Advertisement
E-Paper

বৈধ নথিপত্র ছাড়াই ছুটছে বহু পুলকার

জেলা পরিবহণ দফতরের কর্মী-আধিকারিকেরা জানান, জেলার বেশিরভাগ পুলকারেরই কোনও বৈধ নথিপত্র নেই। নেই রাস্তায় চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ফিটনেস’ শংসাপত্রও। তা নজরে পড়ার পরেই জেলা পরিবহণ আধিকারিক পুলকরঞ্জন দাসমুন্সি বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুলকারগুলিতে বৈধ নথি ও শংসাপত্র রাখা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে কিছু সমস্যা দেখা দেবে ঠিকই, কিন্তু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া পুলকার চলতে দেওয়া হবে না।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:৪৯
নিয়ম না মেনেই পড়ুয়া বোঝাই করে দৌড়য় অনেক গাড়ি, অভিযোগ উঠছে আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

নিয়ম না মেনেই পড়ুয়া বোঝাই করে দৌড়য় অনেক গাড়ি, অভিযোগ উঠছে আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

পড়ুয়া বোঝাই করে বাড়ি ফেরার সময়ে দুর্ঘটনায় পড়েছিল একটি গাড়ি। গুরুতর জখম হয় এক খুদে পড়ুয়া। আসানসোলের কল্যাণপুরে সপ্তাহ দুয়েক আগে ওই ঘটনার পরে, দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটির কাগজপত্র পরীক্ষা করতে গিয়ে পরিবহণ দফতরের আধিকারিকেরা জানতে পারেন, পড়ুয়া নিয়ে পুলকার হিসাবে চলাচল করার কোনও অনুমতিই নেই সেটির। পরিবহণ আধিকারিকেরা জানান, ওই গাড়ির মালিকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের পাশাপাশি, পুলকারের বেনিয়ম রুখতে অভিযান শুরু হয়েছে। আর তাতে ধরা পড়ছে নানা বেনিয়মের তথ্য।

জেলা পরিবহণ দফতরের কর্মী-আধিকারিকেরা জানান, জেলার বেশিরভাগ পুলকারেরই কোনও বৈধ নথিপত্র নেই। নেই রাস্তায় চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ফিটনেস’ শংসাপত্রও। তা নজরে পড়ার পরেই জেলা পরিবহণ আধিকারিক পুলকরঞ্জন দাসমুন্সি বিজ্ঞপ্তি জারি করে পুলকারগুলিতে বৈধ নথি ও শংসাপত্র রাখা বাধ্যতামূলক বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে কিছু সমস্যা দেখা দেবে ঠিকই, কিন্তু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছাড়া পুলকার চলতে দেওয়া হবে না।’’

জেলা জুড়ে পুলকার চলাচলে বেনিয়মের কথা মেনে নিয়েছেন ‘আসানসোল পুলকার চালক অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক হেমন্ত মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘অধিকাংশ পুলকার বৈধ অনুমতি ছাড়া, রাস্তায় চলছে। তাতে সরকার ও পড়ুয়া, দুই পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গাড়ির মালিকদের বহু বার নথিপত্র তৈরির অনুরোধ করলেও ফল হয়নি।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, পুলকারগুলি দুর্ঘটনায় পড়লে চালকেরা সমস্যায় পড়েন। আইনি জটে জড়িয়ে পড়তে হয় তাঁদের। কিন্তু গাড়ির মালিকেরা উধাও হয়ে যান। বৈধ নথিপত্র রাখা হয় না কেন? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলকার মালিক দাবি করেন, ‘‘অনুমতির কাগজপত্র তৈরির যা খরচ, তার পরে বিশেষ লাভ থাকবে না। তখন গাড়ি চালানোর খরচ তুলতে পড়ুয়া পিছু যা ভাড়া রাখতে হবে, অভিভাবকেরা সেই টাকা দিতে রাজি হবেন না। সে ক্ষেত্রে পুলকার চালানো বন্ধই করে দিতে হবে।’’

জেলা পরিবহণ দফতরের কর্মীদের অভিযোগ, শুধু বৈধ অনুমতি বা ফিটনেস শংসাপত্র না থাকাই নয়, পড়ুয়া বহনের ক্ষেত্রেও পুলকারগুলি নিয়ম মানছে না। নিয়ম অনুযায়ী, একটি অটোতে পাঁচ জনের বেশি বহন করা চলবে না। অটোর চার পাশে জাল বসাতে হবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, এক-একটি অটোয় ৮-১০ জন করে পড়ুয়া নিয়ে যাওয়া হয়। যে গাড়িতে দশ জনের বেশি পড়ুয়া তোলার কথা নয়, সেগুলিতে জনা কুড়ি খুদেকে তোলা হচ্ছে, এমন ছবিও ধরা পড়েছে বলে অভিযোগ।

জেলার পরিবহণ আধিকারিক পুলকরঞ্জন দাসমুন্সি জানান, বৈধ কাগজপত্র না থাকায় সরকারের রাজস্বেরও ক্ষতি হচ্ছে। দুর্ঘটনায় পড়লে পড়ুয়ারা কোনও সরকারি আর্থিক সুবিধা পাবে না। পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় প্রায় হাজার তিনেক পুলকার চলে। সেগুলির অধিকাংশেরই বৈধ অনুমতি নেই। রাজস্বে ক্ষতির পরিমাণ বছরে প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা। পুলকরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘এই বেনিয়ম মানা হবে না।’’

Poolcar Illegal Valid documents
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy