বিজেপির বর্ধমান সদরেরসহ-সভাপতি রমন শর্মাকে ব্যাজ পরানো হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রের ‘পিএম বিশ্বকর্মা যোজনার’ উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দুর্গাপুরের অমরাবতীর সিআরপি ক্যাম্পে ওই প্রকল্পের ভার্চুয়াল-উদ্বোধন হয়। রবিবার সরকারি ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন কেন্দ্রের ক্রেতা সুরক্ষা ও খাদ্য প্রতিমন্ত্রী অশ্বিনী চৌবে, কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া-সহ অন্যরা। কিন্তু সেখানে বিজেপির কিছু পদাধিকারী নেতাকে ব্যাজ ও চন্দনের ফোঁটা পরিয়ে বরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, কী ভাবে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলের লোকজনকে বরণ করা হল। বিজেপি অবশ্য বিতর্কে আমল দিচ্ছে না। সরকারি অনুষ্ঠানটির আয়োজক, কেন্দ্রীয় অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প মন্ত্রক।
বিরোধীদের দাবি, ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিজেপির বর্ধমান সদর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা, সহ-সভাপতি রমন শর্মা, জেলা সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ দত্ত, জিতেন চট্টোপাধ্যায়-সহ বিভিন্ন স্তরের বিজেপি নেতা। বিরোধীদের অভিযোগ, তাঁদের ব্যাজ পরিয়ে এবং চন্দনের ফোঁটা দিয়ে বরণ করা হয়। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “কেন্দ্রের মন্ত্রীর অনুষ্ঠানে চেয়ার যাতে ফাঁকা না থাকে, তাই বিজেপি নেতারা গিয়েছিছেন। নির্লজ্জের মতো সংবর্ধনা নিয়েছেন। কী ভাবে সরকারের অনুষ্ঠানে বিজেপি নেতাদের সংবর্ধনা জানানো হচ্ছে?” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের আবার তোপ, “সরকার ও দল যে দু’টি আলাদা বিষয়, তা তৃণমূল ও বিজেপি, কোনও দিনই মানতে চায় না। এ সব তারই প্রতিফলন।” বিজেপ অবশ্য অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে। রমনের বক্তব্য, “আমন্ত্রণ পেয়ে গিয়েছিলাম। রাজ্যের বহু সরকারি অনুষ্ঠানেই তৃণমূলের লোকজনকে দেখা যায়।” অভিজিৎ দত্ত বলছেন, “কেন্দ্র সরকারের অনুষ্ঠান ছিল। বিভিন্ন পদাধিকারী ছাড়াও বহু সাধারণ মানুষ সেখানে ছিলেন। তৃণমূল ও বিরোধীরা সব কিছুতেই রাজনীতি খোঁজেন।”
পাশাপাশি, এ দিন থেকে ছুতোর, কামার, ধোপা, নাপিত-সহ মোট ১৮টি ক্ষেত্রের কারিগরদের আর্থিক ভাবে স্বয়ম্ভর করে তুলতে দেশ জুড়ে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বকর্মা যোজনা চালু হয়েছে। রাজ্যের কলকাতা, দুর্গাপুর ও শিলিগুড়িতে প্রকল্পের ভার্চুয়াল-উদ্বোধন অনুষ্ঠান হয়। মন্ত্রী অশ্বিনী জানান, ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এর ফলে বিশেষ করে গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন হবে।
তবে প্রকল্প নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। কেন্দ্রের ‘আয়ুষ্মান ভারত’ ও রাজ্যের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের প্রসঙ্গও ওঠে। সুরেন্দ্র বলেন, “এই রাজ্যে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প চলছে। কেমন চলছে, তা আপনারা সবাই জানেন। আয়ুষ্মান ভারতের ক্ষেত্রে কেন্দ্র ৬০ ভাগ, রাজ্য ৪০ ভাগ অর্থ দিয়ে থাকে। বিশ্বকর্মা যোজনায় পুরো অর্থ দেবে কেন্দ্র। রাজ্য শুধু চালু করবে। আশা করি, সমস্যা হবে না।” অশ্বিনীও জানান, দেশের কাঠামোয় কেন্দ্র প্রকল্প চালু করে। রাজ্য সরকার সেগুলির বাস্তবায়ন করে। যদিও, বিজেপির বক্তব্যে আমল দিচ্ছেন না তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, “যেখানে কেন্দ্র বিভিন্ন প্রকল্পে রাজ্যের প্রাপ্য ন্যায্য টাকা আটকে রেখেছে, সেখানে বিজেপির নেতা, মন্ত্রীদের মুখে এ সব কথা মানায় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy