Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Pradhan Mantri Aawas Yojna

আবাসে নাম বাদ কেন, প্রশ্ন আদিবাসীদের

মঙ্গলবার কাঁকসার ঝিনুকগড় আদিবাসী গ্রামে ‘মিট ইওর অফিসার’ শীর্ষক কর্মসূচিতে এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।

মুঙলি হাঁসদা থাকেন এমন বাড়িতেই। (ইনসেটে) কাঁকসার ঝিনুকগড় আদিবাসী গ্রামে পুলিশের কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র

মুঙলি হাঁসদা থাকেন এমন বাড়িতেই। (ইনসেটে) কাঁকসার ঝিনুকগড় আদিবাসী গ্রামে পুলিশের কর্মসূচি। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁকসা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ ০৭:১৬
Share: Save:

রাজ্য জুড়ে আবাস (প্লাস) যোজনার বাড়ি পাওয়া নিয়ে নানা বিতর্ক চলছেই। প্রশ্নের মুখে পড়তে দেখা যাচ্ছে রাজ্যের তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদেরও। এ বার পুলিশকর্তার সামনেও বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করল আদিবাসীদের একটি সংগঠন, ‘দিশম আদিবাসী গাঁওতা’। বিষয়টি পুলিশের এক্তিয়ারভুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও, মঙ্গলবার আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার সুধীরকুমার নীলাকান্তমের কাছে আবাস যোজনায় নাম কাটা গিয়েছে বলে অভিযোগ জানানো হয়। মঙ্গলবার কাঁকসার ঝিনুকগড় আদিবাসী গ্রামে ‘মিট ইওর অফিসার’ শীর্ষক কর্মসূচিতে এই ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজাও।

ওই গ্রামে প্রায় শ’খানেক আদিবাসী পরিবারের বাস। অধিকাংশ পরিবারই থাকে মাটির বাড়িতে। এ দিন পুলিশের ওই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে আদিবাসীদের সংগঠনটির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি গোরাচাঁদ হেমব্রম পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ করেন, “কাঁকসা ব্লকে প্রায় ১৫০ জন আদিবাসী রয়েছেন, যাঁরা আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু তাঁদের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। ঝিনুকগড়-সহ অন্য বহু আদিবাসী গ্রামে মাটির বাড়িতে, ছাদে ত্রিপল টাঙিয়ে মানুষ বসবাস করছেন। তাঁরা বাড়ি পেলেন না।” কিন্তু বিষয়টি পুলিশের এক্তিয়ারভুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও কেন এমন অভিযোগ করা হল পুলিশ কমিশনারের সামনে? গোরাচাঁদের বক্তব্য, “কমিশনারকে সামনে পেয়ে আমাদের বক্তব্য তুলে ধরলাম। আমরা প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে বিষয়টি জানাব।”

যে গ্রামে এ দিন কর্মসূচিটি হয়, সেখানকার বাসিন্দা মুঙলি হাঁসদা। মাটির একটি ছোটবাড়িতে একাই থাকেন তিনি। তাঁর দাবি, “বৃষ্টি হলেই জল পড়ে। আবাস প্লাস যোজনার প্রথম তালিকায় আমার নাম ছিল। কিন্তু পরে নাম বাদ গেল। কেন জানি না।” স্থানীয় বাসিন্দা চুরকি হেমব্রমও মাটির বাড়িতে থাকেন। তাঁর কথায়, “তালিকায় নাম নেই। আসলে প্রশাসনের সব জায়গায় যাওয়াটা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।” একই অবস্থা মুণি হেমব্রমেরও। প্রত্যেকেই দিনমজুরির সঙ্গে যুক্ত।

এ দিন কমিশনার সুধীরকুমার নীলাকান্তম বলেন, “স্থানীয়দের সমস্যার কথা শুনেছি। সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।” বিষয়টি নিয়ে মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”

তবে, বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির বর্ধমান (সদর)-এর সহ-সভাপতি রমন শর্মার বক্তব্য, “স্থানীয়েরা তৃণমূলের উপরে কতটা ক্ষুব্ধ, ওই কর্মসূচি থেকে বোঝা গেল।” সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বীরেশ্বর মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, “বিভিন্ন গ্রামে ক্ষোভের কারণে দিদির দূতদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাই এখন পুলিশ-প্রশাসনকে কাজে লাগানো হচ্ছে।” যদিও তৃণমূলের কাঁকসা ব্লক সভাপতি ভবানী ভট্টাচার্য জানান, “কর্মসূচিটি পুলিশের ছিল। পুলিশ-প্রশাসনের কাছে মানুষ তাঁদের দাবিদাওয়ার কথা জানাতেই পারেন। এর মধ্যে অন্য অর্থ খোঁজার অর্থ নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pradhan Mantri Aawas Yojna Tribal police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE