জেলার গ্রামীণ এলাকায় নলবাহিত পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পগুলি পঞ্চায়েতের হাতে তুলে দেওয়ার কাজ শুরু করল জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। এই হস্তান্তর প্রক্রিয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আইএসজিপি সেলের সঙ্গে যৌথ ভাবে প্রকল্পগুলি সচল কিনা বা কোনও মেরামতির দরকার আছে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখা হবে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হস্তান্তরের পর পঞ্চায়েত স্তরে গঠিত গ্রামীণ জল ও স্বাস্থ্যবিধান কমিটি এই প্রকল্পের তদারকি করবে। ইতিমধ্যেই জেলার বেশির ভাগ পঞ্চায়েতে ওই কমিটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাদের এক দফা প্রশিক্ষণের পর্বও শেষ। এ বার পঞ্চায়েত ওই প্রকল্পের দায়িত্ব বুঝে নেবে। তবে যে সমস্ত প্রকল্প থেকে একাধিক পঞ্চায়েতে জল সরবরাহ করা হয়, সেখানে জল সরবরাহের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতগুলির হাতে গেলেও প্রকল্পের দেখভাল করবে জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। এ ব্যাপারে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বর্ধমান ভুক্তির নির্বাহী বাস্তুকার সুশান্ত বোস জানান, গোটা রাজ্যের সঙ্গে বর্ধমানেও এই হস্তান্তরের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওই কাজ শেষ করে পঞ্চায়েতের নির্দিষ্ট কমিটির হাতে প্রকল্পের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হবে।
দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা জেলায় নলবাহিত জল সরবরাহ প্রকল্পের সংখ্যা প্রায় ১৮০টি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জেলার গ্রামীণ অংশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫৩ শতাংশ মানুষ এই প্রকল্পের আওতাধীন। এই হস্তান্তর শেষ হলে ওই সমস্ত এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা অনেকটা মিটে যাবে বলে আশা করেছেন সভাধিপতি দেবু টুডু। পঞ্চায়েতের হাতে তদারকির দায়িত্ব গেলে বাড়ি বাড়ি সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু হবে বলেও তিনি জানান। প্রাথমিক বিদ্যালয়, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের মতো প্রতিষ্ঠানগুলিতেও পানীয় জল পৌঁছে দিতে সুবিধে হবে বলেও আশাবাদী ওই কমিটি। গরম পড়তেই অনেক জায়গায় জলস্তর নেমে গিয়ে জল সঙ্কট শুরু হয়। সেখানে নলবাহিত জল পৌঁছে দেওয়া গেলে অনেকটাই সুবিধে হবে বলে মত অনেকের।
এ ব্যাপারে আইএসজিপি-র বর্ধমান জেলার কো-অর্ডিনেটর অনির্বাণ রায় জানান, পঞ্চায়েতের জল ও স্বাস্থ্যবিধান কমিটিকে আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করবে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর এবং জনস্বাস্থ্য ও কারিগরি দফতর। এ ছাড়াও চতুর্দশ অর্থ কমিশন থেকে পাওয়া অনুদান থেকেও প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে।
এত দিন ওই প্রকল্পে কোনও সমস্যা দেখা দিলে তা মিটতে অনেকটা সময় লাগত বলে এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। এখন তদারকির কাজ পঞ্চায়েত পাওয়ায় যে কোনও সমস্যার চটজলদি সমাধান করা যাবে বলে অনেকের আশা। পানীয় জল সরবরাহের পাশাপাশি প্রতিটি পঞ্চায়েতে জলের গুণগত মান নিয়ে নিয়মিত জল পরীক্ষা করা হবে বলেও জানান অনির্বাণবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy