Advertisement
১৯ মে ২০২৪

নির্যাতনের নালিশ, উদ্ধার নাবালিকা পরিচারিকাকে

সারা দিন কাজ করেও ঠিকমতো খাবার জোটে না। উল্টে জোটে মারধর। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে নাবালিকা পরিচারিকার উপরে এমন নির্যাতনের অভিযোগ শুনে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেন মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা। মেয়েটিকে উদ্ধার করে শিশুকল্যাণ সমিতির হাতে তুলে দিল পুলিশ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৭ ০১:৫১
Share: Save:

সারা দিন কাজ করেও ঠিকমতো খাবার জোটে না। উল্টে জোটে মারধর। দুর্গাপুরের সিটি সেন্টারে নাবালিকা পরিচারিকার উপরে এমন নির্যাতনের অভিযোগ শুনে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেন মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা। মেয়েটিকে উদ্ধার করে শিশুকল্যাণ সমিতির হাতে তুলে দিল পুলিশ। বছর ষোলোর মেয়েটির গায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অভিযুক্ত পরিবারটি অবশ্য মারধরের কথা অস্বীকার করেছে। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিটি সেন্টারের প্রফুল্ল চাকি পথে ওই বাড়িতে থাকেন রাজবাঁধের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থার আধিকারিক জয়দেব মান্না, তাঁর স্ত্রী চন্দনাদেবী ও ছেলেমেয়ে। বেশ কয়েক বছর ধরে তাঁদের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করে ঝাড়খণ্ডের ওই কিশোরী। প্রতিবেশীদের অভিযোগ, কিশোরীটির উপরে শারীরিক-মানসিক অত্যাচার করেন চন্দনাদেবী। তাঁরা প্রতিবাদ করলে মুখের উপরে দরজা-জানালা বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রতিবেশী অভীক দাস, রূপা দাসদের অভিযোগ, ‘‘মেয়েটির উপরে অমানবিক অত্যাচার করা হয়। আমরা চাই ওকে নিজের বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।’’ স্থানীয় বাসিন্দা পরিমল অগস্তি বলেন, ‘‘মেয়েটির সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে। মারধর করা হয়েছে। সম্ভবত ছ্যাঁকাও দেওয়া হয়েছে। তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’

চন্দনাদেবী অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা ওকে মেয়ের মতো দেখি। আমি ওর গায়ে হাত তুলিনি। আমার সতেরো বছরের ছেলে স্বাভাবিক নয়। সে হয়তো কখনও-কখনও অস্বাভাবিক আচরণ করে।’’ গৃহকর্তা জয়দেববাবুও দাবি করেন, ‘‘মেয়েটি আমার ছেলের দেখভাল করে। অস্বাভাবিক আচরণ করার সময়ে ছেলে নিজেকে আঘাত করে। তাকে বাঁচাতে গিয়ে চোট লাগে মেয়েটির শরীরেও।’’ নাবালিকার বাড়ির সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ রয়েছে বলে জানান তিনি।

পুলিশ জানায়, এ দিন দুপুরে প্রতিবেশীরা প্রশাসনের কাছে খবর দেন। মহকুমাশাসক মৌখিক অভিযোগ পেয়েই পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। সিটি সেন্টার ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে দেখে, বাড়িতে ওই কিশোরী ও দম্পতির অসুস্থ ছেলে রয়েছে। চন্দনাদেবীকে ফোন করে পুলিশ। বেশ কিছুক্ষণ পরে তিনি মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন। কলকাতায় বিশেষ কাজে গিয়েছিলেন বলে জানান তিনি।

পুলিশের দাবি, অভিযোগ অস্বীকার করার পাশাপাশি চন্দনাদেবী বাড়িতে ঢুকে কিছু চুরি গিয়েছে কি না, সে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। পুলিশ মেয়েটিকে নিয়ে থানায় চলে যায়। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘কিশোরীর শরীর জুড়ে আঘাতের চিহ্ন। কিন্তু তা নিয়ে কোনও উদ্বেগ ধরা পড়েনি মহিলার চোখে-মুখে।’’ মহকুমাশাসক শঙ্খবাবু বলেন, ‘‘খুবই উদ্বেগজনক ব্যাপার। কিশোরীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Minor maid maid beaten beaten Durgapur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE