Advertisement
০৪ মে ২০২৪
হিন্দুস্তান কেবলসে পরপর নোটিস

পাওনা বকেয়া, কারখানায় ঢুকতে নিষেধে ক্ষুব্ধ কর্মীরা

পাওনাগন্ডা মেটানো হয়নি এখনও। ৩১ জানুয়ারি শেষ হয়ে যাচ্ছে চাকরির মেয়াদ। এরই মধ্যে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শ্রমিক-কর্মীদের কারখানায় ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৪৪
Share: Save:

পাওনাগন্ডা মেটানো হয়নি এখনও। ৩১ জানুয়ারি শেষ হয়ে যাচ্ছে চাকরির মেয়াদ। এরই মধ্যে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শ্রমিক-কর্মীদের কারখানায় ঢোকার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন কর্তৃপক্ষ। সেই নোটিস দেখে ক্ষুব্ধ রূপনারায়ণপুরের হিন্দুস্তান কেবলস কারখানার কর্মীরা। তাঁদের হুঁশিয়ারি, ৩১ জানুয়ারির মধ্যে পাওনা মেটানো না হলে এই নিষেধ তাঁরা মানবেন না।

গত ২৮ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে রূপনারায়ণপুরের এই কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত হয়। সেই মতো সংস্থার সমস্ত শ্রমিক-কর্মীকে কর্তৃপক্ষের তরফে স্বেচ্ছাবসর নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ধাপে-ধাপে সকলেই স্বেচ্ছাবসরের আবেদন জমা দিয়েছেন। এর পরেই ২৫ জানুয়ারি কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন, ১ ফেব্রুয়ারি থেকে কর্মীরা অনুমতি ছাড়া আর কারখানায় ঢুকতে পারবেন না। যদি কেউ প্রবেশ করেন তার দায় শ্রমিক-কর্মীদের নিজেদের, কর্তৃপক্ষের নয়। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, শ্রমিক-কর্মীদের বকেয়া বেতন ও অবসরকালীন প্রাপ্য-সহ অন্য সুবিধা সময় মতো দেওয়া হবে।

এই বিজ্ঞপ্তি দেখে শ্রমিক-কর্মীরা ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল বকেয়া বেতন-সহ অবসরকালীন প্রাপ্য ৩১ জানুয়ারির মধ্যে মিটিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তা না করেই কারখানায় ঢোকা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। কেবলস কর্তৃপক্ষের অবশ্য যুক্তি, প্রত্যেক কর্মীর জন্য পৃথক ভাবে আয়-ব্যয়, আয়কর-সহ নানা হিসেব তৈরি করতে হবে। সে জন্য সময় দরকার। যত দ্রুত সম্ভব তা সম্পন্ন করে পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হবে।

শ্রমিক সংগঠনগুলি যদিও তা মানতে নারাজ। আইএনটিইউসি-র কারখানা ইউনিটের সম্পাদক উমেশ ঝা বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্ত শ্রমিক-বিরোধী। আমরা জোটবদ্ধ ভাবে আন্দোলনে নামব।’’ সিটুর সহ-সভাপতি মেঘনাদ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও বক্তব্য, ‘‘পাওনা না মেটানো পর্যন্ত কারখানায় যাব। যৌথ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’’ এইচএমএসের সম্পাদক বিরজা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘শ্রমিকদের সঙ্গে প্রতারণা হচ্ছে। এই সিদ্ধান্ত মানছি না।’’ আন্দোলনের রাস্তায় যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন বিএমএসের সম্পাদক শুভাশিস ঘড়।

টেলিফোনের জেলি ফিলড কেবল তৈরির এই কারখানা তৈরি হয় ১৯৫২ সালে। উৎপাদিত সামগ্রীর চাহিদা কমতে থাকায় ১৯৯৫ থেকে রুগ্‌ণ হতে শুরু করে সংস্থাটি। ১৯৯৭ সালে পাঠানো হয় বিআইএফআর-এ। ২০০৯ সালে কারখানার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। সংস্থার আধুনিকীকরণের জন্য আগ্রহী সংস্থাকে আবেদন করার প্রস্তাব দেয় ভারী শিল্প মন্ত্রক। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অধীনস্থ অর্ডিন্যান্স ফ্যাকট্রি বোর্ড সেই প্রস্তাবে এগিয়ে আসে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কারখানা বাঁচানো যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

HCL Labours Wages
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE