Advertisement
E-Paper

তুহিন খুনে দ্রুত কিনারা চাই, দাবি কালনায়

ঘটনায় জড়িতেরা এখনও ধরা না পড়ায় ক্ষুব্ধ ওই ইঞ্জিনিয়ার তুহিন মল্লিকের প্রতিবেশী ও পরিজনেরা। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাতে মঙ্গলবার কালনার মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন শ’পাঁচেক বাসিন্দা। সন্ধ্যায় শহরে একটি মিছিলও হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৮ ০১:৩৫
কালনায় মঙ্গলবার বিকেলে মিছিল করলেন কিছু বাসিন্দা। নিজস্ব চিত্র

কালনায় মঙ্গলবার বিকেলে মিছিল করলেন কিছু বাসিন্দা। নিজস্ব চিত্র

খুনের ঘটনার তদন্ত ঠিক ভাবে যাতে এগোয়, তা দেখা হবে বলে ছত্তীসগঢ়ে নিহত সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের পরিবারকে আশ্বাস দিলেন কালনার পুলিশ ও পুরসভার কর্তারা। তবে ঘটনায় জড়িতেরা এখনও ধরা না পড়ায় ক্ষুব্ধ ওই ইঞ্জিনিয়ার তুহিন মল্লিকের প্রতিবেশী ও পরিজনেরা। দোষীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাতে মঙ্গলবার কালনার মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন শ’পাঁচেক বাসিন্দা। সন্ধ্যায় শহরে একটি মিছিলও হয়।

শনিবার রাতে ছত্তীসগঢ়ের নয়া রায়পুরে মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়েছিলেন সেখানে কর্মরত তুহিন ও তাঁর বন্ধু, কালনার নিচুজাপটের বাসিন্দা অলঙ্কার পাল। অভিযোগ, একটি গাড়িকে ওভারটেক করা নিয়ে বচসায় কুপিয়ে খুন করা হয় তুহিনকে। জখম হন অলঙ্কার। তিনি এখনও সেখানেই রয়েছেন। এ দিন ফোনে যোগাযোগ করা হলে অলঙ্কার জানান, তাঁর চিকিৎসা চলছে। ওই রাতে বেড়াতে বেরিয়ে এমন হামলার মুখে পড়তে হয় বলে জানান তিনি।

এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ তুহিনের বাড়িতে যান এসডিপিও (কালনা) শান্তুনু চৌধুরী, পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ, কালনা থানার ওসি প্রণব বন্দ্যোপাধ্যায়েরা। তাঁরা তুহিনের বাবা পূর্ণেন্দুবাবু, কাকা স্বপনবাবু ও পীযূষকান্তিবাবু-সহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। ঘটনা সম্পর্কে ধাপে-ধাপে তাঁরা যা জেনেছেন, তা আধিকারিকদের জানান পরিজনেরা। সেই সঙ্গে ঘটনার দ্রুত কিনারা ও দোষীদের গ্রেফতারের ব্যাপারে পরিবারের তরফে সাহায্য চাওয়া হয়। এসডিপিও আশ্বাস দেন, ‘‘আমরা সব রকম সাহায্য করব।’’ তিনি জানান, ছত্তীসগঢ়ের পুলিশ তদন্তের স্বার্থে কালনায় আসতে পারে। সেক্ষেত্রে তারা যা সাহায্য চাইবে তা করা হবে। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘যেহেতু এটি ভিন্‌ রাজ্যের ঘটনা তাই স্বরাষ্ট্র দফতর মারফত যাতে কিছু করা যায়, পুরসভা সেই চেষ্টা করছে।’’

এর পরে এ দিন সন্ধ্যায় তুহিনের বাবা পূর্ণেন্দুবাবু মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি জানান, ছত্তীসগঢ়ের পুলিশ তাঁকে সেখানে যেতে বলেছে। কিন্তু এখন তাঁদের যা মানসিক অবস্থা তাতে তা সম্ভব নয়। মহকুমাশাসক জানান, তিনি রায়পুরের পুলিশ সুপার অমরেশ মিশ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তিনি বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেন। দ্রুত কিনারার বিষয়েও আশ্বাস মিলেছে।

সোমবার তুহিনের দেহ পৌঁছনোর পরে মানুষের ঢল নামে কালনার ভাদুড়িপাড়ায় তাঁর বাড়ি ও লাগোয়া রাস্তায়। এ দিনও এলাকা জুড়ে শোকের ছায়া। মেধাবী ও ভদ্র ছেলেটিকে কেন এমন নৃশংস ভাবে খুন করা হল, প্রশ্ন সকলের কাছেই। তুহিনের বাড়ি থেকে এ দিনও মাঝে-মধ্যেই ভেসে এসেছে কান্নার রোল। প্রতিবেশীরা জানান, সম্প্রতি একটি অস্ত্রোপচারের পরে তুহিনের মা শয্যাশায়ী। ছেলের মৃত্যুর পর থেকে তিনি প্রায়ই জ্ঞান হারাচ্ছেন। দেওয়ালে বারবার মাথা ঠোকায় কপালের একাংশে ক্ষত হয়েছে।

সম্পর্কে তুহিনের দাদা প্রজেস মল্লিক বলেন, ‘‘ভাই সম্প্রতি বাড়ি এসেছিল। মা অসুস্থ দেখে জানিয়েছিল, ও বেশি দিন আর ছত্তীসগঢ়ে কাজ করবে না। তাড়াতাড়ি এলাকায় ফিরে কোনও চাকরি খোঁজার ইচ্ছে ছিল। তার আগেই চলে গেল।’’ তুহিনের বন্ধু মোহিত অগ্রবাল বলেন, ‘‘এখনও বিশ্বাস করতে পারছি না যে তুহিন নেই। বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে বুধবার তুহিন ফেরার ট্রেন ধরে। আমি ওকে ট্রেনে তুলে দিয়ে আসি। শনিবার রাত ১১টা নাগাদ ফোন করবে বলেছিল। আমি ২টো পর্যন্ত জেগে ছিলাম। ফোন আসেনি।’’

এ দিন কালনার মহকুমাশাসকের কাছে স্মারকলিপি তুলে দেন তুহিনের বন্ধুরা। তাতে সই করেছেন দু’টি স্কুলের শিক্ষক-সহ প্রায় ৫০০ মানুষ। মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া পরিবারটির পাশে থাকার আশ্বাস দেন। রায়পুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওপি শর্মা জানান, ঘটনার তদন্ত চলছে। সিসিটিভি ফুটেজ-সহ বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

Tuhin Mallick Murder Case Murder Candle March Neighbours
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy