Advertisement
E-Paper

Durga Puja 2021: দল বেঁধে বিসর্জনে বালাই নেই মাস্কের

শনিবারই নানা ঘাটে কাঠামো জমতে দেখা যায়। পুরসভার যদিও দাবি, কাঠামো জমলেই ঘাট পরিষ্কার করে দেওয়া হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২১ ০৭:৩২
আউশগ্রামের রামনগরে ‘ভাসান মেলা’য় জমায়েত।

আউশগ্রামের রামনগরে ‘ভাসান মেলা’য় জমায়েত। নিজস্ব চিত্র।

ষষ্ঠীর সন্ধ্যা থেকেই মণ্ডপে-মণ্ডপে ভিড় জমেছিল। পুজোর ক’টা দিন পেরিয়ে সেই ভিড় বজায় রইল বিসর্জনের শোভাযাত্রাতেও। মাস্ক ছাড়া শোভাযাত্রায় শামিল হওয়া, স্বাস্থ্যবিধির বালাই না থাকার ছবি দেখা গিয়েছে পূর্ব বর্ধমান জেলার নানা প্রান্তেই। তা দেখে চিকিৎসক থেকে বাসিন্দাদের অনেকেই করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় ভুগছেন।

কালনা ও কাটোয়ায় ভাগীরথীর ঘাটে শুক্রবার রাতে প্রতিমা বিসর্জনে ভাল ভিড় জমে। কালনা শহরে মহিষমর্দিনীতলায় দু’টি ঘাট বিসর্জনের জন্য চিহ্নিত করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শহর ও আশপাশের নানা পুজোর প্রতিমা বিসর্জন হয়। সে জন্য শহরের বিভিন্ন রাস্তায় মাইক ও বাজনা-সহ শোভাযাত্রায় ছিল রীতিমতো ভিড়। বেশির ভাগের মুখে মাস্ক ছিল না। স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই বহু মণ্ডপে সিঁদুরখেলা হয় বলে অভিযোগ। ঘাটে অবশ্য ভিড় নিয়ন্ত্রণে পুলিশের সক্রিয়তা দেখা যায়।

কালনায় শোভাযাত্রায় যোগ দেওয়া পূর্ণিমা ঘোষ, মধুসূদন মুখোপাধ্যায়দের দাবি, ‘‘দু’টি ডোজ় টিকা নেওয়া হয়ে গিয়েছে। তাই ভয় না পেয়ে চুটিয়ে আনন্দ করেছি।’’ কাটোয়া ও দাঁইহাটে ভাগীরথীর ঘাটগুলিতেও বির্সজনে ভাল জমায়েত হয়। পুলিশ-প্রশাসন ও পুরসভার তরফে মাইকে বারবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আবেদন জানানো হলেও, অনেকের মুখেই মাস্ক ছিল না। কাটোয়া শহরের বাসিন্দা গৌতম সাহার দাবি, ‘‘এ বার পুজোয় ভিড় দেখে মনে হল যেন আমরা অতিমারি পেরিয়ে এসেছি। প্রশাসনের প্রচার প্রায় কেউই কানে তোলেনি। ফলে, ফের সংক্রমণ বাড়তে পারে।’’ কালনা মহকুমা হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম বিশ্বাসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এমন ভিড়ে করোনা সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এত প্রচার সত্ত্বেও মাস্ক ব্যবহার না করা দুর্ভাগ্যজনক!’’

বিধি ভেঙে ‘ভাসান মেলায়’ জমায়েতের অভিযোগ উঠেছে আউশগ্রামে। আউশগ্রামের রামনগর পঞ্চায়েতের বারো সতীডাঙায় দশমীতে এলাকার চার-পাঁচটি গ্রামের বারোয়ারি ও পারিবারিক পুজোর প্রতিমা নিয়ে আসার রেওয়াজ রয়েছে। সে উপলক্ষে মেলা বসে। করোনার কারণে গত বছর মেলা বন্ধ ছিল। তবে এ বার কয়েকটি পুজোর প্রতিমা নিয়ে যাওয়া হয় সেখানে। মেলাও বসে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েক হাজার মানুষের জমায়েত হয়। তবে করোনা-পরিস্থিতির কারণে তাঁরা প্রতিমা নিয়ে যাননি বলে জানান দু’-তিনটি পারিবারিক পুজোর উদ্যোক্তারা। গোস্বামীখণ্ডের একটি পুজোর আয়োজক পদ্মনাভ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “করোনার কারণে এ বার ওই মেলায় যোগ দেওয়া হয়নি পরিবারের তরফে।’’ রামনগর পঞ্চায়েতের প্রধান সুকুমার আঁকুড়ের দাবি, “পঞ্চায়েত থেকে মেলার অনুমতি দেওয়া হয়নি। তবু কিছু পুজো আয়োজক রীতি মেনে প্রতিমা নিয়ে আসেন। তবে বেশি ক্ষণ জমায়েত হতে দেওয়া হয়নি।’’

ষষ্ঠীর সন্ধ্যা থেকেই বর্ধমান শহরের নানা মণ্ডপে ভিড় উপচে পড়ে। পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, তাঁরা মাস্ক ছাড়া, কাউকে মণ্ডপে ঢুকতে দেননি। কারও মাস্ক না থাকলে, তা তাঁদের দেওয়া হয়েছে। উদ্যোক্তা মনীশ সিংহ, নুরুল আলম, মলয় দত্তবণিকেরা দাবি করেন, ‘‘মণ্ডপে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে। বাইরে মানুষ বেপরোয়া হলে কিছু করার নেই।’’ বর্ধমান দুর্গাপুজো সমন্বয় কমিটির সহ-সম্পাদক সুকান্ত দাস বলেন, ‘‘উদ্যোক্তাদের তরফে কোভিড-বিধি মেনেই পুজোর আয়োজন হয়েছে।’’ স্ত্রীকে নিয়ে আসানসোল থেকে বর্ধমানে পুজো দেখতে আসা সুমন্ত রায়ের দাবি, ‘‘আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি। কিন্তু অনেকের বেপরোয়া প্রবণতা দেখে ভয় লাগছে।’’

তবে শুক্র ও শনিবার বর্ধমানে বিসর্জনের বিশেষ ভিড় দেখা যায়নি। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ছোট ও বড় পুজোগুলিকে আলাদা দিন বিসর্জনের কথা বলা হয়েছে। এ দিন একশোটি পুজোর বিসর্জন হওয়ার কথা থাকলেও, তা হয়নি। তাই আজ, রবিবার চাপ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। রানিসায়র, শ্যামসায়র, কমলসায়র-সহ নানা ঘাটে বন্দোবস্ত হয়েছে। শনিবারই নানা ঘাটে কাঠামো জমতে দেখা যায়। পুরসভার যদিও দাবি, কাঠামো জমলেই ঘাট পরিষ্কার করে দেওয়া হচ্ছে।

জেলার পুলিশ সুপার কামনাশিস সেন বলেন, ‘‘করোনা-বিধি ভাঙার অভিযোগে পুজোর প্রতিদিন অন্তত ৩০০ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মাস্ক বিলি করা হয়েছে।’’ কাটোয়ার বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসব পালনের জন্য প্রচার করা হলেও কিছু মানুষ স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে উদাসীন। তবে পুর-কর্মীরা মণ্ডপ ও বির্সজনের ঘাটগুলিতে সচেতন করার কাজ করেছেন।’’ মহকুমাশাসক (কাটোয়া) জামিল ফতেমা জেবাও বলেন, “স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য পুলিশ-প্রশাসন চেষ্টা চালিয়েছে। কিন্তু মানুষ সচেতন না হলে, খুবই মুশকিল।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy