Advertisement
E-Paper

‘শক্ত ঘাঁটি’র ফাটলে চোখ বিরোধীদের

লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে সাতটি বিধানসভা এলাকা। গত পাঁচ বছরে নানা ভোটে এই এলাকাগুলিতে কী ছবি দেখা গিয়েছে, এ বার কোন দল কোথায় দাঁড়িয়ে, খোঁজ নিল আনন্দবাজার।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৯ ০২:১২
প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

২০০৬ সালে বাম আমলেই নাদনঘাট কেন্দ্রে খাতা খুলেছিল তৃণমূল। নানা নির্বাচনে ১৩ বার হারের পরে এখানে জিতেছিলেন স্বপন দেবনাথ। ২০০৯ সালে এই কেন্দ্রের নাম পরিবর্তন হয়ে হয় পূর্বস্থলী দক্ষিণ। তারপর থেকে ভোটব্যাঙ্ক ক্রমেই বেড়েছে তৃণমূলের জেলা সভাপতির এই কেন্দ্রে। যদিও বিরোধীদের দাবি, ‘বিজয়রথে’ ঘুণ ধরেছে, তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বের সুফল তাঁরা পাবেন।

এই বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটার প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার। বুথ ২৬৪টি। বাসিন্দাদের বেশির ভাগই হয় চাষাবাদ, নয় তাঁতশিল্পের সঙ্গে যুক্ত। কালনা ১ ব্লকের কাঁকুরিয়া, বেগপুর, আটঘরিয়া-সিমলন, নান্দাই, সুলতানপুর, ধাত্রীগ্রাম পঞ্চায়েতের বেশির ভাগ মানুষেরই জীবিকা চাষাবাদ। আবার শ্রীরামপুর, সমুদ্রগড়, নসরতপুর, বগপুর, নাদনঘাট এলাকার মানুষেরা নির্ভরশীল তাঁতের উপরে। স্বাভাবিক ভাবেই এলাকা ভেদে তারতম্য দেখা যাচ্ছে প্রচারে। পূর্বস্থলীর নানা এলাকায় তাঁত শিল্পের দুর্দশা, নদী ভাঙন নিয়ে প্রচারে নেমেছে বিজেপি। কৃষি এলাকায় বাম, বিজেপি দু’দলেরই অস্ত্র, ফসলের দাম না পাওয়া। বিরোধীদের দাবি, কালনা ১ ব্লকের নানা পঞ্চায়েতে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বেশি। সারা বছরই বিভিন্ন গোষ্ঠী একে অপরের বিরুদ্ধে প্রশাসন এবং দলের কাছে লাগাতার অভিযোগ জানিয়েছে। বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক রাজীব ভৌমিক বলেন, ‘‘তাঁত, ভাঙনের মতো সমস্যা নিয়ে এলাকার মানুষ শাসকদলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ। ওদের অন্তর্কলহের ফসল আমরা তুলব।’’ বামেদেরও দাবি, সরকারের নীতিতে সাধারণ তাঁতিদের উন্নতি হয়নি। ফসলের দাম না পেয়ে গ্রামে গ্রামে ঋণের বোঝা চেপেছে চাষিদের ঘারে। ফলে সাধারণ ভোটারদের ভোট যাবে তাঁদের বাক্সে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

যদিও দলের সংগঠন মজবুত বলেই দাবি তৃণমূল নেতাদের। তাঁরা জানান, ভোট ঘোষণা হওয়ার আগেই মাঠে নেমে পড়েছেন স্বপনবাবু। প্রথমে ব্লকভিত্তিক কর্মী সম্মেলন, পরে গোষ্ঠীকলহের ছিদ্র বোজাতে প্রতিটি পঞ্চায়েতকে নিয়ে আলাদা আলাদা ভাবে বসেছেন তিনি। বেশ কিছু নেতা-কর্মী, যাঁদের সঙ্গে নানা কারণে দলের দূরত্ব হয়েছিল, তালিকা তৈরি করে তাঁদের সঙ্গেও কথা বলেছেন স্বপনবাবু। প্রতিটি বৈঠকে তিনি নেতা কর্মীদের বার্তা দিয়েছেন, ‘নিজের বুথ নিজে জেতান।’ তাঁর সঙ্গে স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘‘বিধানসভা জেতাতে পারলে আমার অস্তিত্ব থাকবে, আপনাদেরও। হারলে সরতে হবে।’’

তল্লাট তল্লাশি

পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভা
বর্ধমান পূর্ব লোকসভা

লোকসভা ২০১৪
তৃণমূল ৯৪২১৬ (৫১%)
বিজেপি ২৪৩০৪ (১৩%)
কংগ্রেস ৪৩৫৪ (২%)
বামফ্রন্ট ৫৬৭২৪ (৩১%)

বিধানসভা ২০১৬
তৃণমূল ১০৪৩৯৮ (৫৩%)
বিজেপি ১৯০০৩ (১০%)
কংগ্রেস *
বামফ্রন্ট ৬৬৭৩২ (৩৪%)

*এই ভোটে বাম-কংগ্রেস আসন সমঝোতা করেছিল

২০১৪-র লোকসভা ভোটে তৃণমূল ভোট পেয়েছিল ৫১ শতাংশ। বামফ্রন্টের ভাগে ছিল ৩১ শতাংশ ভোট। বিধানসভায় ভোট বাড়ে দু’তরফেই। মোদী হাওয়ায় বিজেপির ভোট শতাংশ লোকসভা ভোটে ছিল ১৩ শতাংশ। বিধানসভায় তা কমে যায় ১০ শতাংশ। যদিও বিজেপি নেতাদের দাবি, এই পাঁচ বছরে দলের সংগঠন অনেক মজবুত হয়েছে। পূর্বস্থলীর নসরতপুর এলকায় দলের ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে বলেও নেতাদের দাবি। এই পঞ্চায়েত এলাকাকে গুরুত্ব দিয়েছে তৃণমূলও। একাধিক বৈঠক হয়েছে। ভোটারদের মন পেতে, স্বনির্ভর গোষ্ঠী, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর মহিলাদেরও তৃণমূল মাঠে নামিয়েছে বলে দাবি বিরোধীদের। তৃণমূল সূত্রের খবর, যে সমস্ত মহিলারা ছোট-বড় সভায় আসেন না, তাঁদের বাড়ির উঠোনে গিয়ে চাটাই বৈঠক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

স্বপনবাবু বলেন, ‘‘তাঁতের হাট-সহ অজস্র উন্নয়ন মূলক প্রকল্প রয়েছে। সাধারণ মানুষ কি কি সুবিধা পেয়েছেন, তা প্রচারে তুলে ধরা হচ্ছে। গোটা দল এক হয়ে প্রচারে নেমেছে।’’ পূর্বস্থলী ১ ব্লক তৃণমূল নেতা দিলীপ মল্লিকেরও দাবি, ‘‘বিরোধীদের সংগঠন কোথায়? দেখবেন, বহু বুথে এজেন্টও দিতে পারবে না।’’

Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯ TMC BJP CPM
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy