মুদির দোকান খুলতে চেয়ে পুরসভার কাছে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করেছিলেন দুর্গাপুরের বি-জোনের শ্রীকান্ত সাউ। বছর পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু লাইসেন্স এখনও পাননি।
দুর্গাপুর স্টেশন লাগোয়া এলাকায় বিদ্যুৎ স্বর্ণকার ও ডিপিএল কলোনিতে সুমিত বসুও ব্যবসা শুরু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অপেক্ষা চলছে লাইসেন্সের জন্য।
পুরসভার বিরুদ্ধে ট্রেড লাইসেন্স দিতে গড়িমসির অভিযোগে সরব হচ্ছেন দুর্গাপুরের অনেকেই। শুধু নতুন লাইসেন্স দেওয়া নয়, এক অভিযোগ উঠেছে পুনর্নবীকরণের ক্ষেত্রেও। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, এলাকায় বেশ কিছু কল-কারখানা বন্ধ হয়ে পড়ায় কাজ হারিয়েছেন বহু শ্রমিক-কর্মী। তার প্রভাব পড়েছে শহরের অর্থনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে অনেকে ছোটখাট ব্যবসা শুরু করতে চাইছেন। কিন্তু বাধ সাধছে লাইসেন্সের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষা। পুরসভা সূত্রে অবশ্য জানা গিয়েছে, বেশ কিছু সমস্যার কারণেই কিছু দিন নতুন লাইসেন্স দেওয়া বা পুনর্নবীকরণ বন্ধ ছিল। নিয়ম-কানুনে কিছু বদল এনে আবার সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
কী রকম সমস্যা ছিল? পুরসভার কর্তারা জানান, এডিডিএ, ডিএসপি, এএসপি, ডিপিএল, ডিটিপিএস, এইচএফসিএল, এফসিআই-সহ নানা সরকারি সংস্থার জমি রয়েছে। তেমন জমিতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার অনুমোদনের বাইরেও অনেকে জমি দখল করে দোকান গড়ার পরিকল্পনা জমা দেন। অতীতে এমন বহু ট্রেড লাইসেন্স পুরসভা দিয়েছে। এ বার তাতে রাশ টানা হচ্ছে। এমন আবেদনের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বিবেচনা করে পাকা লাইসেন্স না দিয়ে ‘বাফার লাইসেন্স’ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
নানা সময়ে ট্রেড লাইসেন্স জাল করার অভিযোগও উঠেছে। দিন তিনেক আগে ৫৪ ফুট এলাকার এক ব্যবসায়ী লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ করতে এলে পুর-কর্মীরা দেখেন, তা জাল। ওই ব্যবসায়ীর দাবি, তিনি এক জনকে ছ’হাজার টাকা দিয়ে লাইসেন্সটি করিয়েছেন। সেটি আসল বলেই জানতেন এত দিন। এ ছাড়া ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে আগেও নানা অভিযোগ উঠেছে। বাম আমলে লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে পক্ষপাত, দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। তৎকালীন পুরবোর্ড যদিও তা মানতে চায়নি।
পুরসভা সূত্রের দাবি, তৃণমূলের বোর্ড ক্ষমতায় আসার পরে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট ‘গাইডলাইন’ তৈরির পরিকল্পনা হয়। গত বছর দেড়েকে সেই কাজে গতি আসে। তার পরে সমস্ত নিয়ম-কানুন মেনে জমা দেওয়া আবেদনের ভিত্তিতে লাইসেন্স দেওয়া শুরু হয়েছে। কিছু শর্ত আরোপ এবং নিয়ম শিথিলের পরিকল্পনাও হয়েছে জানিয়ে পুরসভার কমিশনার কস্তুরী সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘ব্যবসা-বাণিজ্য ও শহরের উন্নয়ন যাতে থমকে না যায় তাই বেশ কিছু পদ্ধতি নেওয়া হয়েছে। শর্তসাপেক্ষে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy