Advertisement
E-Paper

কয়লার চাঁই চাপা পড়ে মারা গেলেন খনিকর্মী

খনিকর্তারা জানান, সাধারণত খনিগর্ভে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরে ওই জায়গায় কিছুক্ষণ কয়লার গুঁড়ো ওড়ে এবং বিস্ফোরণের ধোঁয়ায় এলাকা ঢেকে থাকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২১ ০৬:৪৭
নরসমুদা কোলিয়ারি। এখানেই ঘটে দুর্ঘটনা।

নরসমুদা কোলিয়ারি। এখানেই ঘটে দুর্ঘটনা। নিজস্ব চিত্র

খনি দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এক ইসিএল কর্মীর। শনিবার দুপুরে ইসিএলের নরসমুদা কোলিয়ারির ঘটনা। ঘটনার পরে মৃতের নিকটাত্মীয়কে চাকরি দেওয়ার দাবি জানান তাঁর সহকর্মীরা। ইসিএল সূত্রে নাম জানা যায়, মৃতের নাম সফি খান (৫৮)। তিনি ওই খনিতে বিস্ফোরক বহন ও তা ফাটানোর কাজ করতেন। ইসিএল খনি দুর্ঘটনায় নির্দিষ্ট নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছে।

কোলিয়ারি সূত্রে জানা গিয়েছে, চার নম্বর ভূগর্ভস্থ খনিতে এ দিন সকালের পালিতে (শিফ্‌ট) অন্যদের সঙ্গে কাজে নামেন সফি। কী ভাবে ঘটে দুর্ঘটনা? প্রাথমিক তদন্তে নেমে সফির সহকর্মীদের থেকে ইসিএল কর্তারা জেনেছেন, খনিগর্ভে কয়লার চাঁই ভাঙার জন্য বিস্ফোরণ ঘটাতে ওই কর্মী-সহ পাঁচ জনের একটি দল খনিগর্ভে গিয়েছিলেন। ১৫টি ডিটোনেটর ব্যাটারির তারের সঙ্গে জুড়ে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এর পরে কয়লার চাঁই পরীক্ষা করার সময়ে দলের সদস্যেরা দেখেন তিনটি ডিটোনেটর ফাটেনি। সেগুলি ফের ব্যাটারির তারের সঙ্গে জোড়ার কাজ করছিলেন সফি। তখন আচমকা খনির ছাদ ও দেওয়ালের একাংশ ওই কর্মীর উপরে ধসে পড়ে।

দুপুর দেড়টা নাগাদ খনিগর্ভ থেকে দুর্ঘটনার খবর কার্যালয়ে আসে। উদ্ধারকারী দল খনিগর্ভে ঢুকে মৃত অবস্থায় সফিকে উদ্ধার করে উপরে তোলে। সহকর্মীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, খনিতে কাজ করার সময়ে সফির গায়ে খনির ছাদ ও দেওয়ালের চাঁই ধসে পড়ে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনার সময় মৃত ওই খনিকর্মীর সঙ্গে ঘটনাস্থলেই ছিলেন তাঁর সহকর্মী বিজেশ কুমার। তিনি বলেন, ‘‘চার দিকে তখন ধোঁয়া। কিছুই বোঝা যাচ্ছিল না। এর মধ্যেই ডিটোনেটর ও বিস্ফোরণস্থল পরীক্ষা করতে যান সফি। আমরা নিষেধ করলেও উনি শোনেননি। এর মধ্যেই খনির ছাদ ও দেওয়ালের একাংশ ধসে পড়ে। মুহূর্তে শোনা যায়, আর্তনাদ। বুঝতে পারি সফি চাপা পড়েছেন।’’ প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই সফিকে বাঁচাতে বিজেশ-সহ অন্যরা ঘটনাস্থলে যান। কয়লার চাঁই সরিয়ে সফির থেঁতলে যাওয়া দেহ বার করেন তাঁরা।

খনিকর্তারা জানান, সাধারণত খনিগর্ভে বিস্ফোরণ ঘটানোর পরে ওই জায়গায় কিছুক্ষণ কয়লার গুঁড়ো ওড়ে এবং বিস্ফোরণের ধোঁয়ায় এলাকা ঢেকে থাকে। নিয়ম অনুযায়ী, ধোঁয়া কেটে যাওয়ার পরে এবং কয়লার গুঁড়ো মেঝেতে থিতিয়ে যাওয়ার পরে বিস্ফোরণস্থল ও বিস্ফোরক পরীক্ষা করতে হয়। এ দিন সে নিয়ম কতটা মানা হয়েছে, তা নিয়ে বিভাগীয় তদন্ত করা হচ্ছে।

কোলিয়ারির কাছেই কর্মী আবাসনে পরিবার নিয়ে বাস করতেন সফি। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারের সকলে কোলিয়ারিতে আসেন। মৃতের মেয়ে গাজালা খাতুন বলেন, ‘‘সময় পেরনোর পরেও বাবা বাড়ি না ফেরায় আমরা খোঁজ শুরু করি। তখনই দুর্ঘটনার খবর পেলাম আমরা।’’ এ দিকে, মৃতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণের দাবি জানান শ্রমিক সংগঠনগুলি। সংগঠনগুলির নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন খনি কর্তৃপক্ষ। এইচএমএস নেতা জয়ন্ত মিত্র জানান, কর্তৃপক্ষ ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করেছেন।

Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy