Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

জিএসটি-র ‘কোপে’ মালা, আক্ষেপ

করজ গ্রাম পঞ্চায়েতের এই গ্রামের শিল্পীরা পাট, জরি, ‘শিট’ পেপার, প্লাস্টিকের ফুল গেঁথে মালা তৈরি করেন। তা রফতানি করেন রাজ্যের নানা বাজারেও। কিন্তু এ বার ছবিটা বেশ আলাদা বলে জানান তাঁরা।

মালা গাঁথতে ব্যস্ত দু’জন, কাটোয়ার দুর্গা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

মালা গাঁথতে ব্যস্ত দু’জন, কাটোয়ার দুর্গা গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

সুচন্দ্রা দে
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৯ ০০:১৭
Share: Save:

জরি, পাট, ফুল-সহ নানা উপকরণের দর ‘জিএসটি’র জেরে বেড়েছে অনেকটাই। এই পরিস্থিতিতে পুজোর মরসুমে সমস্যায় কাটোয়ার দুর্গা গ্রামের পাটের মালা তৈরির সঙ্গে যুক্ত প্রায় পঁচিশ জন শিল্পী। তাঁরা জানান, তাঁদের মালার চাহিদা রয়েছে বাজারে। কিন্তু চাহিদার সঙ্গে
তাল মিলিয়ে জোগান দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

করজ গ্রাম পঞ্চায়েতের এই গ্রামের শিল্পীরা পাট, জরি, ‘শিট’ পেপার, প্লাস্টিকের ফুল গেঁথে মালা তৈরি করেন। তা রফতানি করেন রাজ্যের নানা বাজারেও। কিন্তু এ বার ছবিটা বেশ আলাদা বলে জানান তাঁরা। কেন এই হাল?

শিল্পী দুলাল চুনারির ব্যাখ্যা, ‘‘প্রায় তিন দশক এই কাজে যুক্ত। মালা তৈরির সব উপকরণেই জিএসটি বসেছে। ফলে, কলকাতার বড়বাজারের পাইকার দোকানদারেরা উপকরণের দর বাড়িয়েছেন। কিন্তু আমরা মালার দাম বাড়াতে পারছি না। কারণ, ছোট ব্যবসায়ীরা তা হলে মালা কিনবেন না।’’ পাশাপাশি, পরিবহণ খরচও বেড়েছে। শিল্পীরা জানান, মালা তৈরির মুখ্য উপকরণ অর্থাৎ রঙিন ‘পাট’, জরি ও শিট পেপার, প্লাস্টিক ফুলের প্রতিটিরই দর কেজি প্রতি বেড়েছে কুড়ি টাকা। শিল্পী রাখি চুনারি, রাজু চিত্রকর, মালা চিত্রকরেরা জানান, এক একটি ছোট মালা তৈরি করতে আট থেকে দশ টাকা খরচ হচ্ছে। কিন্তু লাভ হচ্ছে না।

তা ছাড়া, অনেকেই চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে মালার জোগান দিতে পারছেন না বলে জানান শিল্পীরা। সপরিবার মালা তৈরি করেন দুলাল বাবু। তিনি জানান, এই মরসুমে এখনও অবধি ৯০০ ডজন মালা বিক্রি হয়েছে। শোলার সাজের তুলনায় এই মালার দাম কম হওয়ায় বাজারে চাহিদা রয়েছে। কিন্তু সোমা চুনারি, পায়েল চুনারিরা বলেন, ‘‘এবার পুজো অনেকটাই আগে হচ্ছে। পাশাপাশি, জিএসটি-র কারণে মালা তৈরির দরও বেড়েছে। ফলে, বরাত পাওয়া সব মালার জোগান দিতে পারিনি। যা-ও দিয়েছি, তাতেও লোকসান হয়েছে।’’

এই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে সরকারি সাহায্য জরুরি বলে মনে করছেন শিল্পীরা। তাঁরা জানান, তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরে শিল্পী হিসেবে নাম নথিভুক্ত করা নেই। তবে করজ গ্রামের প্রধান নারায়ণচন্দ্র হাজরা বলেন, ‘‘ওই শিল্পীদের অনেকেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত। তথ্য
ও সংস্কৃতি দফতরের শিল্পী কার্ডের জন্য ওই দফতরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE