বেনিয়ম: জাতীয় সড়কে উল্টো লেনেই যাতায়াত। ছবি: বিকাশ মশান
যাতায়াত চলছে বোঝাপড়ার ভিত্তিতে। একটু নড়চড় হলেই বিপদ। সম্প্রসারণের কাজ চলা ২ নম্বর জাতীয় সড়কে যাতায়াতকারী লরি, বাস থেকে মোটরবাইক, সব রকম যানবাহনের চালকেরই এমন অভিজ্ঞতা।
২ নম্বর জাতীয় সড়কে বিরাম নেই দুর্ঘটনায়। মঙ্গলবার বিকেলে পানাগড়ে রেল ওভারব্রিজের কাছে লেন ভেঙে চলা বাসের সঙ্গে ট্রাকের ধাক্কায় মোট তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাজবাঁধে আবার ট্রাকের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছে মোটরবাইক আরোহী এক শিক্ষিকার। এ দিনই রানিগঞ্জে নিয়ন্ত্রণ হারানো বাস গাড়িতে ধাক্কা মারায় জখম হন জনা দশেক যাত্রী।
পরপর এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে জাতীয় সড়কে সুরক্ষা নিয়ে। কেন বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে? স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, বিভিন্ন জায়গায় চার লেন থেকে রাস্তা ছয় লেন করার কাজ চলছে। বিভিন্ন মোড়ে ওভারব্রিজ গড়ার কাজ চলছে। ফলে, সেই সব অংশে ট্রাফিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকছে না। কোথাও এক দিকের রাস্তায় কাজ চলছে। তাই অন্য দিকের রাস্তা দু’ভাগ করে আসা-যাওয়া চলছে। আবার কখনও এক দিকের রাস্তায় কয়েক কিলোমিটার যানজট এড়াতে লেন ভেঙে গাড়ি ঢুকে পড়ার ঘটনা ঘটছে। দূরের আন্ডারপাস এড়াতে লেন ভেঙে কাছাকাছি আন্ডারপাস ধরে যাতায়াতের প্রবণতাও রয়েছে। সব মিলিয়ে, জাতীয় সড়কে যাতায়াত দিন-দিন বিপজ্জনক হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এই রাস্তা ধরে নিয়মিত যাতায়াত করা যাত্রীদের দাবি, সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে ট্রাফিক নিয়ম ভাঙাটাই দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে এই রাস্তায়। চালকেরা কমবেশি সবাই এই পথ নিচ্ছেন। তবে অনেক বেশি সন্তর্পণে তা করতে হচ্ছে। বেচাল হলেই বিপদের সম্ভাবনা। ঝাঁ চকচকে রাস্তা ধরে তীব্র গতিতে ছুটে আসা উল্টো দিকের লরি বা গাড়ির সামনে পড়লেই দুর্ঘটনা।
আগের দিন পানাগড়ে যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, বুধবার সেখানে দেখা যায়, পরিস্থিতির বিশেষ কোনও পরিবর্তন হয়নি। একই ভাবে লেন ভাঙার প্রবণতা চলছে। স্থানীয় মানুষজনের অভিযোগ, মূলত দূরপাল্লার বাসগুলি বর্ধমানের দিক থেকে আসার সময়ে এই পথ নিচ্ছে। লোকাল বাস তুলনায় ট্রাফিক মেনে চলাচল করছে। এক দূরপাল্লার বাসের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চালক জানান, জাতীয় সড়কে নির্দিষ্ট আন্ডারপাস ব্যবহার করতে হলে নীচে সার্ভিস রোডে যাওয়ার সময়ে গাড়ি ঘোরানোর জায়গা খুব কম। ফলে, বেশি সময় লাগছে। সামনে কোনও গাড়ি বা লরি থাকলে আরও দেরি হচ্ছে। প্রতিযোগিতার বাজারে সময় বাঁচাতেই শর্টকার্ট নিতে বাধ্য হচ্ছেন দাবি তাঁর। ওই চালকের আরও অভিযোগ, ‘‘জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ নজর না দেওয়ায় এই পরিস্থিতি।’’
এ দিন দুপুরে অবশ্য পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের আধিকারিকেরা দুর্ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন। পরে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘দুর্ঘটনা এড়াতে কী কী পদক্ষেপ করা যেতে পারে, সে ব্যাপারে পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy