প্রতীকী ছবি।
বন্ধ ঘরে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে বাবার দেহ। আর মেঝেতে কম্বলে মোড়া অবস্থায় ছেলের নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। গলায় গামছার ফাঁস। বুধবার পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের লোধনায় জোড়া দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। ঘটনার তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, প্রথমে ছেলেকে খুন করে তারপর আত্মহত্যা করেছেন বাবা। এই ঘটনায় ওই ব্যক্তির স্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার।
পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতদের নাম অতীশ মজুমদার (৩৩) এবং অমর মজুমদার (৭)। বুধবার দুপুরে লোধনা গ্রামের নবগ্রাম কলোনিতে একটি পরিত্যক্ত বাড়ি থেকে তাদের দেহ উদ্ধার হয়। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে এসে দু’টি দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের পুলিশ মর্গে পাঠান তদন্তকারীরা। এর পরেই অতীশের স্ত্রী রূপার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অতীশেরই দাদা ক্ষিতিশ মজুমদার। তার ভিত্তিতেই রূপাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নবগ্রাম কলোনিতে বাড়ি অতীশের। দিনমজুরের কাজ করতেন তিনি। প্রায় ১৩-১৪ বছর আগে খণ্ডঘোষের কুমিরখোলা গ্রামে রূপার সঙ্গে বিয়ে হয় তাঁর। দম্পতির কন্যাসন্তান নূপুরের বয়স ১২ বছর। আর ছেলে অমরের বয়স মাত্র আট। রাগারাগি করে দুই সন্তান ও স্বামীকে ছেড়ে ৬-৭ মাস আগে কুমিরকোলায় বাপের বাড়ি চলে যান রূপা। বউকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে অনেক বার কুমিরকোলায় গিয়েছিলেন অতীশ। কিন্তু শ্বশুর বাড়ি ফিরে আসেননি রূপা। সম্প্রতি অতীশের মামাও রূপাকে নিয়ে আসতে গিয়েছিলেন। তাঁকেও অপমানিত হয়ে খালি হাতে ফিরে আসতে হয়। পরিবারের দাবি, এই ঘটনা শোনার পরেই নিজের ছেলেকে শেষ করে দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন অতীশ।
অতীশের মা জ্যোৎস্না মজুমদার বলেন, ‘‘নূপুর স্নানে গিয়েছিল। ও-ই ফিরে এসে বাবা আর ভাইয়ের দেহ দেখতে পায়। বাড়িতে কান্নাকাটি শুনে ছুটে এসেছিলেন প্রতিবেশীরা।” অতীশের মামা ফটিক বিশ্বাস বলেন, ‘‘ভাগ্নের বউকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে কুমিরকোলা গিয়েছিলাম। অপমানিত হয়ে ফিরতে হয়েছে আমাকে। অতীশ বহু বার অপমানিত হয়েছে। আর সহ্য করতে না পেরেই হয়তো ছেলেকে প্রাণে মেরে আত্মঘাতী হল অতীশ।’’
বর্ধমান দক্ষিণের এসডিপিও সু্প্রভাত চক্রবর্তী বলেন, “নিজের ছেলেকে খুন করে অতীশ আত্মঘাতী হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে জানা যাচ্ছে, স্ত্রীর সঙ্গে বনিবনা হচ্ছিল না অতীশের। স্ত্রী বাপের বাড়িতে থাকছিলেন। পারিবারিক অশান্তির জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গিয়েছে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy