪ সালে স্কুল থেকে দুর্গাপুরের সিধো-কানহু স্টেডিয়ামে মেয়েদের আত্মরক্ষা সংক্রান্ত একটি শিবিরে এসেছিলেন। সেখানেই ক্যারাটের প্রতি ভালবাসা জন্মায়। সমীরবাবুর কাছে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন।

সুকান্তপল্লিতে ডিভিসি ক্যানালের ধারে একচিলতে বাড়িতে বসে মমতা জানান, দিদি উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন। রোজ ঠিক মতো খাবারও জোটে না। তাঁর কথায়, ‘‘স্যার বিনামূল্যে আমাকে ক্যারাটে শেখান। পোশাক, টিফিনও কিনে দেন।’’ সমীরবাবু বলেন, ‘‘যে পরিস্থিতির সঙ্গে মমতা লড়াই করেছে তা বাকিদের কাছে শিক্ষণীয়।’’

আত্মরক্ষার পাশাপাশি ক্যারাটে নিয়ে এই রকম স্বপ্নই শহরের মুখ উজ্জ্বল করছে, মনে করছেন সমীরবাবুরা।

Karate self defence training Durgapur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy