হতাশ: অমিল পেনশন। বর্ধমানে। ছবি: উদিত সিংহ।
পুজোর মাঝে ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। লক্ষ্মীপুজোর আগেও মিলল নামমাত্র টাকা। বর্ধমান মুখ্য ডাকঘরে টাকা তুলতে এসে মঙ্গলবার মাথায় হাত অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীদের। বর্ধমানের ট্রেজারিতে ভল্ট ভেঙে প্রায় ৫৫ লক্ষ টাকা গায়েবের ঘটনার জেরে তৈরি হয়েছে এমন পরিস্থিতি। পাঁচ দিন কেটে গেলেও ওই ঘটনার তদন্তে পুলিশ অন্ধকারেই।
বর্ধমান ডাকঘর সূত্রে জানা যায়, ২৭ সেপ্টেম্বর পেনশনের ১ কোটি ১৯ লক্ষ ১৩ হাজার টাকা আসে। ২৯ সেপ্টেম্বর উপভোক্তাদের দেওয়ার জন্য ট্রেজারি থেকে সেই টাকা আনতে যান ডাকঘর-কর্মীরা। তখনই ধরা পড়ে, ভল্ট ভেঙে উধাও টাকা। রবিবার জেলা সিআইডি-র একটি দল ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়। সে দিনই পূর্ব বর্ধমানের পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল ট্রেজারির পুলিশ ক্যাম্পের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। মঙ্গলবার থেকে ডাকঘরের কর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু হয়েছে। পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘সব সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে তদন্ত করা হচ্ছে।’’
তদন্তকারীরা জানান, বেশ কিছু জায়গায় এখনও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। বহিরাগত কেউ ভল্ট ভেঙে থাকলে তাকে বেশ কয়েকটি গেট পেরিয়ে ট্রেজারির ভিতরে যেতে হবে, যা প্রায় অসম্ভব কাজ। ট্রেজারির নীচের তলায় পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। সেখানকার কর্মীদের জেরা করে প্রাথমিক ভাবে কোনও সূত্র মেলেনি। পুলিশকর্তারা জানান, ভল্টে কত টাকা রয়েছে, কোন প্যাকেটে বড় বা ছোট নোট আছে— এ সব ডাকঘরের কর্মীদের পক্ষেই জানা সম্ভব। বড় নোটের প্যাকেটগুলিই খোয়া গিয়েছে। কখন, কী ভাবে সেগুলি গায়েব হল, উত্তর মিলছে না সে সবের।
এই পরিস্থিতিতে মুশকিলে পড়েছেন হাজারেরও বেশি পেনশন প্রাপক। তাঁরা জানান, উৎসবের মরসুমে বাড়িতে আত্মীয়-পরিজনের আনাগোনা। এখন হাতে টাকা না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। মঙ্গলবার টাকা তুলতে ডাকঘরে লাইন দেন অনেকে। কিন্তু কাউন্টারের কর্মীরা জানিয়ে দেন, পাঁচ হাজারের বেশি টাকা কাউকে দেওয়া যাবে না।
পেনশন প্রাপক শম্পা পাল, শ্রীমতি মালিকেরা জানান, লক্ষ্মীপুজোয় প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের নিমন্ত্রণ করেছেন। কী ভাবে সে সবের খরচ মিটবে, দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘এ রকম চলতে থাকলে সংসার চালাব কী ভাবে? টাকা চুরি যাওয়ার জন্য আমাদের এই দুর্ভোগ পোহাতে হবে কেন?’’ সদুত্তর নেই ডাকঘর কর্তৃপক্ষের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy