অনিয়ন্ত্রিত টোটো বাগে আনা তো একটা বড় চিন্তা বটেই। পথ নিরাপত্তার নানা খুঁটিনাটি নিয়েও চিন্তিত কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন। দুর্ঘটনা কমাতে ইতিমধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। ট্র্যাফিক ব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পথচলতি মানুষ থেকে শুরু করে বাস চালক ও অন্য যানবাহন চালকেরা যাতে পথ নিরাপত্তার নিয়ম মেনে চলেন, সে দিকে নজর দিতে পরিবহণ ইউনিয়নগুলিকেও জানিয়েছে প্রশাসন।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া-বর্ধমান রাস্তা, কাটোয়া-কালনা এসটিকেকে রোডে দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হচ্ছে বিজ্ঞানভিত্তিক ভাবে হাম্প না করা। বেশি উঁচু করে তৈরি করা ঘন ঘন হাম্পে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাণহানিও হয়। প্রশাসনের দাবি, রাস্তার দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলিকে ‘ব্ল্যাকস্পট’ হিসাবে চিহ্নিত করা হবে। পথ চলার নিয়ম না মানলেই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আবার বাস ও ট্রাক চালকদের খামখেয়ালিপনাও অনেক সময় দুর্ঘটনা ডেকে আনে বলে জানানো হয়েছে। প্রত্যেক চালককে শারীরিক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকতে হবে। কোনও মতেই নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো যাবে না। একটানা গাড়ি না চালানোরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বাসে সিঁড়ি রাখা, ছাদে জিনিসপত্র তোলাও সম্পূর্ণ ভাবে নিষিদ্ধ। প্রতিটি বাসেই রাখতে হবে আপদকালীন জানালা। পাল্টা বাস মালিক সমিতিও বেহাল রাস্তা ঠিক করে দেওয়া ও হাম্পে রঙ করে উচ্চতা কমানোর দাবি জানিয়েছে।
কাটোয়া শহরের বাসিন্দা কৌশিক ঠাকুর বলেন, “কাটোয়া থেকে বর্ধমান যেতে প্রায় দেড়শোর উপরে হাম্প রয়েছে। কয়েক ঘর বাসিন্দা থাকলেই একটা করে হাম্প করে দেওয়া হয়। এর ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। গন্তব্যে পৌঁছতে সময়ও বেশি লাগে। আবার দ্রুত গতিতে বাস চালাতে গিয়েও চালকেরা নিয়ম ভাঙেন।’’ রাজু পাল নামে এক গাড়ি চালক বলেন, “রাস্তায় হাম্পগুলিকে আলাদা করে রঙ করে দেওয়া প্রয়োজন। যাতে দূর থেকে নজরে আসে। নাহলে ঝট করে ব্রেক কষতে গিয়ে গাড়ির যন্ত্রাংশেরও ক্ষতি হয়।”
কাটোয়া বাস মালিক সমিতির সভাপতি নারায়ণচন্দ্র সেন বলেন, “পথ নিরাপত্তার জন্য আগে বেহাল রাস্তাগুলির হাল ফেরানো ও অবৈজ্ঞানিক ভাবে তৈরি করা হাম্পগুলির উচ্চতা কমানো দরকার।’’ কাটোয়ার এআরটিও অরুনাভ শর্মা বলেন, “পথ নিরাপত্তা নিয়ে আমরা প্রশাসনিক বৈঠক করে একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শীঘ্রই দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলি চিহ্নিত করে সর্তকতামূলক বোর্ড বসানো হবে। চালক থেকে পথচারী প্রত্যেকে নিয়ম মেনে চললে দুর্ঘটনাঅনেকটাই কমবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)