কিছু জমিতে এখনও জমে আছে জল, গাছ বাঁচাতে বেঁধে রাখছেন চাষিরা, ভাতারে। নিজস্ব চিত্র
তিন দিন নিম্নচাপ ‘বুলবুল’-এর জের ছিল পূর্ব বর্ধমানে। তাতেই বিপদের মুখে জেলার ১৪৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ১,১৪৮টি মৌজা। ক্ষতির সম্ভাবনা প্রায় ২৬৮ কোটি টাকা। বুধবার জেলা কৃষি দফতরের প্রশাসনিক বৈঠকে এমনটাই রিপোর্ট দিয়েছেন আধিকারিকেরা।
জেলা কৃষি দফতরের দাবি, বুলবুলের ধাক্কায় বৃষ্টি এবং ঝোড়ো হাওয়া বয়েছে জেলার প্রায় সমস্ত এলাকায়। পাকা আমন ধান, পেঁয়াজের বীজতলা, আনাজের খেত এবং জলদি আলু চাষে ক্ষতি হয়েছে। জেলার উপ-কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, “দু’দিন ধরে নানা এলাকা ঘুরে, প্রাথমিক ভাবে ওই রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। মূলত নিচু এলাকা ও রাস্তার ধারের জমির ফসলে ক্ষতি হয়েছে।’’
কৃষি দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, জেলায় এই মরসুমে ২ লক্ষ ১৮ হাজার ১৭ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। তার মধ্যে ক্ষতির মুখে পড়েছে ৪৭ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমি। আউশগ্রাম, কাটোয়া, কেতুগ্রামের সঙ্গে মেমারি ২ ব্লকে তেমন ক্ষতি না হলেও সবচেয়ে ক্ষতি হয়েছে মেমারি ১ ব্লকে। এখানে ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১৮টি মৌজায় ১৪,৬০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছিল। তার মধ্যে ১০ হাজার হেক্টরের বেশি জমির ধান ক্ষতির মুখে। বর্ধমান সদরের ৮৪টি, কালনার ৪৭টি ও কাটোয়া মহকুমার ১৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতও ক্ষতির তালিকায় রয়েছে।
এ ছাড়া, জেলা জুড়ে ২৯৮ হেক্টর জমির মধ্যে ১০০ হেক্টরের পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে উদ্যানপালন দফতর। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, কালনা ১ ব্লকে ৭৫ হেক্টর ও কালনা ২ ব্লকে ২৫ হেক্টর জমি নষ্ট হতে পারে। বেশ কিছু এলাকায় পোখরাজ জাতের আলু লাগানো শুরু হয়েছিল। বৃষ্টির জেরে জমিতে জল জমে যাওয়ায় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে তাতেও। কৃষি দফতরের রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্ধমান সদরে ১৩টি পঞ্চায়েতের ৮৪টি মৌজায় ৭৮০ হেক্টর জমির আলু ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। এর মধ্যে মেমারি ১ ব্লকেই রয়েছে ৭০০ হেক্টর। জেলায় আনাজ উৎপন্ন হয় ৩,২০৩ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে ১,৯৩২ হেক্টর জমির আনাজ নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দফতরের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। কালনা ২, পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বেশির ভাগ আনাজ খেত জলে তলিয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ মহম্মদ ইসমাইল বলেন, “ফসলের নমুনা সংগ্রহের পরে চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy