দিনে বিভিন্ন ক্লিনিক, ওষুধের দোকানে দেখা মেলে চিকিৎসকের। কিন্তু রাত হলেই অসহায় কালনা। কারণ, স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর মূল ভরসা মহকুমা হাসপাতালের নানা বিভাগই চিকিৎসক নেই। শুক্রবার অবিলম্বে চিকিৎসকের নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস।
শহরের বেশির ভাগ ওষুধের দোকানের আশপাশে সকাল থেকেই রোগীদের লম্বা লাইন দেখা যায়। দূরদূরান্তের রোগীদের চিকিৎসা করেন কলকাতা, চুঁচুড়া, বর্ধমান থেকে আসা বিভিন্ন বিষেশজ্ঞ চিকিৎসকেরা। রোগী এবং তাঁর আত্মীয়দের অভিযোগ, রাতে এই ডাক্তারেরা থাকেন না। নার্সিংহোমে কড়া নাড়লেও কেউ দরজা খোলে না। সঙ্কটজনক রোগী ভর্তি না নিতে চেয়ে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু সেখানেও ডাক্তার মেলে না।
স্থানীয় বসিন্দাদের দাবি, সমস্যাটা বেড়েছে মাস সাতেক ধরে। ওই সময় কালনা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের তিন চিকিৎসকই চলে যান হাসপাতাল ছেড়ে। চিকিৎসক সঙ্কট দেখা দেয় শিশু বিভাগেও। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন বিভাগ মিলিয়ে ১৭ জন চিকিৎসক কম রয়েছেন বর্তমানে। বাধ্য হয়ে অন্য বিভাগের চিকিৎসক এবং মেডিক্যাল অফিসার দিয়ে চালানো হচ্ছে হাসপাতাল। ফলে সামান্য ঝুঁকি থাকলেই রোগী রেফার হয়ে যাচ্ছে অন্যত্র। ডাক্তারের অভাবে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালেও শুধু বর্হিবিভাগ চালু হয়েছে।
কালনার বাসিন্দা অস্মি সরকার বলেন, রাতে আচমকা পরিবারের কারও হৃদরোগ বা অন্য কিছু হলে ভরসা ঈশ্বর।’’ আর এক বাসিন্দা পরিতোষ কোলের ক্ষোভ, ‘‘হাসপাতাল নিয়ে কেউ কেন গা করছেন না বুঝছি না।’’ এই পরিস্থিতিতে চিকিৎসার গাফিলতির অভিযোগও উঠছে হাসপাতালে। বৃহস্পতিবারই ধর্মডাঙা গ্রামের এক কলেজ ছাত্র দীর্ঘ সময় চিকিৎসা না পেয়ে পড়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে। পরে তাঁকে চুঁচুড়া হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ মানতে চাননি।
এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ কংগ্রেস নেতা কর্মীরা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে দাবি করে সুপারের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। সুপারের পদত্যাগেরও দাবি জানান তাঁরা। চিকিৎসকের সঙ্কট কাটানোর পাশাপাশি হাসপাতালের নালা পরিষ্কার, পানীয় জলের পরিষেবা উন্নত করা-সহ চার দফা দাবিতে স্মারকলিপিও দেন তাঁরা। মহকুমা কংগ্রেসের সম্পাদক রবীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘স্থানীয় মানুষ হাসপাতালের প্রতি আস্থা হারাচ্ছেন। সামান্য কারণে দূরের হাসপাতালে ছুটতে হওয়ায় হয়রানি বাড়ছে।’’
চিকিৎসক সঙ্কটের কথা মেনে সুপার কৃষ্ণচন্দ্র বরাই বলেন, ‘‘চিকিৎসক পেতে সব চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি সমস্যা মিটবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy