Advertisement
E-Paper

নার্সিংহোমে মৃত্যু রোগীর, ভাঙচুর

খবর পেয়ে মৃতের প্রতিবেশী ও পরিজনদের একাংশ ভিড় জমান। শুরু হয় ভাঙচুর। পুলিশ বাধা দিলেও জনতা থামেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০১:০৭
নার্সিংহোমে তখন চড়াও হয়েছে জনতা। ইনসেটে, মৃত যুবকের শোকার্ত পরিজন। ছবি: বিকাশ মশান

নার্সিংহোমে তখন চড়াও হয়েছে জনতা। ইনসেটে, মৃত যুবকের শোকার্ত পরিজন। ছবি: বিকাশ মশান

চিকিৎসায় গাফিলতিতে রোগী-মৃত্যুর অভিযোগে সোমবার সকালে দুর্গাপুরে বাঁকুড়া মোড়ের কাছে একটি নার্সিংহোমে দফায়-দফায় ভাঙচুর চলল। পুলিশের বড় বাহিনী এসে তাদের সরায়। পুলিশ জানায়, মৃত সৌমেন বিশ্বাসের (২৫) দেহ ময়না-তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও নার্সিংহোম সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় পেটে ব্যথা নিয়ে রায়ডাঙা হো-চি-মিন পল্লির বাসিন্দা, পেশায় গাড়িচালক সৌমেনকে ভর্তি করানো হয় ওই নার্সিংহোমে। পরিবারের দাবি, রাতে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ‘রেফার’ করে দেওয়ার আর্জি জানানো হয়। কিন্তু নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ জানান, সকাল ৮টায় চিকিৎসক দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন। তার আগেই মৃত্যু হয় সৌমেনের।

খবর পেয়ে মৃতের প্রতিবেশী ও পরিজনদের একাংশ ভিড় জমান। শুরু হয় ভাঙচুর। পুলিশ বাধা দিলেও জনতা থামেনি। পরিস্থিতি সামাল দিতে রোগীর পরিবারের সঙ্গে আলোচনায় বসেন নার্সিংহোম কর্তারা। পরিজনদের দাবি, সৌমেনের শিশুসন্তান রয়েছে। তার ভরণপোষণ ও চিকিৎসায় গাফিলতির জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আলোচনা চলাকালীনই আবার নার্সিংহোম ভাঙচুর শুরু হয়ে যায়। খবর পেয়ে কমব্যাট ফোর্স এসে লাঠি উঁচিয়ে এলাকা ফাঁকা করে দেয়। জনা পাঁচেককে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

মৃতের স্ত্রী মণিকাদেবীর অভিযোগ, ‘‘রবিবার সন্ধ্যায় ভর্তি করানো হলে চিকিৎসক বলেছিলেন, গ্যাস-অম্বলের জন্য ব্যথা। রেফার করতে বললেও শোনেননি। সকালে যখন খিঁচুনি শুরু হয় তখন কোনও চিকিৎসক ছিলেন না। প্রায় বিনা চিকিৎসায় স্বামীর মৃত্যু হয়েছে।’’ প্রতিবেশী মনি সরকার দাবি করেন, ‘‘ভোরে রোগীর সঙ্গে তাঁর মায়ের কথা হয়। অথচ, তার পরে কী করে ঘটল জানা দরকার।’’

যদিও অভিযোগ মানতে চাননি নার্সিংহোমের কর্ণধার তথা জেলা নার্সিংহোম মালিক সংগঠনের সভাপতি সূর্য কেশ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রোগীর পরিবারের অভিযোগ থাকতেই পারে। প্রশাসন তদন্ত করে যা ব্যবস্থা নেবে তা মেনে নিতে রাজি। কিন্তু এ ভাবে ভাঙচুর মেনে নেওয়া যায় না।’’ রোগীকে কেন ‘রেফার’ করা হয়নি, সে প্রশ্নে তাঁর দাবি, বাইরে থেকে দেখে রোগ ধরা যায় না। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হয়। সে জন্য সময় লাগে।

ঘটনার তদন্ত না হওয়া পর্যন্ত দেহ নিতে অস্বীকার করেন পরিবারের লোকজন। শেষে পুলিশের মধ্যস্থতায় দু’পক্ষ ফের আলোচনায় বসে। সূর্যবাবু জানান, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ ছ’লক্ষ টাকা দিতে রাজি হন। রোগীর পরিবারের দাবি মেনে আরও ৫০ হাজার টাকা দিতে সম্মত হয়েছেন কর্তৃপক্ষ। তার পরে দেহ নেন পরিবারের লোকজন। সূর্যবাবু বলেন, ‘‘ময়না-তদন্তের রিপোর্টে জানা যাবে, কী হয়েছে। যদি চিকিৎসক বা অন্য কারও গাফিলতি ধরা পড়ে, নিশ্চয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Death Violence Nursing Home
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy