E-Paper

পথে নামার সিদ্ধান্ত মিনিবাস-অটোর

টোটোর দাপটে যাত্রী না মেলার অভিযোগে সোমবার থেকে দুর্গাপুরে মিনিবাস ও অটো ধর্মঘট শুরু হয়। দুর্গাপুর মহকুমার প্রায় আড়াইশো মিনিবাস ও হাজার দুয়েক অটোএই ধর্মঘটে শামিল হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০২৫ ০৯:৩৪
বুধবারও গড়ায়নি অটোর চাকা। দুর্গাপুরে সিটিসেন্টারে।

বুধবারও গড়ায়নি অটোর চাকা। দুর্গাপুরে সিটিসেন্টারে। —নিজস্ব চিত্র।

দিন তিনেক রাস্তায় না নামার পরে, বৃহস্পতিবার থেকে দুর্গাপুরে মিনিবাস ও অটো পরিষেবা স্বাভাবিক হবে বলে জানিয়েছেন মিনিবাস মালিক ও অটোচালকেরা। টানা মিনিবাস ও অটো ধর্মঘটের জেরে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির পরেও প্রশাসন নির্বিকার, এই অভিযোগ তুলে বুধবার মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে কংগ্রেস স্মারকলিপি দিতে যায়। সেখানে পুলিশের সঙ্গে কংগ্রেস কর্মীদের ধস্তাধস্তি বাধে। এর পরে মিনিবাস মালিক সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করে প্রশাসন। বৈঠক শেষে টোটো বন্ধে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেও, এ দিন বিকেলে ওই সংগঠনের তরফে জানানো হয়, মানুষের দুর্ভোগের কথা মাথায় রেখে পরিষেবা স্বাভাবিক করা হবে আজ, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে।

টোটোর দাপটে যাত্রী না মেলার অভিযোগে সোমবার থেকে দুর্গাপুরে মিনিবাস ও অটো ধর্মঘট শুরু হয়। দুর্গাপুর মহকুমার প্রায় আড়াইশো মিনিবাস ও হাজার দুয়েক অটোএই ধর্মঘটে শামিল হয়। রাস্তায় বেরিয়ে সমস্যায় পড়তে হয় যাত্রীদের। টোটো দৌরাত্ম্যের কথা প্রশাসনকে বার বার জানিয়েও ফল না হওয়ায়, আগাম নোটিস ছাড়াই তাঁরা ধর্মঘটে নেমেছেন বলে দাবি করেছিলেন মিনিবাস মালিকেরা এবং অটোচালকেরা।

মানুষের দুর্ভোগের পরেও প্রশাসন নির্বিকার, এই অভিযোগ তুলেবুধবার মিছিল করে মহকুমাশাসকের দফতরে স্মারকলিপি দিতে যায় কংগ্রেস। জোর করে দফতরের ভিতরে ঢুকতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায় কংগ্রেস কর্মীদের। পড়ে যান জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী। নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। দেবেশের অভিযোগ, ‘‘আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য অবিলম্বে আলোচনা শুরু করা, পরিস্থিতি সামাল দিতে বিকল্পসরকারি পরিবহণ ব্যবস্থা চালু করা-সহ নানা দাবিতে স্মারকলিপি জমা দিতে যাই। কিন্তু পুলিশ আমাদেরবাধা দেয়। অকারণে হেনস্থা করে।’’ যদিও পুলিশ অভিযোগ মানেননি। তৃণমূলের মুখপাত্র উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘সরকারি দফতরের ভিতরে এ ভাবে জোর করে ঢোকা উচিত নয়। পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে।’’

পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের বাস এ দিন রাস্তায় নামানো হয়েছিল। দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, মিনিবাস ও অটো আইনি হওয়ায় কোনও বেনিয়ম থাকলে নানা ভাবে জরিমানা করা যায়। কিন্তু টোটোর বৈধতা না থাকায় দফতরের তরফেও নির্দিষ্ট ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয় না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য এ দিন দুপুরে মহকুমাশাসকের কার্যালয়ে মিনিবাস মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে একটি মিনিবাস মালিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অলোক চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে টোটো বন্ধের কোনও নির্দিষ্ট আশ্বাস আমরা পাইনি। আমরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে পরবর্তী সিদ্ধান্তের কথা জানাব।’’ অটোচালক সুজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অবৈধ টোটোর বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা প্রশাসন জানাতে পারে না। মাঝখান থেকে আমরা ভুগছি।’’

পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, তা ঠিক করতে এ দিন দুপুরে চারটি মিনিবাস মালিক সংগঠন বৈঠক করে। বৈঠক শেষে অলোক জানান, মানুষের দুর্ভোগের কথা ভেবে তাঁরা আপাতত বৃহস্পতিবার থেকে পরিষেবা স্বাভাবিক করবেন। তবে দুর্গাপুজোর মধ্যে পরিস্থিতি না বদলালে, প্রশাসনের কাছে পারমিট সমর্পণ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Auto Service Public Transport Congress

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy