তাঁর পেনশনের টাকাতেই সংসার চলে। অথচ, তাঁদের যত্নআত্তি তো দূরঅস্ত্, ঠিক মতো খেতেও দেন না ছেলে-বৌমা। পেনশনের টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকলেই তুলে নেন ছেলে। এর প্রতিবাদ করতেই ছেলের হাতে বেধড়ক মার খেলেন বৃদ্ধ। আদুর গায়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশের দ্বারস্থ হলেন ৭৩ বছরের বৃদ্ধ। বর্ধমানের ভাতারের ঘটনা।
তাঁর ছেলে বেকার। বৃদ্ধের অভিযোগ, তাঁর পেনশনের টাকায় সংসার চলে। কিন্তু তাঁকেই খেতে দেওয়া হয় না। এ নিয়ে বলতে যেতে ছেলে এবং বৌমা মিলে বেধড়ক মারধর করেছে। ভাতারের শিলাকোট গ্রামের বাসিন্দা অজিত দাস কৈবর্ত্য নামে ওই বৃদ্ধের শুক্রবার অভিযোগে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ। ভাতার থানার ওসি অরুণ কুমার সোম বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
অজিত ভাতারের বনপাশ পঞ্চায়েতে এগ্জিকিউটিভ অফিসার ছিলেন। ২০১২ সালে অবসরগ্রহণ করেন। বছর দেড়েক আগে স্ত্রী মারা গিয়েছেন। বাড়িতে ছেলে গণেশ, পুত্রবধূ মৌমিতা এবং নাতিনাতনি আছে। অজিত জানান, পারিবারিক কিছু জমিজমাও রয়েছে। তবে ছেলে বেকার। তাই তাঁর টাকাতেই সংসার চলে।
শুক্রবার দুপুরে সেই অজিত খালি গায়ে ভাতার থানায় গিয়ে ছেলে এবং পুত্রবধূর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করেন। দেখা যায় বৃদ্ধের হাত-পা-সহ শরীর জুড়ে আঘাতের চিহ্ন। বৃদ্ধের অভিযোগ, বৃহস্পতিবার রাত ১১টা থেকে প্রায় ২টো পর্যন্ত তাঁর উপর অত্যাচার চালিয়েছেন ছেলে ও পুত্রবধূ। লাঠি, রড এমনকি হাতুড়ি দিয়েও তাঁকে পেটানো হয়েছে।
অজিতের কথায়, ‘‘আমাকে ঠিকমতো খেতে দেওয়া হয় না। ওষুধপত্র এনে দিতে বললে দেওয়া হয় না। এ নিয়ে ছেলে বৌমার কাছে বলতে গিয়েছি বলে আমাকে এ ভাবে মারধর করা হয়েছে। আমার বিষয়-সম্পত্তি লোভে ওরা আমাকে মেরে দিতে চাইছে।’’
অজিতবাবু জানান, ছেলের দুটো বিয়ে। প্রথম স্ত্রী ছেড়ে চলে যাওয়ার পর দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। প্রথমপক্ষের এক ছেলে এবং এক মেয়ে গণেশের। দ্বিতীয় পক্ষের দুটি মেয়ে। গণেশের এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। বাকি তিন সন্তান এবং স্ত্রীকে নিয়ে গণেশ পৈতৃক বাড়িতেই থাকেন। অজিত বলেন, ‘‘আমার পেনশনের টাকাতেই ওদের সবার পেট চলে। তার পরেও আমার ওপর এমন অত্যাচার হচ্ছে।’’ তাঁর আরও অভিযোগ ছেলে মদের নেশায় আসক্ত। প্রায়শই মদ্যপান করে তাঁকে মারধর করেন। যদিও অভিযুক্তদের দাবি, তাঁরা মারধর করেননি। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy