Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
galsi

পরিবারের পাশে পড়শিরা

এলাকার যুবক জয়দেব মাঝি থেকে গিরিশ সাহাদের দাবি, “ক্লাব থেকে পুজোর পরে তিন-চরশো জনকে খাওয়ানো হয়। সেই টাকা এ বার এখানে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মেটেপাড়ার ১১০টির মতো বাড়ি থেকে এক কেজি করে চাল ও ১০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়েছে।

গ্রামে পুলিশের টহল। নিজস্ব চিত্র

গ্রামে পুলিশের টহল। নিজস্ব চিত্র

কাজল মির্জা
গলসি শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:০২
Share: Save:

শুধু গ্রামের বাসিন্দারা নন, আশপাশের গ্রাম থেকেও অনেকে খবর পেয়ে ছুটে আসছেন গলসির সাঁকো গ্রামের মেটেপাড়ায়। দূরদূরান্ত থেকে আত্মীয়-কুটম্বেরা বাড়িতে আসছেন নিহত বালকের বাবা-মা-ঠাকুমাকে সান্ত্বনা দিতে। এই পরিস্থিতিতে অতিথিদের দেখভালে এগিয়ে এসেছেন বুদ্ধদেব দলুইয়ের প্রতিবেশীরা।মনসা পুজোর পরে পাড়ার সবাই মিলে খিচুড়ি খাওয়া হয়। সে জন্য বেশ কয়েক হাজার টাকা খরচ হয়। এ বার মনসা পুজোর সন্ধ্যাতেই পাড়ায় মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে গিয়েছে। খিচুড়ি খাওয়ানো বন্ধ। স্থানীয় ‘মা মনসা ক্লাব’ চত্বরে পাড়ার যুবকেরা আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, ওই টাকা দিয়ে তাঁরা সন্দীপদের বাড়িতে যে আত্মীয়-কুটুম্বেরা আসছেন, তাঁদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। শুক্রবার সকাল থেকে সেই ব্যবস্থা শুরু হয়ে গিয়েছে। এক দিকে রান্না চলছে, আর এক দিকে বারোয়ারিতলার চাতালে খাওয়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে।

এলাকার যুবক জয়দেব মাঝি থেকে গিরিশ সাহাদের দাবি, “ক্লাব থেকে পুজোর পরে তিন-চরশো জনকে খাওয়ানো হয়। সেই টাকা এ বার এখানে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে মেটেপাড়ার ১১০টির মতো বাড়ি থেকে এক কেজি করে চাল ও ১০ টাকা করে চাঁদা তোলা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সাত দিন ধরে সন্দীপদের বাড়িতে আসা আত্মীয়-কুটুম্বদের খাওয়াতে পারব।’’ এ দিন সকালে চা-বিস্কুট, জলখাবারে মুড়ি-কুমড়োর তরকারি, দুপুরে ভাত, পোস্ত, কুমড়ো-আলুর তরকারি, ডালের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আশপাশের গ্রামের বাসিন্দা আলিয়া বিবি, হোসেনারা বেগমেরা বলেন, ‘‘৯ বছরের বাচ্চাকে মেরে দিয়েছে শুনে থাকতে পারলাম না। সকালেই ছুটে এসেছি। এসে দেখছি, পাড়ার লোকজন পরিবারটিকে আগলে রেখেছে।’’ পরিবারের আত্মীয় সনাতন দলুই, সুস্মিতা দলুইদের কথায়, ‘‘পাড়ার ভিতর এ রকম ঘটনা ঘটলে অনেকে এড়িয়ে যেতে চায়, পুলিশি ঝামেলা বা অন্য নানা ভয়ে পাশে দাঁড়ায় না। এখানে পরিবেশ দেখে ধারণাটা বদলে গেল।’’

গ্রামের বাসিন্দা মানিক মাঝি, অজয় মাঝি, লালু মাঝিদের কথায়, ‘‘মর্মান্তিক ঘটনার কথা শুনে অনেকেই দূর থেকে ছুটে আসছেন। সন্দীপদের বাড়ির লোকজন তো তাঁদের জল দেওয়ার মতো অবস্থাতেও নেই। দূরদূরান্ত থেকে আসা মানুষজনের খেয়াল রাখা আমাদের কর্তব্য। তাই এই ব্যবস্থা করেছি।’’ নিহত বালকের বাবা বুদ্ধদেববাবু ও মা সান্ত্বনাদেবী বলেন, ‘‘পাড়ার ছেলেরা আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস ও ভরসা ফেরাতে সাহায্য করছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Galsi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE