বাঁ দিকে, চলছে সিটুর বিক্ষোভ-অবরোধ। ডান দিকে, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি। মঙ্গলবার গাঁধী মোড়ে বিকাশ মশানের তোলা ছবি।
নানা দাবিতে সিটুর জাতীয় সড়ক অবরোধে যানজট হল জাতীয় সড়কে। ঘণ্টাখানেক ধরে অবরোধ চলায় আটকে গেল কয়েক হাজার যানবাহন। যাত্রীর দুর্ভোগের মধ্যে পড়লেও পুলিশ প্রথমে অবরোধ তুলতে উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ।
দুর্গাপুরের গাঁধী মোড়ে মঙ্গলবার দুপুরে শেষমেশ পুলিশই অবরোধ তোলে। তবে ততক্ষণে অনেক সিটু কর্মী-সমর্থক নিজেরাই বাড়ির পথ ধরতে শুরু করেছেন। সিটুর বিরুদ্ধে জাতীয় সড়ক অবরোধ ও কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের কাজে বাধা ও নিগ্রহের অভিযোগ এনেছে পুলিশ। মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদানেই অবরোধ হয়েছে দাবি করে সিটুর পাল্টা অভিযোগ, পুলিশের মারে তাদেরই তিন সমর্থক জখম হয়েছেন।
বন্ধ রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা খোলা, ন্যায্য বেতন, শ্রম আইন সংশোধন-সহ নানা দাবি এবং বিভিন্ন কল-কারখানা থেকে সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের কাজ থেকে সরানো, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো-সহ নানা অভিযোগে সিটু এ দিন দুর্গাপুরে জমায়েতের ডাক দিয়েছিল। ঠিক ছিল, ২ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে গাঁধী মোড়ের পাশে জমায়েত হবে। ওই জায়গা বড় জমায়েতের জন্য উপযুক্ত নয় জানিয়ে পুলিশ অন্য জায়গা বেছে নতুন করে আবেদন করতে বলে। কিন্তু, সিটুর তরফে সেই আবেদন করা হয়নি বলে জানান পুলিশ কমিশনার অজয় নন্দ। এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ পূর্ব নির্ধারিত জায়গায় প্রথমে জড়ো হন সিটু কর্মী-সমর্থকেরা। ছিলেন সংগঠনের নেতা শ্যামল চক্রবর্তী, দীপক দাশগুপ্ত, বংশগোপাল চৌধুরী, বিনয়েন্দ্রকিশোর চক্রবর্তী, জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অমল হালদার, সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিক প্রমুখ। খানিক পরে কিছু সিটু কর্মী-সমর্থক পুলিশের ব্যারিকেড সরিয়ে জাতীয় সড়কে ওঠার চেষ্টা করেন। সেই সময়ে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তিন সিটু কর্মী জখম হন বলে অভিযোগ। পুলিশের পাল্টা দাবি, ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে জখম হন বেশ কয়েক জন পুলিশকর্মী। কিছুক্ষণের মধ্যেই জাতীয় সড়কে বসে পড়েন কয়েক হাজার সিটু কর্মী-সমর্থক।
এর ফলে জাতীয় সড়ক ধরে যাত্রিবাহী বাস থেকে বহু লরি, ট্রাক, গাড়ি, মোটরবাইক দাঁড়িয়ে পড়ে। অনেকে শহরের ভিতরের রাস্তা দিয়ে ডিভিসি মোড়ে গিয়ে জাতীয় সড়ক ধরেন। অভিযোগ, পুলিশ এই সময় অবরোধ হঠাতে তেমন উদ্যোগী হয়নি। এডিসিপি (পূর্ব) অমিতাভ মাইতি অবশ্য জানান, জোর করে অবরোধ তুলতে গেলে আইন-শৃঙ্খলা জনিত সমস্যা হতে পারত। তাই ধীরেসুস্থে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অবরোধ ওঠার পরেও যান চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও ঘণ্টাখানেক সময় লাগে।
এ দিন আন্দোলনে বহু মানুষ যোগ দেওয়ায় খুশি সিপিএম ও সিটু নেতৃত্ব। আটকে পড়া বাস ও যানবাহনের যাত্রীদের অনেককে জমায়েতের দিকে এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে। সিটু নেতাদের দাবি, ন্যায্য দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন করায় বহু সাধারণ মানুষ যোগ দিয়েছিলেন। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক অমল হালদার বলেন, ‘‘ন্যায্য দাবিতে স্বতঃস্ফূর্ত জমায়েত হয়েছে। পথচলতি মানুষও যোগ দেন। দুর্ভোগের অভিযোগ ওঠেনি।’’
এ দিন বিকেলে আবার একপ্রস্থ যানজট হয় পানাগড়ে। পুলিশ জানায়, বীরভূম সফর সেরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফিরছিলেন। তাই দার্জিলিং মোড় থেকে রেলসেতু পর্যন্ত রাস্তা যানজট মুক্ত রাখতে দুপুর সওয়া ২টো থেকে পানাগড় বায়ুসেনার গেট থেকে যান নিয়ন্ত্রণ করে পুলিশ। কয়েকশো গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। আটকে পড়ে স্কুল ফেরত পড়ুয়ারা। বিকেল সওয়া ৩টে নাগাদ মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় পানাগড় পেরোনোর পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy