বাণীদেবী। নিজস্ব চিত্র
স্বামীর মৃত্যুর পরে ভেবেছিলেন, ছেলের সংসারে শেষ বয়সটা কেটে যাবে। কিন্তু ছেলে টাকাপয়সা, গয়না কেড়ে নিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে, এই অভিযোগে আদালতে মামলা করেছেন বার্নপুরের বৃদ্ধা বাণী রায়। তিনি জানান, এখন রাস্তায় ঘুরে, মন্দিরে থেকে দিন কাটছে তাঁর। যদিও তাঁর ছেলে পার্থপ্রতিম রায় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
বার্নপুরের বারি ময়দান মন্দিরে রাত কাটে বছর একাত্তরের বাণীদেবীর। পুরোহিত বা পুণ্যার্থীরা খাবার দিলে খেতে পান। তিনি জানান, তাঁর স্বামী ভবানীপ্রসাদ রায় ইস্কো কারখানা থেকে ২০০১ সালে অবসর নেন। তার বছরখানেক পরে একমাত্র ছেলের বিয়ে দেন। তার পরে ছেলে স্ত্রীকে নিয়ে কলকাতার বেহালায় নিজের ফ্ল্যাটে চলে যান। এখন পার্থপ্রতিম ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে কর্মরত বলে জানান বাণীদেবী। তিনি আরও জানান, ২০১৪ পর্যন্ত তিনি স্বামীর সঙ্গে বার্নপুরে ভাড়া বাড়িতেই ছিলেন। ২০১৫ সালে স্বামী গুরুতর অসুস্থ হলে ছেলে তাঁদের কলকাতায় নিয়ে যায়। এর কিছু দিন পরেই বাণীদেবী স্বামী মারা যান।
বাণীদেবীর অভিযোগ, স্বামীর মৃত্যুর পর থেকেই ছেলে ও পুত্রবধূ তাঁর উপরে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমার কাছে থাকা প্রায় তিন লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট সার্টিফিকেট, ৪০ হাজার টাকা নগদ ও প্রায় ১২ ভরি সোনা ওরা কেড়ে নেয়। বাড়ি থেকে উৎখাত করে পাশে একটি বস্তির ভাড়াবাড়িতে রেখে আসে। আমি সেখানে থাকতে না চাওয়ায় পরে বেহালার একটি বৃদ্ধাশ্রমে রাখে। সেখানে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। বৃদ্ধাশ্রমের তরফে খবর দিলেও কেউ আসেনি। শেষমেশ প্রাণ বাঁচাতে আমি বার্নপুরে চলে এসেছি।’’
তাঁকে মন্দিরে থাকতে দেখে এগিয়ে আসেন প্রতিবেশী প্রশান্ত মজুমদার। তাঁর সাহায্যে আসানসোল আদালতের তিন আইনজীবী রঞ্জিত সিংহ, সোমনাথ চট্টরাজ ও শিবশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় বাণীদেবীর পক্ষে আদালতে খোরপোষের মামলা দায়ের করেন। তাঁর বয়ান লিপিবদ্ধ হয় বর্ধমানের সমাজকল্যাণ দফতরের আধিকারিকের কাছেও। ১৯ অগস্ট বাণীদেবীর ছেলেকে আদালতে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক সৌরভ রায়। পার্থপ্রতিমর সঙ্গে বৃহস্পতিবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অবশ্য বলেন, ‘‘এই অভিযোগ ঠিক নয়। আমি আমার আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করেই যা বলার বলব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy