Advertisement
E-Paper

হারানো গরু জামাই-আদরে থানায়

গরুগুলিকে আনা হয় মঙ্গলকোট থানায়। সেখানে জায়গা খুঁজে গরুগুলিকে রাখার বন্দোবস্ত করা হয়। তাদের খাবারের জন্য খড়-বিচালি, খাবার দেওয়ার জন্য বড়-বড় গামলা জোগাড় করা হয়। এক পুলিশকর্মী বলেন, “আমরাই দু’বেলা গরুগুলোকে খেতে দিয়েছি। জামাই-আদরে রাখা হয়েছিল ওদের।” গরু ‘পাহারা’র দায়িত্বে ছিলেন দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারও।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০১৭ ১৮:০০
থানা চত্বরে গরুর দেখভাল। নিজস্ব চিত্র

থানা চত্বরে গরুর দেখভাল। নিজস্ব চিত্র

সবে সকাল হয়েছে। বেজে উঠল টেবিলে থাকা মোবাইল। পুলিশকর্মী মোবাইলের বোতাম টিপে বলে উঠলেন, ‘‘গুডমর্ণিং স্যার। কিছু বলবেন?’’ ও প্রান্তে ওসি। তাঁর জিজ্ঞাস্য, ‘‘কৈচর থেকে নিয়ে আসার পরে অতিথিরা সব ঠিক আছে তো?’’

পুলিশকর্মীর জবাব: ‘‘সবাই ঠিক আছে। সিভিকের ছেলেগুলো (ভলান্টিয়ার) আর আমাদের কনস্টেবল গিয়ে ওদের খাইয়ে এসেছে।’’ ফোন রেখে হাসতে থাকেন সেই পুলিশকর্মী।

কাদের আতিথেয়তায় উদগ্রীব ‘বড়বাবু’? জবাব আসে, ‘‘আর বলবেন না, সাতটা গরু।’’

গত রবিবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের শিমুলিয়া মোড়ের কাছে টহল দেওয়ার সময় পুলিশ বেওয়ারিশ অবস্থায় বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কের উপরে ঘোরাঘুরি করতে দেখে তাদের। প্রথমে খোঁজ করা হয় গরুগুলো সেখানে এল কী করে, মালিকই বা কে? পরে ত্রিসীমানায় কারও হদিস না পেয়ে গাড়িতে চাপিয়ে তাদের কৈচর ফাঁড়িতে নিয়ে যায়।

সোমবার সকাল হতেই গরুগুলিকে আনা হয় মঙ্গলকোট থানায়। সেখানে জায়গা খুঁজে গরুগুলিকে রাখার বন্দোবস্ত করা হয়। তাদের খাবারের জন্য খড়-বিচালি, খাবার দেওয়ার জন্য বড়-বড় গামলা জোগাড় করা হয়। এক পুলিশকর্মী বলেন, “আমরাই দু’বেলা গরুগুলোকে খেতে দিয়েছি। জামাই-আদরে রাখা হয়েছিল ওদের।” গরু ‘পাহারা’র দায়িত্বে ছিলেন দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ারও।

থানা সূত্রের খবর, ওসি প্রসেনজিৎ দত্ত গত কয়েকদিন মঙ্গলকোটের ১৫টি পঞ্চায়েতের প্রধান-সহ ব্লক লাগোয়া বেশ কয়েকটি জায়গায় পরিচিতদের ফোন করে ‘অতিথি’দের সম্পর্কে খবর দিচ্ছিলেন। আর কারও গরু হারিয়ে থাকলে প্রকৃত মালিককে থানায় আসার কথা বলতে বলছিলেন। প্রসেনজিৎবাবুর কথায়, ‘‘আমরা না রাখলে গরুগুলো কোথায় হারাত কে জানে।’’ আর জেলার পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘থানায় রাখা হয়েছে বলে গরুগুলোর দেখ-ভাল করা হবে না, সেটা কাজের কথা নয়।’’

অবশেষে বৃহস্পতিবার রাতে মঙ্গলকোটেরই ঠ্যাঙাপাড়ার আব্দুল রহিম মণ্ডল এবং তাঁর সম্পর্কিত ভাইপো ফজর আলি শেখ থানায় এসে প্রমাণ দিয়ে গরুগুলি নিয়ে যান। তাঁদের দাবি, মাঠ থেকে কে বা কারা গরুগুলিকে নিয়ে গিয়েছিল। তারাও গরু-খোঁজা খুঁজছিলেন। ফেরার পথে তাঁদের বলতে শোনা যায়, ‘‘পুলিশের যত্নে এ ক’দিনেই চেহারায় শ্রী ফিরেছে গরুগুলোর!”

COW Police Station Police
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy