Advertisement
০৭ নভেম্বর ২০২৪
Potato

আলু চাষে জল ঢেলেছে ‘ডেনা’! বর্ধমানে জমির পর জমি এখনও জলমগ্ন, কপালে চিন্তার ভাঁজ চাষিদের

পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়, বড়শুল, আমড়া, প্যামড়া ইত্যাদি এলাকায় প্রধানত পোখরাজ প্রজাতির আলুর চাষ হয়। এক বিঘে জমিতে আলুর চাষ করতে গেলে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়।

potato

এখনও চাষের শুরুই হয়নি! —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শক্তিগড় শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:০১
Share: Save:

কথায় বলে, আশায় বাঁচে চাষা। কিন্তু টানা বৃষ্টির পর সেই আশাতেও ভরসা হারিয়ে ফেলছেন কৃষকেরা। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে বর্ধমানের কৃষিজমিগুলোয় আলুর বীজ বপনের কাজ শেষ হয়ে যায়। কোনও কোনও জমিতে এত দিনে বীজ ফুটে গাছও বড় হয়ে যায়। এ বার সে সবে জল ঢেলে দিয়েছে ‘ডেনা’। ঘূর্ণিঝড় এবং বৃষ্টির প্রভাবে জমির পর জমি এখন জলে থৈথৈ করছে। ‘এ বার আলু চাষের কী হবে?’ এই প্রশ্নই ফিরছে কৃষকদের মুখে মুখে।

বছরের এই সময়টায় পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের ১৯ নম্বর জাতীয় সড়ক বরাবর এলাকা থেকে জৌগ্রাম, মশাগ্রাম পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশে শুধুই আলুর জমি চোখে পড়ত। এ বার সেই পরিচিত ছবিটা আর নেই। এখনও পর্যন্ত চাষিরা আলুর বীজ বপন করতে পারেননি। কৃষকেরা জানাচ্ছেন, সাধারণত এই সময়ে পোখরাজ প্রজাতির আলু চাষ করা হয়। ৩৬ প্রজাতির স্বল্প দিনের ধান জমি থেকে তোলার পরেই ওই আলু চাষ শুরু হয়ে যায়। মাত্র ৬০ থেকে ৭৫ দিনের মাথায় ওই আলু জমি থেকে তোলা হয়। আর ওই ফলন তাড়াতাড়ি খাবারের জন্য। হিমঘরে রেখে দেওয়ার মতো আলু নয়। এ বছর ওই আলু চাষই বন্ধ রাখতে হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন কৃষেকেরা। শক্তিগড় গ্রামের বাসিন্দা হবিবুর রহমান মল্লিক। পেশায় তিনি আলুচাষি। তাঁর কথায়, ‘‘এ বার একেবারে ভয়াবহ পরিস্থিতি। জমিতে জল দাঁড়িয়ে আছে। আর যদি নতুন করে বৃষ্টি না-ও হয়, তা হলেও কম করে এক মাস পরে আলুর বীজ বসানো যাবে। তার আগে আলুর জমি তৈরি করা যাবে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘গত বছরও আলুর চাষে মার খেয়েছি। আলু বসানোর পর পরই বৃষ্টি হয়েছিল। তাতে গাছ পচে গিয়েছে। আবার নতুন করে আলুর বীজ বসাতে হয়েছিল। এতে খরচ দ্বিগুণ হয়েছে। কিন্তু ফলন ভাল হয়নি।’’

পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়, বড়শুল, আমড়া, প্যামড়া ইত্যাদি এলাকায় প্রধানত পোখরাজ প্রজাতির আলুর চাষ হয়। এক বিঘে জমিতে আলুর চাষ করতে গেলে গড়ে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ হয়। কৃষকেরা জানাচ্ছেন, নভেম্বরের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে ধান কাটা শুরু হয়। আর শেষ সপ্তাহে পোখরাজ প্রজাতির আলু চাষ হয়ে যায় বেশির ভাগ জমিতে। কিন্তু এ বছরই সবই বিশ বাঁও জলে। মহম্মদ রফিউদ্দিন মল্লিক নামে এক কৃষক বলেন, ‘‘ডেনার দাপটে বিরাট ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এক দিকে ধান নষ্ট হয়েছে। অন্য দিকে ঠিক সময়ে আলুর জমি তৈরি হল না। আলু বসানোর সময়ও পেরিয়ে যাচ্ছে।’’

বৃষ্টির জল সরে গেলেও কয়েক দিন মাটি শুকোনোর জন্য অপেক্ষা করতে হবে। জমি তৈরি হবে আলু বসানোর জন্য। কিন্তু আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় সমস্যার পর সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন কৃষেকেরা। তবে জেলা কৃষি আধিকারিক নকুলচন্দ্র মাইতির দাবি ভিন্ন। তিনি বলেন, ‘‘আলু চাষে ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। জল জমি থেকে নেমে গেলেই ধীরে ধীরে আলু চাষের জন্যে জমি তৈরি হবে। পোখরাজ মাত্র ৬০ থেকে ৬৫ দিনের আলু। সুতরাং সময় আছে। ফলন কমারও সম্ভাবনা নেই।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Potato cultivation Cyclone Dana
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE