Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
ইস্কোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ

চাকরি নয় চার মৃতের পরিবারকে

ইস্কোর দুর্ঘটনায় মৃত পাঁচ শ্রমিকের মধ্যে এক জনের পরিজনই চাকরি পাবেন, জানালেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। বাকি চার জনের স্ত্রী বা সন্তান না থাকায় তাঁদের কাউকে চাকরি দেওয়া যাবে না বলে শনিবার জানানো হয়।

মৃত শ্রমিকের বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

মৃত শ্রমিকের বাড়িতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০১৭ ০৩:১৯
Share: Save:

ইস্কোর দুর্ঘটনায় মৃত পাঁচ শ্রমিকের মধ্যে এক জনের পরিজনই চাকরি পাবেন, জানালেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ। বাকি চার জনের স্ত্রী বা সন্তান না থাকায় তাঁদের কাউকে চাকরি দেওয়া যাবে না বলে শনিবার জানানো হয়। এ দিন সন্ধ্যায় মৃত এক শ্রমিকের বাড়িতে গিয়ে তাঁর স্ত্রীর হাতে ক্ষতিপূরণের পাঁচ লক্ষ টাকার চেক ও নিয়োগপত্র তুলে দেন কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প প্রতিমন্ত্রী তথা আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। সঙ্গে ছিলেন ইস্কোর সিইও রাজেশকুমার রাঠী।

৬ মে ইস্কোর স্টিল মেল্টিং বিভাগে গলানো লোহা ছিটকে মৃত্যু হয় মোট পাঁচ শ্রমিকের। কর্মীদের নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। কারখানা পরিদর্শন করে গিয়েছেন সেলের চেয়ারম্যান পিকে সিংহ। এ দিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ বানর্পুরের রহমতনগরে মৃত শ্রমিক শেখ শাহনওয়াজের বাড়িতে যান বাবুল ও ইস্কোর সিইও। মৃতের স্ত্রীর হাতে পাঁচ লক্ষ টাকার চেক ও ইস্কোর নিয়োগপত্র তুলে দেন বাবুল। তিনি জানান, এই পাঁচ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। ইস্কো কর্তৃপক্ষের তরফে আরও সাত-আট লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে, যা এর আগে ইস্কোয় কখনও হয়নি। বাবুল বলেন, ‘‘ভয়াবহ দুর্ঘটনা। আমি আরও আগে আসতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নিয়োগপত্র ও ক্ষতিপূরণের চেক এক সঙ্গে আনতে দেরি হল।’’

শ্রমিক সংগঠনগুলি সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্ঘটনার পরে ইস্কোর তরফে মৃত শ্রমিকদের পরিবারগুলিকে চিঠি দিয়ে ক্ষতিপূরণ ও চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ দিন বাবুল জানান, শাহনওয়াজ ছাড়া বাকি চার জন শ্রমিকের স্বজনকে চাকরি দেওয়া যাবে না। ইস্কোর সিইও রাজেশকুমার রাঠী জানন, এর কারণ, বাকি চার মৃত শ্রমিকের স্ত্রী বা সন্তান নেই। রয়েছেন বৃদ্ধ বাবা-মায়েরা। তাঁদের নিয়োগ করা সম্ভব নয়। তাই তাঁরা শুধু ক্ষতিপূরণ পাবেন।

সেক্ষেত্রে ওই চিঠি দেওয়া হল কেন? ইস্কো সূত্রের দাবি, দুর্ঘটনার পরে তড়িঘড়ি চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরে খতিয়ে দেখা গিয়েছে, চার জন শ্রমিকের চাকরি পাওয়ার মতো নিকটাত্মীয় কেউ নেই। স্থায়ী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে অবশ্য স্ত্রী-সন্তান না থাকলেও অন্য কোনও পরিজনকে চাকরি দেওয়া হয়। এই ঠিকা শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তা হচ্ছে না কেন? সিইও জানান, স্থায়ী শ্রমিকদের মতো সুযোগ-সুবিধা ঠিকা শ্রমিকদের দেওয়া সম্ভব নয়।

শ্রমিক সংগঠনগুলি এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে। আইএনটিইউসি-র কেন্দ্রীয় নেতা হরজিৎ সিংহের হুঁশিয়ারি, ‘‘আমরা এর বিরুদ্ধে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করব। প্রয়োজনে আদালতেও যাব।’’ সিটু নেতা বংশগোপাল চৌধুরীর বক্তব্য, ‘‘অত্যন্ত অমানবিক সিদ্ধান্ত। আমরা সেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE