সুচেতা চক্রবর্তী ও তাঁর মেয়েকে হত্যার মামলায় মঙ্গলবার আদালতে সাক্ষ্য দিলেন এক ব্যাঙ্ক অফিসার। ঘটনার সময়ে অভিযুক্ত সমরেশ সরকার দুর্গাপুরের মামরা বাজারে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ম্যানেজার ছিলেন। এ দিন শ্রীরামপুর আদালতে সাক্ষ্য দেন যিনি, সেই অরবিন্দ চট্টোপাধ্যায় সেই সময় ওই ব্যাঙ্কে সহকারী ম্যানেজার পদে ছিলেন।
মামলার সরকারি আইনজীবী জয়দীপ মুখোপাধ্যায় জানান, খুনের ঘটনার পরে গত বছর ১ সেপ্টেম্বর পুলিশ দুর্গাপুরের ওই ব্যাঙ্কে যায়। কিছু জিনিস বাজেয়াপ্ত করা হয়। এ দিন আদালতে ওই সব জিনিস চিহ্নিত করেন অরবিন্দবাবু। খুনের ঘটনা ঘটেছিল ২৮ অগস্ট রাতে। ব্যাঙ্কের রেজিস্টার খাতায় লেখা আছে, সে দিন দুপুর ১২টা নাগাদ সমরেশ অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে বেরিয়ে যান। ব্যাঙ্কের লকার রেজিস্টারেও দেখা গিয়েছে, সুচেতা মাঝেমধ্যেই সেখান যেতেন। প্রথম দিকে তিনি সুচেতা চক্রবর্তী লিখতেন। শেষ দু’বার তিনি ‘সরকার’ পদবি লেখেন। আইনজীবী জয়দীপবাবু জানান, লকারের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, বেশ কয়েক বার রেজিস্টারে সই করেছেন সুচেতা। কিন্তু তাঁর পরে সিসি ক্যামেরা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শেষ বার ফুটেজে অবশ্য সুচেতার সঙ্গে সমরেশকে বেরোতে দেখা গিয়েছে।
ব্যাঙ্কের উপরে কোয়ার্টারে থাকতেন সমরেশ। সেখানে আলমারি থেকে সুচেতার লেখা বেশ কিছু প্রেমপত্রও তদন্তকারীরা উদ্ধার করেন। সুচেতার সই করা ব্যাঙ্কের কিছু কাগজপত্রও সমরেশের কোয়ার্টারে ছিল। এ দিন আদালতে অরবিন্দবাবু বলেন, ‘‘সুচেতাকে চিনতাম। তিনি মেয়েকে নিয়ে ব্যাঙ্কে আসতেন। সমরেশের টেবিলে বসে দু’জনে কথা বলতেন।’’ জয়দীপবাবু বলেন, ‘‘দুর্গাপুরের ওই ব্যাঙ্ক এবং সমরেশের কোয়ার্টার থেকে উদ্ধার হওয়া জিনিসপত্র আদালতে পেশ করা হয়েছে।’’
গত বছর ২৮ অগস্ট সমরেশ দুর্গাপুরের বিধাননগর আবাসনে সুচেতা এবং তাঁর চার বছরের মেয়ে দীপাঞ্জনাকে খুন করেন বলে অভিযোগ। সুচেতার দেহ তিনটি ভাগ করে ব্যাগে ভরেন। দীপাঞ্জনার দেহ ভরেন অন্য একটি ব্যাগে। এর পরে সেগুলি ব্যারাকপুর থেকে শেওড়াফুলির মাঝে গঙ্গায় ভুটভুটি থেকে ফেলতে যাওয়ার সময়ে যাত্রীদের হাতে ধরা পড়ে যান। সেই মামলারই শুনানি চলছে শ্রীরামপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক রাজা চট্টোপাধ্যায়ের এজলাসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy