দুপুরে খাওয়া-দাওয়া সেরে দোকানে অলিম্পিক্স দেখতে একটু টেলিভিশনে চোখ রেখেছিলেন কালনার এক ব্যবসায়ী। আচমকা বিপত্তি। কেব্ল লাইন চলে গেল। ইতিউতি খোঁজ নিয়ে জানা গেল, শনিবার দুপুর একটার পরে কালনা শহরের যে সব বাড়ি বা প্রতিষ্ঠানে সেট-টপ বক্স ছিল না, সেই সব জায়গাতেই কেটে দেওয়া হয়েছে কেব্ল সংযোগ। এই পরিস্থিতিতে দীপার ভল্ট থেকে ফেল্পসের সাঁতার— কিছুই দেখা হল না বলে আক্ষেপ করছেন কালনার বাসিন্দারা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা শহরে কেব্ল গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় ১৫ হাজার। এর মধ্যে তিন হাজার গ্রাহকের বাড়িতে বা প্রতিষ্ঠানে সেট-টপ বক্স রয়েছে। শহরে কেব্ল পরিষেবা দেয় মূলত তিনটি সংস্থা।
কেব্ল সংস্থাগুলির তরফে জানানো হয়েছে, শনিবার দুপুর একটার পরে সেট-টপ বক্স না থাকা গ্রাহকদের পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। গ্রাহকদের একাংশ জানান, টিভিতে কোনও চ্যানেল দেখতে না পেয়ে প্রথমে মনে হয়, শনিবার রাতে মহিষমর্দিনী প্রতিমার শোভাযাত্রার কারণে হয়তো কোনও যান্ত্রিক ত্রুটি হয়েছে। রবিবার সকালে অবশ্য দু’টি কেব্ল সংস্থার তরফে মাইকে পরিষেবা বন্ধ করার বিষয়টি নিয়ে প্রচার চালানো হয়। কেব্ল সংস্থার তরফে গ্রাহকদের সেট-টপ বক্সের জন্য আবেদন করতেও বলা হয়।
এরপরেই কেব্ল অপারেটরদের ফোন করতে শুরু করেন গ্রাহকেরা। গ্রাহকদের অভিযোগ, চাহিদামতো সেট-টপ বক্স রবিবার পর্যন্ত দিতে পারেননি কেব্ল অপারেটররা। সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন একটি কেব্ল সংস্থার প্রতিনিধি শিবপ্রসাদ বড়ুয়া। তাঁ কথায়, ‘‘আমাদের কাছে ১০০টি সেট-টপ বক্স রয়েছে। কিন্তু চাহিদা বহুগুণ।’’ তাঁর দাবি, কলকাতা থেকে সেট-টপ বক্স আনতে হবে। কিন্তু মঙ্গলবারের আগে চাহিদামতো সেট-টপ বক্স আনা সম্ভব নয়। পাশাপাশি একটি সেট-টপ বক্স বসাতে প্রায় ২০ মিনিট করে সময় লাগে। তাই সমস্ত গ্রাহকের কাছে ফের কেব্ল পরিষেবা পৌছতে বেশ খানিকটা সময় লাগবে বলে জানান অপারেটররা।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, আগেভাগে কিছু না জানিয়েই কেব্ল সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। বধূ আল্পনা কর্মকার নামে এক বধূর ক্ষোভ, ‘‘কাজের ফাঁকে একটি টেলিভিশনে চোখ রাখি। বাড়িতে ধারাবাহিক, অলিম্পিক্স কোনওটাই দেখা যাচ্ছে না। সংযোগ কাটার বিষয়ে আগেভাগে প্রচার করলে ভাল হতো।’’ কালনার ফুটবলার কৌশিক ঘোষের আক্ষেপ, ‘‘অলিম্পিক্সে অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট দেখা হল না!’’ গ্রাহকদের একাংশের আবার অভিযোগ, সেট-টপ বক্সের জন্য হরেক রকম দাম নেওয়া হচ্ছে। কোথাও আবার নির্দিষ্ট দামের থেকে তিন-চারশো টাকা বেশি দিতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
যদিও কেব্ল অপারেটরদের দাবি, গত ১০ অগস্ট জেলায় একটি বৈঠকে ঠিক হয়, সেট-টপ বক্স না থাকলে পরিষেবা দেওয়া যাবে না। প্রশাসনের তরফে কেব্ল সংস্থাগুলিকে তা জানিয়েও দেওয়া হয়। মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy