এই বাসগুলিই লিজ নিয়েছে পুরসভা।—নিজস্ব চিত্র।
বাসের চাকা গড়ানোর আগেই চাপানউতোর। দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার (এসবিএসটিসি) থেকে বাস লিজ নিয়ে ১ ডিসেম্বর থেকে বিভিন্ন রুটে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কাটোয়া পুরসভা। আজ, শুক্রবার সেই পরিষেবার উদ্বোধন করার কথা পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর। কিন্তু তার আগেই এই সিদ্ধান্তে পুরসভার ভাঁড়ারের হাল নিয়ে সরব হয়েছেন কাটোয়ার তৃণমূল বিধায়ক ও কাউন্সিলরেরা।
পুরসভা সূত্রের খবর, কাটোয়া থেকে মেমারি ভায়া ধর্মতলা, কল্যাণী ভায়া ধর্মতলা, বীরভূমের রামপুরহাট, বাঁকুড়ার জয়রামবাটি, ভায়া মালডাঙা বর্ধমান-বরাকর এবং গুসকরা রুটে ১০টি করে বাস চলানো হবে। ঠিক হয়েছে, কাটোয়া থেকে কলকাতাগামী বাস দিনে একটি ও অন্যান্য রুটের বাস দিনে দু’টি ছাড়বে।
পুরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার সৌমেন্দ্রনাথ কোলে জানান, এসবিএসটিসি-র কাছ থেকে ৩২ আসনের বাসগুলি মাসে ন’হাজার ও ৫২ আসনের বাসগুলি মাসে ১৩ হাজার টাকা ভাড়ায় নেওয়া হচ্ছে। বাসগুলি আপাতত জজিগ্রামের ট্রাক টার্মিনালে রাখার ব্যবস্থা হলেও পরে আলাদা বাস টার্মিনাল তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান পুরপ্রধান অমর রাম। পুরসভার দাবি, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে বাসগুলিতে থাকছে অত্যাধুনিক জিপিএস সিস্টেম।
পুরসভার এই সিদ্ধান্তের খবর চাউর হতেই এলাকার বাসিন্দাদের অনেকেরই আশা, খানিকটা হলেও ঝক্কি কমবে যাতায়াতের। ব্যবসার কাজে সপ্তাহে তিন দিন কলকাতা যান হরিসভাপাড়ার লাল্টু মিস্ত্রি। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক সময় দুপুরে গেলেই হয়। কিন্তু উপায় না থাকায় সকালে ট্রেন ধরতে যেতে হয়। কাটোয়া থেকে বাস চালু হলে এই সমস্যা মিটবে।’’ একই কথা বলেছেন মাধবীতলার বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া ইন্দ্রনীল দত্ত, মৌসুমী আদক, নিত্যযাত্রী বন্দনা দে, সুশান্ত মাঝিরা।
তবে তৃণমূল পরিচালিত পুরসভার এমন সিদ্ধান্তে না-খুশ দলেরই বিধায়ক ও কাউন্সিলরেরা। প্রায় ১৩ জন কাউন্সিলরের দাবি, পুরসভা বর্তমানে অর্থ সঙ্কটে ভুগছে। তারপরে এমন সিদ্ধান্তের পরে লাভ না হলে পুরসভার লোকসানই হবে। বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘পুরসভা পর্যাপ্ত পরিকাঠামো ও দক্ষ কর্মীর ব্যবস্থা না করেই বাস চালু করল। এতে আয়ের বদলে ব্যয় হলেই মুশকিল। এ রকম ঘটনা বাম জমানায় রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ঘটেছে। এক বার বাস চালু হলে তা হঠাৎ করে তুলে নেওয়াও সম্ভব হবে না।’’ যদিও পুরপ্রধানের দাবি, সব কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পুরসভার আধিকারিকদের একাংশ জানান, দৈনিক ২১৭ টাকার ভিত্তিতে প্রাথমিক ভাবে ১০ জন করে চালক, কনডাক্টর ও পাঁচ জন অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগ করা হবে। অতিরিক্ত আয়ের ভিত্তিতে কমিশনও পাবেন তাঁরা। পুরপ্রধান অমরবাবুর দাবি, ‘‘বাস চালু হওয়ায় যাত্রীরা পরিষেবা পাবেন, কর্মসংস্থান হবে ও পুরসভার আয় বাড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy