Advertisement
E-Paper

প্রকাশ্যেই মাটি কাটা, বিপন্ন জঙ্গল

অভিযোগ, মলানদিঘি ও বনকাটি পঞ্চায়েত এলাকার জঙ্গলের ভিতরে রীতিমতো মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০ ০০:০১
দেউলের জঙ্গলে মাটি কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন পরিবেশপ্রেমীরা। নিজস্ব চিত্র

দেউলের জঙ্গলে মাটি কাটা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন পরিবেশপ্রেমীরা। নিজস্ব চিত্র

মাটি-মাফিয়াদের নজরে কাঁকসার দেউলের জঙ্গল।। পরিবেশপ্রেমীদের অভিযোগ, ফি দিন একটু-একটু করে জঙ্গলের ভিতর থেকে মাটি কেটে পাচার করা হচ্ছে। ফলে, বনের পরিবেশ বিপন্ন হচ্ছে।

অভিযোগ, মলানদিঘি ও বনকাটি পঞ্চায়েত এলাকার জঙ্গলের ভিতরে রীতিমতো মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। অথচ, বাইরে থেকে দেখে বিষয়টি বোঝার উপায় নেই। জঙ্গলের মাঝে সরু রাস্তা দিয়ে ভিতরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। তার পরে জঙ্গলের মধ্যে ফাঁকা জায়গা বেছে শুরু হয় মাটি কাটা। মাটি কাটার পরে, তা ট্রাক্টরে করে পাচার করা হয়। ওই জায়গায় গাছ থাকলে বাদ পড়ে না বৃক্ষনিধনও। মাটির সঙ্গে ট্রাক্টরে করে গাছও পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ।

এর জেরে, জঙ্গলের মাঝে অনেকটা করে ফাঁকা জায়গা তৈরি হচ্ছে। জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে বলে পরিবেশপ্রেমীদের অভিযোগ। এমনকি, কিছু জায়গায় মাটি কেটে খাল করে দেওয়া হয়েছে। বর্ষায় খালগুলিতে জল জমে বন্যপ্রাণীর বিপদের আশঙ্কাও রয়েছে বলে অনুমান পরিবেশকর্মীদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কাঁকসার দেউলের জঙ্গলে শাল, পিয়াল, মহুয়া-সহ নানা ধরনের গাছ রয়েছে। জঙ্গলের মাঝ দিয়ে চলে গিয়েছে লাল মোরামের রাস্তা। সেই রাস্তা ধরে পৌঁছনো যায় কয়েক শতাব্দী প্রাচীন শ্যামারূপা মন্দিরে। আরও কিছুটা এগিয়ে দেউলকে কেন্দ্র করে ৮১ একর জায়গা নিয়ে নব্বইয়ের দশকের শুরুতে জেলা পরিষদ ‘দেউল পার্ক’ তৈরি করে। এই জঙ্গল বহু প্রাচীন। এলাকার প্রবীণেরা জানান, প্রচলিত মত অনুযায়ী, গৌড়ের রাজা দেবপালের আমলে কর্নসেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ জয়ের স্মারক হিসেবে জঙ্গলের মধ্যে দেউল তৈরি করেছিলেন ইছাই ঘোষ। ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের মতে, দেউলটি তৈরি হয় মধ্যযুগের শেষ দিকে। সেখানে পাশেই ঘেরা জঙ্গলে হরিণ, ময়ূর প্রভৃতি বন্যপ্রাণ রয়েছে। অনেকেই সেখানে বেড়াতে, বনভোজন করতে যান।

এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, দ্রুত মাটি-মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য বন্ধ না হলে যে ভাবে মাটি কাটা হচ্ছে, তাতে ঐতিহ্যবাহী এই জঙ্গল বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাঁরা জানান, প্রথমে রাতে মাটি কাটা হত। কিন্তু এখন দিনদুপুরেও চলছে মাটি-পাচার।

এ ভাবে কেটে নেওয়া মাটি মূলত পাচার হয় বিভিন্ন ইটভাটায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বন দফতরের উদাসীনতাতেই এই হাল। পাশাপাশি, জনজীবনেও প্রভাব পড়ছে। সঞ্জয় মুর্মু নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, ‘‘জঙ্গলের শুকনো কাঠ, পাতা সংগ্রহ করে আমাদের দিন চলে। এ ভাবে জঙ্গলে মাটি মাফিয়াদের হাত পড়লে আমরা বিপাকে পড়ব।’’

ডিএফও (বর্ধমান) দেবাশিস শর্মা বলেন, ‘‘বন দফতরের সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ও কর্মীদের দ্রুত নজরদারি চালাতে বলছি। অনিয়ম দেখলেই আইনি পদক্ষেপ করার জন্যও বলা হচ্ছে।’’

Soil Digging Kaksa Deul
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy