Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

রোগী-মৃত্যু,  তাণ্ডব চলল কাটোয়ায়

রোগীমৃত্যুতে চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ তুলে গোলমাল বাধল কাটোয়া হাসপাতালে। হাসপাতালের ওষুধ মজুতের দায়িত্বে থাকা এক কর্মীকে মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে ওই রোগীর পরিজনেদের বিরুদ্ধে। এমনকি, গণ্ডগোলে মদত দেওয়ার অভিযোগে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থাও নিতে চলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

কাটোয়া হাসপাতালে গোলমালের পরে। নিজস্ব চিত্র

কাটোয়া হাসপাতালে গোলমালের পরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:২৯
Share: Save:

রোগীমৃত্যুতে চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ তুলে গোলমাল বাধল কাটোয়া হাসপাতালে। হাসপাতালের ওষুধ মজুতের দায়িত্বে থাকা এক কর্মীকে মারধরেরও অভিযোগ উঠেছে ওই রোগীর পরিজনেদের বিরুদ্ধে। এমনকি, গণ্ডগোলে মদত দেওয়ার অভিযোগে হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির এক কর্মীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থাও নিতে চলেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকালে বুকে ব্যথা নিয়ে কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি হন মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা শিশির ঘোষ (৫৫)। শ্বাসকষ্ট হওয়ায় অক্সিজেন দিতে হয় তাঁকে। দুপুর আড়াইটে নাগাদ মৃত্যু হয় শিশিরবাবুর। এরপরেই জনা দেড়শো পরিচিতদের নিয়ে হাসপাতালে হাজির হন রোগীর আত্মীয়রা। চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে আপদকালীন বিভাগের সামনে চিৎকার শুরু করেন তাঁরা। বিকেল ৪টে নাগাদ আপদকালীন বিভাগে ঢুকে ওষুধ মজুতের ঘরে থাকা কর্মী মানস ঘোষের কলার ধরে তাঁকে গালিগালাজ করা হয়, কান ও গালে চড় মেরে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। তাণ্ডবকারীদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মদ্যপ ছিলেন বলেও হাসপাতালের কর্মীদের দাবি। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ততক্ষণে অবশ্য রোগীর আত্মীয়রা চম্পট দিয়েছেন।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দুপুর বারোটা নাগাদ ওই রোগীকে চিকিৎসকের নির্দেশ মতো অক্সিজেন মাস্ক পরানো হয়। কিন্তু পরে ওষুধ দিতে গিয়ে দেখা যায় তিনি মাস্ক খুলে শৌচালয়ে চলে গিয়েছেন। তার কিছুক্ষণ পরে মারা যান তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রোগীর এক আত্মীয়ের যদিও দাবি, ‘‘সময় থাকতে এইচডিইউতে ভর্তি করালে বেঁচে যেতেন রোগী।’’

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুললেও এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি রোগীর পরিবার। এমনকি মৃত্যুর কারণ জানতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ময়না-তদন্ত করতে চাইলেও রাজি হয়নি। হাসপাতাল সুপার রতন শাসমল বলেন, ‘‘দুপুরে এইচডিইউ-র ৬টি শয্যাই ভর্তি থাকায় জায়গা ছিল না। তাই রোগীকে বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু বর্ধমান নিয়ে যাওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।’’

সুপারের আরও দাবি, হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, মৃতের নিকটাত্মীয় পঞ্চা রজক এই ঝামেলায় মদত দেন। তিনি একাধিক বার সুপারের কার্যালয়ে ঢুকে হুজ্জুতি করেন বলেও তাঁর অভিযোগ। সুপার জানান, ওই কর্মীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও স্বাস্থ্য ভবনে জানানো হয়েছে। চিকিৎসায় আদৌ গাফিলতি ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Medical Negligence Katwa Hospital Patient
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE