অণ্ডালের দক্ষিণখণ্ডে। নিজস্ব চিত্র
চাষযোগ্য জমি দখল করে কয়লা খননের জন্য মাটি কাটার অভিযোগের পরেও প্রশাসনের কোনও উদ্যোগ নজরে পড়েনি, দাবি এলাকাবাসীর। তবে প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার পরে রাতের অন্ধকারে মাফিয়ারাই মাটি ভরাটের কাজ শুরু করেছে বলে জানান অণ্ডালের দক্ষিণখণ্ডের ওই জমির মালিকেরা।
ওই গ্রামের বাসিন্দা উজ্জ্বল পাল, মঙ্গলময় নন্দী, পরিমল পালেরা অভিযোগ করেন, ১ ডিসেম্বর থেকে তাঁদের ১১ জনের চাষের জমিতে মাটি-পাথর কাটার যন্ত্র নিয়ে এসে খনন শুরু করে মাফিয়ারা। ৬ ডিসেম্বর দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক ও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের কাছে ই-মেল মারফত অভিযোগ জানান তাঁরা। উজ্জ্বলবাবু অভিযোগ করেন, এর পরেই ৭ ডিসেম্বর দক্ষিণখণ্ড পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অনন্ত ঘোষ তাঁকে ফোনে হুমকি দেন।
মহকুমাশাসক শ্রীকান্ত পালি জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরেই তিনি বিডিওকে রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও জমিমালিকদের দাবি, প্রশাসনের তরফে এখনও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। মঙ্গলময়বাবু বলেন, ‘‘মাফিয়ারা মোট চার বিঘা জমি প্রায় ১০ ফুট করে কেটেছিল। গত কয়েক দিন ধরে রাতের অন্ধকারে তারাই মাটি ভরাট করছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় এক বিঘা জমির গর্ত ভরাট করা হয়েছে।’’ পরিমলবাবু দাবি করেন, ‘‘প্রশাসনের কোনও হেলদোল না থাকলেও মাফিয়ারা সম্ভবত বুঝেছে, গ্রামবাসীরা আমাদের পাশে থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেন। তাই হয়তো মাটি ভরাট করছে।’’
অণ্ডালের বিডিও ঋত্বিক হাজরা বলেন, ‘‘মহকুমাশাসক মৌখিক নির্দেশ দিয়েছেন। আমি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত করছি। তা এখনও শেষ হয়নি।’’ মহকুমাশাসকের দফতর সূত্রে জানানো হয়, ৭ ডিসেম্বর মহকুমাশাসকের লিখিত নির্দেশ ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে বিডিও-র কাছে পাঠানো হয়। কোন কারণে বিডিও তা না পাওয়ায় সোমবার দুপুরে ফের ই-মেলের মাধ্যমে সেই নির্দেশের প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে।
উজ্জ্বলবাবুর বক্তব্য, “অনন্তবাবু আমাকে প্রাণে মেরে ফেলা ও গ্রামছাড়া করার হুমকি দিয়েছিলেন। আমি পুলিশ-প্রশাসনকে ই-মেলের মাধ্যমে অভিযোগ জানালেও তাঁকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।’’ অনন্তবাবু অবশ্য দাবি করেন, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ কমিশনার লক্ষ্মীনারায়ণ মিনা বলেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট পুলিশ আধিকারিককে ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। তদন্ত শেষ হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘উপপ্রধানের বিরুদ্ধে দলীয় স্তরে তদন্ত হবে। দোষ প্রমাণ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy