Advertisement
E-Paper

পরীক্ষার ফলে ভুল নিয়ে বিক্ষোভ, মিছিল

একে তো পরীক্ষার ন’মাস পরে ফল, তাও ভুলে ভরা— এই অভিযোগে বেশ কিছু দিন ধরেই বিক্ষোভ চলছিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার উপর বিএসসি, বিকম অনার্স ও পাস কোর্সের মার্কশিটেও ভুল থাকায় বিক্ষোভ মাত্রা ছাড়ায়। সোমবারও ফল প্রকাশে দেরি, পড়ুয়াদের ভবিষ‌্যত নিয়ে অনিশ্চয়তা ইত‌্যাদি দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান বহু কলেজের শ’পাঁচেক ছাত্রছাত্রী। ক্লাস খোলা থাকলেও ছাত্রছাত্রীদের বেশিরভাগই ক্লাসে যান নি। পরে গাফিলতির কথা স্বীকার করে নেন উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৫ ০২:২৩
বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে চলছে দু’দল পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। ছবি: উদিত সিংহ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে চলছে দু’দল পড়ুয়াদের বিক্ষোভ। ছবি: উদিত সিংহ।

একে তো পরীক্ষার ন’মাস পরে ফল, তাও ভুলে ভরা— এই অভিযোগে বেশ কিছু দিন ধরেই বিক্ষোভ চলছিল বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। তার উপর বিএসসি, বিকম অনার্স ও পাস কোর্সের মার্কশিটেও ভুল থাকায় বিক্ষোভ মাত্রা ছাড়ায়।

সোমবারও ফল প্রকাশে দেরি, পড়ুয়াদের ভবিষ‌্যত নিয়ে অনিশ্চয়তা ইত‌্যাদি দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ দেখান বহু কলেজের শ’পাঁচেক ছাত্রছাত্রী। ক্লাস খোলা থাকলেও ছাত্রছাত্রীদের বেশিরভাগই ক্লাসে যান নি। পরে গাফিলতির কথা স্বীকার করে নেন উপাচার্য স্মৃতিকুমার সরকারও। তিনি জানান, খবর পাওয়া গিয়েছে ওই পরীক্ষার খাতাগুলি বেশ কিছুদিন ধরেই পড়ে ছিল। পরীক্ষকেরাও খাতা জমা দিতে দেরি করেছেন। তাতেই এই বিলম্ব। তাঁর আশ্বাস, ‘‘ফলাফলে কেন এত ভুল হয়েছে তা তদন্ত করে দেখা হবে। দেরির কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটিও গড়া হবে।’’

এ দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটি ক‌্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ-টিএমসিপি এবং কয়েকটি বামপন্থী সংগঠনের নেতৃত্বে ছাত্রছাত্রীরা দুটি পৃথক মিছিল করেন। সাড়ে ১১টা নাগাদ টিএমসিপি-র মিছিলটিকে ক‌্যাম্পাসের মধ‌্যে ঢুকতে দেওয়া হলেও অন‌্য মিছিলটিকে গেটেই আটকে দেয় পুলিশ। অনেকটা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হোক কলরবের’ ঢঙয়ে ‘হোক প্রতিবাদ’ বলে শ্লোগান দিতে শুরু করেন পড়ুয়ারা। গেটের সামনে বসেও পড়েন অনেকেই। পুলিশও মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকে প্রায় দু’ঘণ্টা। দেড়টা পর্যন্ত পরিস্থিতি একই থাকে। এরপরে বামপন্থী পাঁচ সদস‌্যেকর একটি প্রতিনিধি দলকে ভেতরে ঢুকতে দেয় পুলিশ। তাঁদের দাবি, উপাচার্য বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব বিএ পার্ট ২ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। জুনের মধ্যে পার্ট ৩ পরীক্ষার ফলও প্রকাশ করা হবে। এরপর প্রতিনিধি দলটির সদস‌্যেরা বাইরে বেরিয়ে মাইক্রোফোনে বলেন, ‘‘উপাচার্য কিছু দাবি মানলেও বেশ কিছু দাবি এখনও রয়ে গিয়েছে। আমরা শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী ও ছাত্রছাত্রীদের আরও অনেক দাবি নিয়ে প্রতিবাদে মুখর হব।’’ জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা দূর্নীতি, বিচ্যুতি নিয়ে গন কনভেনশন করারও ডাক দেন তাঁরা। তাঁদের আরও দাবি, আগামী সোমবার উপাচার্যের কাছে গণস্মারকলিপি পেশ করা হবে। তবে এর সঙ্গেই পড়ুয়াদের কথা শুনতে না চেয়ে দীর্ঘক্ষন তাঁদের গেটের বাইরে দাঁড় করিয়ে রাখার প্রতিবাদ করেন তাঁরা। বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন দাবি করেন, টিএমসিপি সংগঠনকে ভেতরে ঢুকতে দিয়ে ইচ্ছে করেই তাদের আটকে রাখা হয়েছে।

টিএমসিপি-র মিছিলটি অবশ্য ভেতরে ঢুকে উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে। উপাচার্যের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন সংগঠনের শহর সভাপতি রাসবিহারী হালদার-সহ সন্তু ঘোষ, সন্তোষ সিংহ প্রমুখ ছাত্রনেতা। ওই প্রতিনিধি দলটিও পরীক্ষার ফল নিয়ে বিভ্রান্তি ও বিলম্বের কারণে তদন্ত কমিটি তৈরির দাবি জানান। তাঁরা পার্ট ৩-এর মতো পার্ট ২ পরীক্ষার ফলাফল দ্রুত প্রকাশের জন্য উত্তরপত্রের স্পট অ্যাসেসমেন্ট করারও দাবি জানান। তাঁদের দাবি, উপাচার্য আশ্বাস দিয়েছেন, একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হবে। দ্রুত বিএ পার্ট ২ পরীক্ষার ফল প্রকাশের চেষ্টা করা হবে এবং স্পট অ্যাসেসমেন্টের দাবিও খতিয়ে দেখা হবে।

রবিবারই একটি সাংবাদিক বৈঠক করে এসএফআই বেশ কিছু ভুল মার্কশিট তুলে ধরেছিল। তাতে দেখা গিয়েছিল আসানসোল বিবি কলেজের পদার্থবিদ‌্যার এক ছাত্র দুটি মার্কশিট পেয়েছেন। একটিতে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষায় গরহাজির হলেও অন্যটিতে পাশ দেখানো হয়েছে তাঁকে। সাঁইথিয়া কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের এক পড়ুয়া আবার ১২৫ নম্বরের পুরোটাই পেয়েছেন দেখা গিয়েছে। বর্ধমানের রাজ কলেজের ৬০ শতাংশ পড়ুয়ার পার্ট ২ এক ফল অসম্পূর্ণ বলেও দাবি করেন এসএফআই নেতৃত্ব। এত অভিযোগের পরে বিশ্ববিদ‌্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ামক জানিয়েছিলেন, সোমবার থেকে পার্ট ২-এর মার্কশিট দেওয়া হবে। কলেজগুলিকে সেই মর্মে এসএমএস পাঠানো হয়েছে বলেও দাবি করেছিলেন তিনি।

এ দিন অবশ্য মার্কশিট দেওয়া শুরু হয়নি। সেই নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন সাধারণ পড়ুয়ারা। পরে টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি অশোক রুদ্র ফলাফল বিভ্রাটের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাকে দায়ী করেন। এ দিনের বিক্ষোভ নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তথাকথিত হোক কলরবকারীরা যে পদ্ধতিতে আন্দোলন করেছেন বাংলার সাধারণ ছাত্রছাত্রী তা মেনে নেননি। পড়ুয়ারা বহিরাগতদের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ঢুকতেই দেননি।’’

Hok Protibad Hok Kolorob Jadavpur University SFI TMCP B.Com B.SC agitation result examination Burdwan University
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy