Advertisement
E-Paper

বছর ঘুরতেই অনাথ দু’মেয়ে

দুই নাতনির বড় জন কিছুটা আন্দাজ করতে পারলেও ছোটটি শুধুই আবাক হয়ে চেয়ে রয়েছে তাঁদের দিকে। 

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৯ ০১:০৪
মৃত বাদল সরকারের বাবা-মা।

মৃত বাদল সরকারের বাবা-মা।

বছর খানেক আগে মাকে হারিয়েছে দুই মেয়ে। তার পর থেকে বাবাই ছিল সঙ্গী। কালীপুজোর রাতে দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যুতে এক রকম অনাথ হয়ে পড়ল দুই কিশোরী।

রবিবার মাঝরাতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের উপর পালসিট উড়াললুলের কাছে লরির সঙ্গে ধাক্কায় তুবড়ে যায় একটি যাত্রিবাহী গাড়ি। ওই গাড়িতেই আরও তিন পুলিশকর্মীর সঙ্গে ছিলেন বাদল সরকার। সহকর্মীদের সঙ্গে ঠাকুর দেখতে যাচ্ছিলেন পেশায় পুলিশের গাড়ি চালক ওই ব্যক্তি। সোমবার দুপুরে বর্ধমান শহরের বিধানপল্লি এলাকায় বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় ছেলেকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গিয়েছেন বৃদ্ধ রতন সরকার ও বাসন্তী সরকার। ছেলের নানা বয়সের ছবি হাতে নাগাড়ে কেঁদে চলে‌ছেন তাঁরা। দুই নাতনির বড় জন কিছুটা আন্দাজ করতে পারলেও ছোটটি শুধুই আবাক হয়ে চেয়ে রয়েছে তাঁদের দিকে।

প্রতিবেশিরা জানান, এলাকায় স্বজ্জন হিসেবেই পরিচিত ছিলেন বাদলবাবু। যে কোনও প্রয়োজনে এগিয়ে আসতেন সবার আগে। এমন মানুষকে হারিয়ে পাড়ার কালীপুজো উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও অন্নকূট বাতিল করেছেন তাঁরা। পুজো কমিটির তরফে পবিত্র পাল ও পাপাই শিকদার বলেন, ‘‘ওঁর এই মৃত্যুর পরে আর অনুষ্ঠান বা খাওয়াদাওয়ার কোনও মানসিকতা নেই। শোক জানিয়ে পাড়ার মণ্ডপ-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় ফ্লেক্স লাগানো হয়েছে।’’ কাছে একটি ক্লাবে জগদ্ধাত্রী পুজো হওয়ার কথা ছিল সামনে। ওই ক্লাবের তরফে সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাদলের মৃত্যুর কারণে পুজো, সমস্ত অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।’’

বাদলবাবুর মা বাসন্তীদেবী জানান, বড় নাতনি বর্নিশার বয়স ১১। সে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল গার্লস স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। ছোট বর্ণিকার বয়স পাঁচ। সে সবেমাত্র স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। রতনবাবু বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে সঙ্গে ওরাও সব হারাল। বড় হলে কি জবাব দেব জানি না।’’

ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে উত্তর ২৪ পরগণার পলতার শান্তিনগরের অরুণকুমার বালা। তাঁর স্ত্রী কেয়াদেবী জানান, অচেনা নম্বর থেকে ভোরে ফোন করে খবর দেওয়া হয় তাঁদের। অষ্টম শ্রেণির মেয়েকে নিয়ে পেয়েই অকূল পাথারে পড়েছেন, দাবি তাঁর। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর পর থেকে টানা ডিউটি চলছিল। বলেছিল ক’দিন ছুটি নেবে। একেবারে ছুটি নিয়ে নিল।’’

হুগলির গোঘাটের শ্যামবাটির বিশ্বজিৎ সামুই ও আরামবাগের প্রবীরকুমার হাটির বাড়িতেও ভাইফোঁটার আগের দিনে এমন ঘটনায় শোকাচ্ছন্ন সবাই। বিশ্বজিতবাবুর বাবা শৈলেনবাবু বলেন, “ছেলে প্রতি মাসে বাড়িতে এসে এক-দু’দিন থাকত। এই বয়সে ছেলের মৃত্যুর খবর সহ্য করা যাচ্ছে না।”

Palsit Accident
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy